Monday, January 20, 2025
spot_img

হিজামা কাপিং কী?

ডা. এস. এম দবির

হিজামা হলো একটি বিশেষ কাপিং পদ্ধতি। যদিও হিজামা প্রাচীন চিন দেশে উদ্ভব হয় আজ থেকে প্রায় ৩৬০০ বছর আগে, তবে সুন্নাহভিত্তিক হিজামার প্রচলন শুরু হয় রাসুল (সা.) এর যুগেই।

প্রথমেই সাধারণ ওয়েট কাপিং এবং সুন্নাহভিত্তিক হিজামার মাঝে পার্থক্য বোঝা দরকার। সাধারণ ওয়েট কাপিংয়ে ল্যানসেট বা ডায়েবেটিক নিডল বা সুঁইয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে ফুটো করে কাপিং বা সাকশনের মাধ্যমে রক্ত বের করা হয়। তবে হিজামাতে যেটা করা হয়, সেটা হলো বিশেষ সার্জিক্যাল ব্লেড ব্যবহার করে সুন্নাহভিত্তিক পদ্ধতিতে বিশেষভাবে কাট করা। এই কাটাটা ত্বক বা স্কিন লেয়ারের ডার্মিস লেভেলকে ক্রস করবে না, তাহলে সেটাকে সুন্নাহভিত্তিক হিজামা বলা যাবে না যেমনটা ওয়েট কাপিংয়ে করা হয়ে থাকে।

হিজামাতে যে লাইট স্ক্র‍্যাচ হয়, এতে ক্যাপিলারি ইনজুরি হয়, এবং এই ক্যাপিলারির এন্ডোথিলিয়াম থেকেই নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে।

এই নাইট্রিক অক্সাইডকেই বলা হয় হিলিং মলিকিউল বা মিরাকল মলিকিউল। বিজ্ঞানীরা এই নাইট্রিক অক্সাইডকে মিরাকল মলিকিউল নামে আখ্যা দিয়েছে। কারণ, এটা যেখানে বুস্ট আপ হয় সেখানের এবং আশেপাশের হিলিং পাওয়ার কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

কারা কারা করতে পারেন হিজামা?

প্রাপ্ত বয়স্ক প্রত্যেক সুস্থ ব্যক্তিই প্রতি দুই বা তিন মাস পরপর হিজামা গ্রহণ করতে পারবেন। এতে করে রক্তে ভেসে থাকা ডেড সেল বা মৃতকোষগুলো বের হয়ে আসবে এবং ইমিউনিটি বুস্ট আপ হবে বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

এ ছাড়াও যারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শারীরিক ব্যথায় ভুগছেন বা প্যারালাইসিস হয়ে পরে রয়েছেন বা উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন তারাও হিজামা চিকিৎসাটা নিতে পারেন।

যেসব রোগের ক্ষেত্রে হিজামার উপকারিতা রয়েছে –

১. মাথা, ঘাড়, পিঠ, কোমর, পা ও জয়েন্টব্যথা সহ সকল ধরনের ব্যথায়।

২. অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস, সিওপিডি, সাইনুসাইটিস, টনসিলাইটিস, ফ্যারিঞ্জাইটিস, নিউমোনিয়া, লাং ইনফেকশানে।

৩. হাই কোলেস্টেরল, হাই ট্রাইগ্লিসারাইড, হার্ট ব্লক, হাইপ্রেশার, অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে।

৪. গ্যাস্ট্রাইটিস (গ্যাসের সমস্যা), বুক জ্বালা পোড়া, পেটের ব্যাথা, ফিসার, পাইলস, ফ্যাটি লিভার, আইবিএসে।

৫. এটি হেপাটাইটিস বি-এর ভাইরাল লোড কমায়।

৬. ঘুমের সমস্যা, মানসিক চাপ, পারকিনসন্স ডিজিজ, মানসিক সমস্যায়।

৭. স্পোর্টস ইনজুরিতে

৮. ইরেকটাইল ডিসফাংশন, ইজাকুলেটরি ডিসফাংশন ও অন্যান্য যৌন সমস্যায়।

৯. থাইরয়েডের সমস্যায়।

১০. গাউটে।

১১. রক্তশুন্যতা, থ্যালাসেমিয়াতে।

১২. পিসিওএস, মাসিকের সমস্যা সহ মেয়েদের অন্যান্য সমস্যায়।

১৩. অস্টিওপোরোসিসে।

বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতির মাঝে হিজামা বর্তমান বিশ্বে অতি জনপ্রিয় ও কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি। অতএব যারা সুন্নাহভিত্তিক হিজামা সম্পর্কে অভিজ্ঞ তাদের থেকে হিজামা চিকিৎসা গ্রহণ করা যেতে পারে।

লেখক :
জুনিয়র কনসালটেন্ট, পেইন ম্যানেজমেন্ট ;
রিজুভা ওয়েলনেস ; গুলশান-১
ফোন : ০১৭২২৯৭৭৪৬০

ডা. এস. এম দবির
ডা. এস. এম দবির

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments