Friday, February 14, 2025
spot_img
Homeস্বাস্থ্যকাহনরোাগব্যাধিদেহে পুষ্টির ঘাটতি হচ্ছে, বুঝবেন ৬ লক্ষণে

দেহে পুষ্টির ঘাটতি হচ্ছে, বুঝবেন ৬ লক্ষণে

সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক

দ্রুতগতির এই বিশ্বে সহজেই দেহের পুষ্টির প্রতি অবহেলা হয়ে যায়। কাজের তাড়াহুড়ায় অনেকে প্রক্রিয়াজাত খাবারের ওপর নির্ভর করে অথবা ভারসাম্যপূর্ণ খাবার গ্রহণের কথা ভুলেই যায়। তবে শরীর ঠিকই জানান দেয় পুষ্টির এই ঘাটতির কথা।

কিছু লক্ষণ রয়েছে, যেগুলো দেখলে বোঝা যাবে দেহে ভারসাম্যপূর্ণ খাবারের ঘাটতি হচ্ছে। দেহে পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে, এমন কিছু লক্ষণের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথআপ্টা।

ক্লান্ত লাগা
সারাক্ষণই ক্লান্ত বোধ করা পুষ্টির ঘাটতির অন্যতম লক্ষণ। পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব হলে দেহ দুর্বল হয়ে পড়ে। উদাহরণস্বরূপ– আয়রন ও ভিটামিন বি-১২।

সাধারণত আয়রনের ঘাটতি হলে অবসাদ লাগে বা ক্লান্তি অনুভব হয়, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে। আয়রন হিমোগ্লোবিন তৈরির জন্য জরুরি। এর ঘাটতিতে দেহে অ্যানিমিয়া হতে পারে। ড্রাই ফ্রুটস, বাদাম, কলিজা, লতি, কচু ইত্যাদিতে আয়রন পাওয়া যায়।

তবে কেবল আয়রন নয়, ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতি হলেও অবসন্ন বোধ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সাধারণত বি-১২ পাওয়া যায় প্রাণিজ খাদ্যে। তাই নিরামিষভোজী ও ভেগানদের এ সমস্যায় বেশি ভুগতে দেখা যায়।

ভঙ্গুর চুল ও নখ
নখ একটুতে ভেঙে গেলে বা চুল পড়ে গেলে দেহে ভিটামিনের ঘাটতি হচ্ছে কিনা খেয়াল করুন। সাধারণত শক্ত নখ ও চুলের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন প্রয়োজন। এ জন্য বায়োটিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ডিমের কুসুম, বাদাম, মিষ্টিআলু, কলা ও ব্রকলি ইত্যাদিতে বায়োটিন পাওয়া যায়।

মেজাজের ওঠানামা
আমরা যেসব খাবার খাই, সেগুলো কেবল দেহেরই শক্তি জোগায় না, মস্তিষ্ককেও প্রভাবিত করে। এতে আমাদের মন-মেজাজও প্রভাবিত হয়। সাধারণত দেহে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিডের ঘাটতি হলে মুড সুইং বা মন-মেজাজের ওঠানামা হতে পারে। ওমেগা থ্রি-এর ঘাটতির সঙ্গে বিষণ্ণতা বাড়ার সংযোগ রয়েছে।

আমাদের দেহ নিজে এটি তৈরি করতে পারে না। তাই খাদ্য তালিকায় এটি রাখতে হবে। ফ্যাটি ফিশ (যেমন : স্যামন, ম্যাকরল ও সারদিন), ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড ও ওয়ালনাট ইত্যাদিতে ওমেগা থ্রি রয়েছে।

মুড সুইংয়ের আরেকটি অন্যতম কারণ হতে পারে ভিটামিন ডি-এর অভাব। মস্তিষ্কের কার্যক্রম ঠিকঠাক রাখতে ভিটামিন ডি-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই পুষ্টির ঘাটতিতে বিষণ্ণতা ও মুড ডিজঅর্ডারের সমস্যা হয়। ভিটামিন ডি পাবেন সূর্যের আলো থেকে। পাশাপাশি ডিম, ফর্টিফাইট দুগ্ধজাতীয় খাবার থেকেও এটি পাওয়া যায়।

ক্ষত সারতে দেরি হওয়া
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে দেহের ক্ষত দ্রুত সারে। তবে ক্ষত সারতে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি লাগলে দেহে পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে বোঝা যায়। সাধারণত ভিটামিন সি-এর অভাবে এমনটা হয়। এই ভিটামিন নতুন ত্বক ও ব্লাড ভ্যাসেল তৈরিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এটি কোলাজেন তৈরিতেও উপকারী। বিভিন্ন শাকসবজি, সাইট্রাস ফ্রুট, ব্রকলি ইত্যাদিতে ভিটামিন-সি পাওয়া যায়।

বারবার সংক্রমণ
বারবার ঠান্ডা-কাশি লাগা দেহের পুষ্টির ঘাটতির লক্ষণ। সাধারত দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে এই সমস্যা হয়। এখানেও ভিটামিন সি-এর বড় ভূমিকা রয়েছে। ভিটামিন সি খেলে ঠান্ডা-কাশি দ্রুত সারে।

এ ছাড়া ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হলেও বারবার সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এটি দেহের টি সেল সক্রিয় রাখে এবং শ্বেত রক্তকণিকা বাড়ায়। এগুলো বাইরের জীবাণু থেকে দেহকে সুরক্ষিত রাখে। এ ছাড়া জিঙ্কের ঘাটতি হলেও এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।

পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
মানসিক চাপ, মোবাইল ও ল্যাপটপ বেশি দেখা ইত্যাদি পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণ। তবে পুষ্টির ঘাটতিও ঘুম কম হওয়ার জন্য দায়ী। এর জন্য অন্যতম পুষ্টি উপাদান হলো ম্যাগনেসিয়াম। এই মিনারেল নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি পেশি শিথিল রাখে এবং মানসিক চাপ কমায়। এতে ঘুম ভালোভাবে হয়। সবুজ শাকসবজি, বাদাম, বীজ, ভুসি ও ভুসিসমেত খাবারে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। এ ছাড়া ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির কারণেও ঘুমে অসুবিধা হতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments