ডা. হালিদা হানুম আখতার
আমরা একটি বিষয়ে আজকাল খুব শঙ্কিত। যত দিন যাচ্ছে, তত জানতে পারছি, ক্যানসার মানুষের বেশি হচ্ছে। কারণ যা-ই হোক, এটি বাড়ছে।
একটি বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে, নারীর বৈশিষ্ট্য নিয়ে যেসব অঙ্গ রয়েছে, যেমন– জরায়ু, জরায়ুমুখ ও স্তন ইত্যাদিতে ক্যানসার হয়। এসব অঙ্গে এই রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি।
সাধারণত নারী দেহের মধ্যে স্তনে সবচেয়ে বেশি ক্যানসার হয়। এরপর হয় জরায়ুমুখে। তৃতীয় হয় জরায়ু বা ওভারিতে। আমরা আজ নারীর স্তন ক্যানসার নির্ণয়ের বিষয়ে আলোচনা করব।
সারাবিশ্বে অক্টোবর মাসকে স্তন ক্যানসার সচেতনতা মাস হিসেবে পালন করা হয়। বাংলাদেশে ১০ অক্টোবর স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবস বেসরকারিভাবে পালন হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রায় এক লাখে ২২ জনের এই রোগটি হতে পারে। আর যেসব নারী প্রজনন স্বাস্থ্যের মধ্যে রয়েছেন, অর্থাৎ যাদের ১৫ থেকে ৫৫ বছর, তাদের এক লাখে ২০ জনের এই ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাহলে প্রতি পাঁচ হাজার নারীর মধ্যে একজনের এই রোগ হচ্ছে।
স্তন ক্যানসার বেড়ে গেলে অনেক ভোগান্তি হয়। মেটাস্টিসিস হয়ে যায়; অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই ক্যানসার নিজে ও চিকিৎসকের পরীক্ষার মাধ্যমে আগে বা প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা যেতে পারে। একে স্ক্রিনিং বলে।
এর মধ্যে প্রথমে নিজে নিজের স্তন পরীক্ষা করা। আপনি হয়তো গোসল করছেন, গা মুছছেন; তখন খেয়াল করে দেখবেন বা নিজের স্তনকে পরীক্ষা করে দেখবেন, ভেতরে কোনো গোটা রয়েছে কিনা। গোটা বা অস্বাভাবিক কিছু মনে হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
একে আমরা ক্লিনিক্যাল ব্রেস্ট এক্সামিনেশন বলি। তখন চিকিৎসক আপনাকে ভালো করে পরীক্ষা করে বলবেন, ‘এখানে আসলেই গোটা লাগছে। এটা অন্য ব্যবস্থা করতে হবে।’ অনেক সময় হয়তো বায়োপসি করে দেখতে হতে পারে, ওই জায়গায় আসলেই কোনো পরিবর্তন হয়েছে কিনা।
ক্যানসার প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা গেলে যেটা হয়, চট করে চিকিৎসা দেওয়া যায়। গোটাটাকে সার্জারি করে ফেলে দেওয়া সম্ভব। এতে আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন।
তবে অবহেলা করলে, রোগ বেড়ে গেলে, অবস্থা চিকিৎসার বাইরে চলে যাবে। তাই শুরুতেই সচেতন হতে হবে। এতে দীর্ঘ মেয়াদে সুস্থ থাকতে পারবেন।
লেখক : রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
