সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
একজন অফিসকর্মী হিসেবে মেয়েদের সাজপোশাক হওয়া চাই প্রফেশনাল, সাবলীল এবং অফিসের পরিবেশের সঙ্গে মানানসই। সাজের ক্ষেত্রে এমন কিছু নিয়ম ও মানদণ্ড রয়েছে, যা মেনে চললে অফিসের পরিবেশ ও প্রফেশনালিজম– উভয়ই বজায় থাকে।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘এনটিভি’র অনলাইন বিভাগে ক্রীড়া প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করছেন হিমু আক্তার। ডেস্ক ও ফিল্ড দুটো জায়গাতেই কাজ করতে হয় তাকে। অফিসের জন্য নিজেকে কীভাবে তৈরি করেন- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কাজের জন্য যেহেতু একই পোশাক পরে দিনের একটা লম্বা সময় বাইরে থাকতে হয়, তাই আরামদায়ক কাপড় বেছে নেওয়ার চেষ্টা করি। ডেস্কের কাজ থাকলে সুতি বা ভালো আরামদায়ক কাপড়ের পোশাক পরি। মুখে ব্যবহার করি হালকা কমপ্যাক্ট পাউডার ও লিপগ্লস।’
এ ছাড়া ফিল্ড অ্যাসাইনমেন্টে যেতে হলে একটু ওয়েস্টার্ন আউটফিট বেছে নিই জানিয়ে সাংবাদিক হিমু আক্তার বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ বাইরে থাকা লাগলে অবশ্যই আরামদায়ক জুতা নেওয়ার চেষ্টা করি। এ সময়েও আমি কমপ্যাক্ট পাউডার এবং ভালো কোনো ম্যাট লিপিস্টিক ব্যবহার করি। মাঝেমধ্যে আইব্রো লাইনটাও শার্প করে নিই। আর কখনও আরেকটু ভারী মেকআপ নিলে সেটিং স্প্রে দিই। এতে মেকআপ দীর্ঘক্ষণ ভালো থাকে। আমি সব সময়ই সানস্ক্রিন ব্যবহার করি। আর কোনো মেকআপ প্রােডাক্ট সঙ্গে থাকুক বা না থাকুক, একটা কমপ্যাক্ট পাউডার ব্যাগে অবশ্যই রাখি।’
কাজের সময় চুলটা মেনটেইন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি যেহেতু সব সময় খোলা চুলে অভ্যস্ত, তাই সাধারণভাবে আঁচড়ে নিলেই হয়। তবে এটা একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, কীভাবে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করবেন, সেটাই মুখ্য। এখানে নিজের স্বস্তির বিষয়টাই আগে বলে জানান সাংবাদিক হিমু।
অফিসে মেয়েদের সাজপোশাক কেমন হলে ভালো, এ নিয়ে পরামর্শ জানিয়েছেন প্রিটি লেডি বাই সোনিয়া খানের কর্ণধার রূপবিশেষজ্ঞ সোনিয়া খান। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী-
১. মেকআপ
অফিসে যাওয়ার জন্য মেকআপ হতে হবে মৃদু ও প্রাকৃতিক।
* ফাউন্ডেশন : ত্বকের সঙ্গে মিলিয়ে হালকা ফাউন্ডেশন বা বিবি ক্রিম ব্যবহার করুন। এতে ত্বক প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর দেখাবে।
* আই মেকআপ : হালকা আইশ্যাডো, মাশকারা ও কাজল ব্যবহার করুন। খুব গাঢ় বা চকচকে রং এড়িয়ে চলাই ভালো। আইলাইনার ব্যবহার করতে পারেন। তবে খুব বেশি মোটা লাইন নয়।
* লিপস্টিক : অফিসের জন্য নিউট্রাল বা মৃদু রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করুন। খুব গাঢ় বা উজ্জ্বল লাল, গোলাপি বা চকচকে লিপস্টিক অফিসের জন্য উপযুক্ত নয়।
২. চুলের স্টাইল
চুলের স্টাইল হতে হবে সিম্পল ও ন্যাচারাল।
* হেয়ারস্টাইল : চুল খোলা রাখতে চাইলে স্ট্রেইট বা হালকা কার্ল করে নিতে পারেন। এ ছাড়া চাইলে পনিটেল, বান বা প্লেইন ব্রেইড করা যেতে পারে।
৩. পোশাক
অফিসের পোশাক হতে হবে প্রফেশনাল, মার্জিত এবং অফিসের ড্রেস কোড অনুযায়ী।
* ফরমাল পোশাক : ব্লেজার, ট্রাউজার, শার্ট, কুর্তি ও ফরমাল স্কার্ট বা সালোয়ার-কামিজ অফিসের জন্য উপযুক্ত। খুব বেশি ফ্যাশনেবল বা ক্যাজুয়াল পোশাক এড়িয়ে চলাই ভালো।
* রং : নেভি ব্লু, ব্ল্যাক, গ্রে, বেইজ ইত্যাদি রঙের পোশাক অফিসে ব্যবহার করতে পারেন। খুব উজ্জ্বল বা চটকদার রং অফিসের জন্য ঠিক নয়।
৪. অ্যাকসেসরিজ
অ্যাকসেসরিজের ক্ষেত্রে পরিমিতি বোধ রাখা জরুরি।
* গহনা : হালকা ও ছোট গহনা ব্যবহার করুন। ছোট কানবল, চেইন বা লকেট এবং হাতে মৃদু ব্রেসলেট পরতে পারেন। ভারী গহনা অফিসের জন্য ঠিক নয়।
* ব্যাগ : অফিসের জন্য মাঝারি মাপের ফরমাল ব্যাগ ব্যবহার করা ভালো, যা পোশাকের সঙ্গে মানানসই হয়।
৫. সুগন্ধি
এ ক্ষেত্রে হালকা ও মৃদু ফ্লেভারের সুগন্ধি ব্যবহার করুন, যা অন্যদের জন্য আরামদায়ক হয়। খুব গাঢ় বা তীব্র সুগন্ধি অফিসের জন্য এড়িয়ে চলাই ভালো।
৬. জুতা
অফিসের জন্য ফরমাল জুতা নির্বাচন করুন।
* হিল : হাই হিলের পরিবর্তে মিডিয়াম বা লো হিল বেছে নিন। এ ছাড়া ফ্ল্যাট জুতা, বেলি বা লোফারও অফিসের জন্য উপযুক্ত হতে পারে।
* রং: জুতার রংও প্রফেশনাল হওয়া প্রয়োজন। যেমন : কালো, ব্রাউন বা নিউট্রাল শেড।
৭. পরিচ্ছন্নতা
অফিসের সাজগোজের পাশাপাশি ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। নখ, চুল ও ত্বক সবকিছুই পরিষ্কার এবং পরিপাটি থাকতে হবে।