Wednesday, November 19, 2025
spot_img
Homeঅন্যান্যসন্তান হয় না বলে বাজে কথা শুনেছি

সন্তান হয় না বলে বাজে কথা শুনেছি

উজ্জ্বলা লিমিটেড, বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। নারীকে যোগ্য করে তুলতে অনলাইন ও অফলাইন ক্লাসের মাধ্যমে বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিংয়ের সব খুঁটিনাটি শেখানো হয় এখানে। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারীর সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক বিশেষ আয়োজনের আজ রইল ৭ম পর্ব। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাশ্বতী মাথিন

পর্ব – ৭ : আফরোজা আক্তার

খুব ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যায় মেয়েটির। অনেক বছর ধরে সন্তান হচ্ছিলো না। বাজা, বন্ধ্যা, সকালবেলা এ মেয়ের মুখ দেখলে যাত্রা ভালো হবে না- এসব কথা শুনতে হতো তাকে। এমনকি স্বামী প্রায়ই হুমকি দিতেন সন্তান না হলে আরেকটি বিয়ে করে ফেলবেন বলে। অত্যন্ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করে এক পর্যায়ে তালাক দেয় মেয়েটি। এরপর আরেকটি বিয়ে হয়। এ ঘর আলো করে আসে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান। মেয়ে হওয়ার কিছুদিন পর উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিতে আসেন। উজ্জ্বলা থেকে বিউটিফিকেশনের সম্পূর্ণ কোর্স শেষ করে এখন নিজেই একটি পার্লার দিয়েছেন। স্বামী ও বাবার বাড়ি- দুই পরিবারকেই সহযোগিতা করছেন।

‘শ্বশুর বাড়িতে এতো কষ্টে থাকতাম মনে হতো আত্মহত্যা করে ফেলি। ডিভোর্সের পর আমার আগের স্বামী আরেকটি বিয়ে করে। সে ঘরে এখনো কোনো সন্তান হয়নি। তার নিজের শারীরিক সমস্যা ছিলো। ছোট ছিলাম, মেইল ইনফার্টিলিটি বলে যে একটি বিষয় রয়েছে, পুরুষও যে সন্তান দিতে অক্ষম হয়, সেটি বুঝিনি। আর এ জন্য আমাকে যন্ত্রণা সহ্য করতে হতো। কটু কথা শুনতে হতো। আমার বর্তমান স্বামীর আগের স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন। সে ঘরে দুটো মেয়ে রয়েছে। এখন আমার ঘর জুড়ে তিন সন্তান। তিনটি ফুটফুটে শিশুর মা আমি,’ বলছিলেন আফরোজা আক্তার।

উজ্জ্বলাতে আসি ২০১৯ সালে। কোভিডের সময়, লকডাউন খোলার পর। ছোট মেয়েটার যখন এক বছর হলো তখন মনে হলো আমার কিছু করতে হবে। তেমন লেখাপড়াও জানি না যে চাকরি করবো। এ সময় ফেসবুকে উজ্জ্বলার সন্ধান পাই। ছোটবেলা থেকে সাজতে ভালো লাগতো। উজ্জ্বলার সন্ধান পাওয়ার পর মনে হলো বিউটি আর্টিস্ট হিসেবে প্রশিক্ষণ নিতে পারি। আমার বর্তমান স্বামী ভীষণ সহযোগিতা করে। সে পাশে না থাকলে এত দূর এগোতে পারতাম না। উজ্জ্বলায় বাচ্চা নিয়ে ক্লাস করতে আসতাম। অনেক সহযোগিতা পেয়েছি এখান থেকে। উজ্জ্বলা থেকে মেকআপের ওপর সম্পূর্ণ কোর্স শেষ করেছি। এখন অ্যাডভান্স কোর্স করছি- জানান আফরোজা।

উজ্জ্বলা আমাকে শক্ত হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ চার মাস হলো নরসিংদীতে বাবার বাড়ির এলাকায় পার্লার দিয়েছি। এখন মাসে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় হয়। আজ আমি যতটা স্বাবলম্বী হয়েছি, তা উজ্জ্বলার জন্য। তাই নিজেকে একজন উজ্জ্বলা মনে করি। এভাবেই একজন দক্ষ বিউটি আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করে যেতে চাই।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

সাতকাহন
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.