Friday, November 21, 2025
spot_img
Homeমন জানালামানসিক চাপ থেকে পাঁচ ক্ষতি

মানসিক চাপ থেকে পাঁচ ক্ষতি

সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক

বর্তমান জীবনের ব্যস্ততা, টিকে থাকার লড়াই ও বস্তুবাদী সমাজের গতি কখনোই সম্পূর্ণভাবে চাপহীন বা ঝামেলামুক্ত হতে দেয় না। এখানে বেশিরভাগ মানুষই ইঁদুর দৌড়ে ব্যস্ত। আর এসব থেকে তৈরি হয় ভীষণ মানসিক চাপ; কখনো সেটা আসে নিরবে, কখনো সরবে।

এই চাপ দেহ ও মনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বাঁধিয়ে দেয় জটিল রোগ। মানসিক চাপের কারণে হওয়া দেহ ও মনের পাঁচ ক্ষতির কথা জানিয়েছে ‘লাইফ লেসনস বাই বো’।

দুশ্চিন্তা ও অতিরিক্ত চিন্তা
মানসিক চাপের সময় দেহ ‘সারভাইভাল মুড’- এ চলে যায়। অর্থাৎ কেবল নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার বা টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে লড়তে থাকে। এই কারণে দেহ করটিলস ও অ্যাড্রেনালিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়।

এসব হরমোন আমাদের আবেগকে ভারসাম্যহীন করে। এতে দুশ্চিন্তা, বাড়তি চিন্তা, আত্ম সন্দেহ, অযথা বিরক্তি, অবসাদ ইত্যাদি ঘটে। মূলত, মানসিক চাপের কারণে চিন্তাশক্তি পরিষ্কার থাকে না; মানুষ আবেগপ্রবণ হয়ে ইমপালসিভ আচরণ বা হঠাৎ ভুলভাল কিছু করে ফেলে।

ব্যথা ও অবসাদ
মানসিক চাপ যে শুধু মনের ক্ষতি করে, সেটা একদমই নয়। এর বেশ বাজে প্রভাব পড়ে আমাদের সম্পূর্ণ দেহে। অতিরিক্ত চাপের কারণে কাঁধের পেশি আঁটসাঁট হওয়া, ছোট শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা ঘটে। আর চাপ দীর্ঘমেয়াদে হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ক্লান্তি, অবসাদ, হাঁসফাঁস লাগা, হজমে সমস্যা ও ঘুমে অসুবিধা হয়। এমনকি সারারাত ঘুমের পরও সকালে উঠে ক্লান্ত লাগতে পারে।

আবেগীয় বিচ্ছিন্নতা
খুব চাপের মধ্যে থাকলে অনেক সময় মানুষ আবেগীয়ভাবে নিরব বা মৌন হয়ে পড়ে। আগে যেসব কাজে আগ্রহ লাগতো, সেগুলো করায় অনিহা চলে আসে। এমনকি পছন্দের মানুষের কাছ থেকে নিজেকে একা করে ফেলার প্রবণতাও অস্বাভাবিক নয়। আসলে অতিরিক্ত চাপ দীর্ঘদিন চলতে থাকলে উদ্বেগ, অবসাদ ও বিষণ্ণতার মতো সমস্যাগুলো ঘটে।

আচরণগত পরিবর্তন
চাপ সহ্য করার বিষয়টি ক্ষমতার বাইরে চলে গেলে অনেকের মধ্যেই অ্যাভোয়েড করার প্রবণতা বা এড়িয়ে যাওয়া বা পালানোর ইচ্ছা তৈরি হয়। যেমন: পরিকল্পনা করে সেটা পালন না করা, ফোন কল না ধরা, কাজে গড়িমসি করা ইত্যাদি।

আবার অনেকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশিক্ষণ থাকা বা বেশি খাওয়ার প্রবণতাও বেড়ে যায়। এসব কাজ শুরুতে কিছুটা স্বস্তি দিলেও পরবর্তী সময়ে অবস্থাকে আরো খারাপ করে তুলতে পারে।

নিঃশেষিত বোধ করা ও আনন্দ কমে যাওয়া
প্রতিদিনই চাপের মধ্যে থাকলে এটি কাজের গতিকে নষ্ট করে দেয়। অনুপ্রাণিত হওয়ার বদলে কেবল টিকে থাকার জন্য মানুষ কাজ করে যায়। এই অবস্থা ধীরে ধীরে মানসিক শান্তি ও আনন্দকে নষ্ট করে; স্বস্তি কমে যায়।

এসব ক্ষতি থেকে বাঁচতে এবং মানসিক চাপ কমাতে প্রথম পদক্ষেপ হলো, সচেতন হওয়া। নিজের মনের যত্ন নেওয়া। আপনার শরীর ও মন খুব চাপের মধ্যে পড়ছে মনে হলে নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিন। কোনো কিছু থেকে ডিসট্র্যাক্ট হওয়া বা বিক্ষিপ্ত হওয়া বা পালানোর বদলে নিজেকে সময় দিন। ‘মি টাইম’ বা ‘নিজের সময়’ কাটান। ব্যায়াম করুন, চিন্তাগুলো লিখে ফেলুন। এ ছাড়া ধ্যান, বিশ্বস্ত কারো সঙ্গে কথা বলা, প্রকৃতির কাছে যাওয়া, প্রার্থনা ইত্যাদিও বেশ কাজে দিতে পারে এই সময়টায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

সাতকাহন
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.