ডা. শাকিল মাহমুদ
ভয়াবহ বন্যার কবলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল। পানিবন্দী অবস্থায় দুর্ভোগে কাটছে অসংখ্য মানুষের জীবন। এই সময়টায় বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়।
বন্যার সময় পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ে। যেমন : ডায়রিয়া, আমাশয়, পেটের পীড়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস ইত্যাদি। এ ছাড়া পানিতে ডুবে যাওয়া, সাপ ও ইঁদুরে কাটা, ইলেকট্রিসিটির লাইনের ত্রুটির কারণে বিদুৎতাড়িত হয়ে মৃত্যু ইত্যাদি দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। এ ছাড়া ফুসফুস ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায় এই সময়টায়। এসব স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে কিছু বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি।
১. পানিবাহিত রোগ এড়াতে বিশুদ্ধ পানি পানের বিকল্প নেই। পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। আর ফুটানোর ব্যবস্থা না থাকলে বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে প্রতি ১০ লিটার পানির মধ্যে ৫০ মিলিগ্রাম হেলোজেন ট্যাবলেট এক ঘণ্টা রেখে দিলে পানি বিশুদ্ধ হয়ে যাবে।
২. বাসি-পচা খাবার খাওয়া যাবে না। শুকনো খাবার খাওয়া যেতে পারে। যেমন : মুড়ি, চিড়া, বিস্কুট ইত্যাদি। বাড়িতে যতটা চেষ্টা করা যায় এ ধরনের খাবার জমিয়ে রাখতে হবে।
৩. সাপ বা ইঁদুরে কামড়ের মতো ঘটনা ঘটলে ধারের কাছের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হবে। বিষহীন সাপ কাটলে তেমন ভয়ের কিছু নেই। তবে বিষধর হলে কাটা স্থানের সামনে মোটা কাপড় বা রশি দিয়ে দিয়ে গিঁট দিয়ে ফেলতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হবে। তবে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে, সে বিষয়ে সচেতন থাকাটা জরুরি।
৪. ইলেকট্রিসিটির লাইন বা তার পড়ে গেলে স্পর্শ করা যাবে না। অন্যকেও স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করতে হবে। কেবলমাত্র এই কাজের জন্য বিশেষ ব্যক্তি বা মেকানিককে দিয়ে লাইন ঠিক করাতে হবে।
৫. এই সময় ত্বকে ছত্রাকজনিত রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। তাই যতটা সম্ভব নোংরা পানি ধরা থেকে বিরত থাকুন।
৬. বন্যা শেষে সম্পূর্ণ পরিবারকে একত্রে কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে নিতে হবে।
৭. বন্যা শেষে জীবাণুর বিস্তার রোধে বাড়ির চারপাশে ব্লিচিং পাউডার ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। এতে অনেকটা সুরক্ষিত থাকা যাবে।
লেখক : চিকিৎসক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ (সাভার)।