সায়মা সাফীজ সুমী
সৌন্দর্য ও মানসিক স্বাস্থ্য ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এ দুটি বিষয় একে অপরকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। অবাস্তব সৌন্দর্যের মাপকাঠি আমাদের মানসিকভাবে দুর্বল করে তুলতে পারে।
এটি আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়, হীনমন্যতায় ভােগায়। এ ছাড়া খাদ্যাভ্যাসের অসুবিধা তৈরি করতে পারে। এমনকি কখনও কখনও মানুষকে বিষণ্ণতার দিকে ধাবিত করে।
সাধারণ সৌন্দর্যের মানদণ্ড বলতে আমরা বুঝি পাতলা/শুকনো হওয়া, উজ্জ্বল ত্বক, চোখ বড় বা লম্বা উচ্চতার ইত্যাদি। যার মধ্যে কিছু ঘটে একেবারেই প্রাকৃতিক বা জেনেটিক কারণে। এতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের কোনো হাত থাকে না।
এসব বিষয় যেন আমাদের মধ্যে খারাপ লাগার জন্ম দিতে না পারে, সে জন্য কী করা যেতে পারে? সবার প্রথমে আমাকে বিষয়টি সাবলীলভাবে মেনে নিতে হবে। কখনোই ভাবা যাবে না, এটি আমার প্রতিবন্ধকতা বা খুঁত। দ্বিতীয়ত, কখনও নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করে হীনমন্য করে তোলা যাবে না। তারপর যে বিষয়টিতে খুব জোর দিতে হবে তা হলো, নিজেকে কীভাবে অনেক বেশি আত্মপ্রত্যয়ী রাখা যায়।
এ ক্ষেত্রে দৈনন্দিন জীবনের প্রাত্যহিক কাজের অংশ হিসেবে ধ্যান বা মেডিটেশন করা যেতে পারে। ধ্যানের মধ্য দিয়ে নিজের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে ইতিবাচকতায়। আমাদের ভেতরে যেসব ইতিবাচক বিষয় রয়েছে, সেগুলোকে বেশি সময় দিয়ে অনুশীলন করতে হবে। সর্বোপরি নিজেকে অনেক ভালোবাসতে হবে।
যেহেতু মেডিটেশন ব্যক্তিকে আত্মিক, মানসিক ও শারীরিকভাবে শান্তি দেয়, তাই এর প্রতিফলন আমরা চেহারাতেও প্রচণ্ডভাবে দেখতে পাই। এতে নিজে অনেক প্রফুল্ল, আত্মবিশ্বাসী থাকা যায়।
আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, যারা সব সময় পরনিন্দা, পরচর্চায় লিপ্ত থাকতে ভালোবাসেন, তারা খুব কাছের মানুষ হলেও যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা ভালো। এতে মানসিক অস্থিরতা কম তৈরি হয়।
এবার আসা যাক, সঠিক খাদ্যাভ্যাসের বিষয়টিতে। একটা কথা প্রচলিত আছে– ‘আমি তাই যা আমি খাই।’ তার মানে খাবারের ওপর আমাদের আচার-আচরণও নির্ভর করে। খাবার সঠিক এবং সুষম হওয়া খুব জরুরি। সঙ্গে হতে হবে সহজপাচ্য। এখনকার সময় ফাস্টফুডের নামে যা আমরা গ্রহণ করি, তার বেশির ভাগই অস্বাস্থ্যকর। তাই নিজেকে ভেতর ও বাহির থেকে ভালো রাখতে হলে খাদ্যের ওপর বিশেষ যত্নশীল হতে হবে। খাবারের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে আমাদের সৌন্দর্যে।
ওপরের বিষয়গুলো ঠিকঠাক থাকলে আপনার অন্য রকম সৌন্দর্যের স্বতঃস্ফূর্ততা দেখা যাবে শরীর ও মনে। এতে আপনি প্রাণবন্ত থাকবেন। জীবনকে আরও উপভোগ করবেন ইতিবাচকতায়।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ‘প্রশান্তি’;
প্রশান্তি একটি মেডিটেশন ও ইয়োগা সেন্টার।