সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
ঢাকা শহরের অভিজাত এলাকা গুলশানের নিকেতনে ব্লক সি, ৬ নম্বর রোডের, ৪৩ নম্বর বাড়ির সামনে থামতেই চোখে পড়বে ‘প্রিটি লেডি বাই সোনিয়া খান’- এর সাইনবোর্ড।
বিউটি স্যালন ‘প্রিটি লেডি বাই সোনিয়া খান’- এর স্বত্তাধিকারী সোনিয়া খান বাংলাদেশের বিউটি ইন্ডাসট্রির একটি অন্যতম নাম। তিনি রূপ বিশেষজ্ঞ, প্রশিক্ষক ও উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছেন প্রায় চার থেকে পাঁচ বছর ধরে।
বিউটি স্যালন ‘প্রিটি লেডি বাই সোনিয়া খান’- এর যাত্রা শুরু হয় ২০০৮ সালে। প্রথমে ছোট পরিসরে থাকলেও ২০২৩ সালে নিকেতনে বড় করে এর আউটলেট শুরু হয়। ‘প্রিটি লেডি বাই সোনিয়া খান’- এ মেকওভারের পাশাপাশি স্কিন কেয়ার, হেয়ার রিবন্ডিং, হেয়ার কালার, মেনিকিউর, পেডিকিউর সহ সব ধরনের বিউটি সার্ভিসগুলো একজন ক্লাইন্ট পেয়ে যাবেন। পাশাপাশি নেইল ও আইল্যাশ এক্সটেনশনের কাজগুলোও করা হয় এখানে। সোনিয়া খান জানান, ‘গতাণুগতিকের বাইরে একটু ভিন্ন রকম ও দৃষ্টিনন্দন লুক বা মেকআপের মাধ্যমে ক্লাইন্টদের সন্তুষ্ট করাই প্রতিষ্ঠানটি লক্ষ্য’।
রূপ বিশেষজ্ঞ সোনিয়া খান দেশ ও বিদেশ মিলিয়ে মেকআপের ওপর প্রায় ৮৫টির উপরে কোর্স করেছেন। বাংলাদেশে আফরোজা পারভীন, কামরুল, বিউটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উজ্জ্বলায় কোর্স করেছেন। আর আন্তর্জাতিকভাবে জর্জিকট, নাইম খান, মিশেলি পালমা, রাফায়েল অলিভার প্রমুখের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

উদ্যোক্তা হিসেবে পথ চলাটা শুরুতেই এতো মসৃণ ছিল না এই রূপ বিশেষজ্ঞের। শুরুতে পারিবারিক বাঁধাও পেয়েছেন অনেক। তবে কাজটির প্রতি ভীষণ আগ্রহ ও ভালোবাসা তাকে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে। সোনিয়া খান বলেন, ‘আমরা যখন কাজ শুরু করি, ২০০৮ এর দিকে, বিউটি সেক্টরকে খুব নিচু চোখে দেখা হতো। কষ্ট লাগতো এতো সুন্দর একটি কাজকে হীনভাবে দেখা হয়। এখন আলহামদুলিল্লাহ্ অনেকেই এই ইন্ডাট্রিতে কাজ করতে এসেছে। তবে আন্তর্জাতিকভাবে বিউটি সেক্টর যে সম্মানটুকু পায়, আমাদের দেশে এর এখনো অনেক ঘাটতি রয়েছে। আর এটি এমন একটি সেক্টর একজন মেয়ে সৎভাবে কাজ করলে খুব সুন্দরভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। পুরুষশাষিত সমাজে অনেক নারীই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না, তবে এটি এমন একটি সেক্টর যেখানে একজন নারীর তার স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সম্ভব।
সোনিয়া খান বিউটি প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। গত তিন বছর ধরে বিউটি আর্টিস্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি ব্যক্তিগত পর্যায়েও কাজটি করছেন। তাঁর কাছে শিখে অনেক নারীই বিউটি আর্টিস্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ও স্বাবলম্বী করেছে।
কেবল রূপ বিশেষজ্ঞ ও প্রশিক্ষকই নন, ক্রাফটিং, অর্নামেন্টস তৈরি, ফ্লাওয়ার মেকিং ইত্যাদি সৃষ্টিশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সোনিয়া খান। ভবিষ্যতে এসব নিয়ে একটি সৃজনশীল স্কুল তৈরির ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি একটি জিমও শুরু করতে চান তিনি। সোনিয়া খান বলেন, ‘কাজকে আমি ভালোবাসি। কাজ নিয়েই বেঁচে থাকি। ভবিষ্যতে আমি নিজেকে মেকআপ আর্টিস্ট, বিউটি এক্সপার্ট ও ট্রেইনার হিসেবেই দেখতে চাই এবং নিজের কাজ দিয়ে সবার মনে জায়গা করে নিতে চাই।বাংলাদেশ আমাকে আমার কাজের মাধ্যমে এক নামে চিনবে এটাই স্বপ্ন।’