সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, কর্মহীনতা, নিজেকে প্রতিনিয়ত ছোট হতে দেখা, কোনো কাজ নিয়ে সংগ্রাম করা ইত্যাদি আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। তবে দিন তো সবারই একরকম যায় না, সময়ের পরিবর্তন হয়; সফলতাও ধরা দেয়।
কেবল মাঝখানের সময়টিতে বিভ্রান্ত না হয়ে নিজেকে স্থির রাখাটাই জরুরি। আত্মবিশ্বাস কমে গেলে সেটি বাড়ানোর কিছু শক্তিশালী ও উপকারী পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে জীবনধারাবিষয়ক ইউটিউব চ্যানেল ও ওয়েবসাইট টেসটেড অ্যাডভাইস ও এনএইচএস। চলুন জানি-
নিজেকে বুঝুন
আত্মবিশ্বাস বাড়াতে প্রথমে নিজেকে জানতে হবে। আপনার জীবনের উদ্দেশ্য কী, আপনি কী করতে চান– সেটি পরিষ্কারভাবে বুঝুন। বিখ্যাত দার্শনিক এপিকটিটাস বলেন, ‘প্রথমে জানতে হবে, আমাদের ভয়গুলো কী। প্রকৃত আত্মবিশ্বাস কেবল তখনই আসে, যখন নিজেকে বোঝা যায়। নিজের সামর্থ্য ও দুর্বলতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন। সেভাবেই আগান।’
কোনো কিছুতে ভয়ের প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগে ভাবুন, আসলেই কি এটি এত বেশি কঠিন, যতটা আপনি ভাবছেন?
কমফোর্ট জোন থেকে বের হন
কোনো কিছুই পরিশ্রম ও পরিকল্পনা ছাড়া অর্জন করা যায় না। আপনি চাইছেন অনেক সাফল্য, তবে সে অনুযায়ী কোনো কাজই করছেন না। এমনটা না করে আপনার কমফোর্ট জোন বা সুবিধাজনক জায়গা থেকে বের হন। নিজেকে চ্যালেঞ্জ দিন। লক্ষ্য নির্ধারণ করে কঠোর পরিশ্রম করুন। আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই।
নিজের সঙ্গে ইতিবাচক কথা বলা
নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বলা বন্ধ করুন। হ্যাঁ, এটা খুব জরুরি। জীবনে এগিয়ে যেতে হলে পজিটিভ সেলফ টক বা নিজের সঙ্গে ইতিবাচক কথা বলতে হবে। আপনি জীবনে যা অর্জন করতে চান, তার একটি তালিকা তৈরি করুন এবং সে অনুযায়ী কথা বলুন বা অটোসাজেশন দিন। নিজেকে বলুন, ‘আমি কাজটি করতে পারছি, সবকিছু আমার অনুকূলে থাকছে। আমি জীবনে অনেক সফল ও সুখী হয়েছি।’
ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তুলুন
যারা আপনাকে নিচু করতে চায়, ছোট দেখাতে চায়, অসম্মান করে– সেসব মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকুন। মানুষ আসলে তার নিরাপত্তাহীনতা, স্বার্থপরতা, ঈর্ষাপরায়ণতা, চিন্তার ধরন, সমাজকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি দিয়ে অন্যকে বিচার করে। সে ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়ই আপনার কিছু করার নেই।
তবে আপনি এদের আচরণে প্রভাবিত হলে বা কষ্ট পেলে দূরে থাকুন। আপনি যতটা জীবনে পিছিয়ে রয়েছেন, তার চেয়ে অনেক পিছিয়ে দেবে এরা। তাই নিজের লক্ষ্যকে স্থির রেখে পরিকল্পনা অনুযায়ী কঠোর পরিশ্রম করে এগিয়ে যান। আর যারা আপনার প্রকৃত বন্ধু, সেটা একজন হলে তার সঙ্গেই মিশুন। ইতিবাচক মানুষ আপনাকে কথার আঘাতে জর্জরিত না করে এগিয়ে দিতে সাহায্য করবে।
নিজের প্রতি দয়ালু হন
অন্যের যত্ন ও মনোরঞ্জন করতে গিয়ে নিজেকেও যে ভালোবাসতে হয়, এই কথাটা অনেক সময় ভুলে যাই আমরা। তাই নিজেকে ভালোবাসুন। নিজের প্রতি দয়ালু হন।
কঠিন সময়ে অন্যকে আপনি কীভাবে মানসিক সাহায্য করতেন, সেটি ভেবে নিজেকে সহযোগিতা করুন। সর্বোপরি নিজের মানসিক নিরাময়ে মনোযোগী হন।
দৃঢ় থাকুন
আত্মবিশ্বাস কমে গেলে বেশির ভাগ সময়ই মানসিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়। আর এই সুযোগটাই নেয় অপর পক্ষ। অসম্মান, অপদস্থ বা কোনো সুযোগ-সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করে। তাই দুনিয়াকে নিজের আবেগ যতটা কম দেখাবেন, তত ভালো। বরং নিজের মানসিক, আধ্যাত্মিক ও কর্মক্ষেত্রের উন্নতির জন্য কাজ করুন। কথা নয়, আপনি কী, সেটি প্রমাণ প্রমাণ করুন কাজ দিয়ে; দৃঢ় থাকুন।
‘না’ বলা শিখুন
আত্মবিশ্বাস কমে গেলে অনেকেই যেই কাজটি করতে চায় না, সেটিতেও ‘হ্যাঁ’ বলে। অনেকটা দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে যায়। এই ঝুঁকি তার ওপর অতিরিক্ত বোঝা তৈরি করে। এতে সে রাগান্বিত, হতাশ, বিরক্তি হয়। তাই যেই কাজ আপনি করতে চাইছেন না, সেটিতে ‘না’ বলুন। তবে কাউকে আঘাত করে নয়, এমনভাবে বলুন যেন আপনার অবস্থাটি সে বুঝতে পারে।
কৃতজ্ঞতা বোধ
এ মুহূর্তে আপনার যা রয়েছে, তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। এই কৃতজ্ঞতা বোধের অনুশীলন আপনাকে মানসিকভাবে স্থির রাখতে সাহায্য করবে এবং আরও কাজ করার প্রতি উৎসাহ দেবে।