Saturday, March 22, 2025
spot_img
Homeস্বাস্থ্যকাহনচিকিৎসা চাইআত্মবিশ্বাসী হাসি পেতে পাঁচ জরুরি পরামর্শ

আত্মবিশ্বাসী হাসি পেতে পাঁচ জরুরি পরামর্শ

ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ

সর্বক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার এই যুগে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে আমাদের কত চেষ্টা! বিভিন্ন কসমেটিক পণ্য ব্যবহার, পার্লারে যাওয়া, ত্বকের যত্ন নেওয়া, নতুন ডিজাইনের পোশাক পরাসহ কত কিছু। তবে গবেষণা বলছে, হাসি সুন্দর না হলে সবই বৃথা।

একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব নির্ভর করে তার আত্মবিশ্বাসী হাসি দিয়ে। তবে অনেকের সেটি মলিন থাকে নানা কারণে। বোঝেও না, কী করলে আকর্ষণীয় হাসি সহজেই পাওয়া যাবে। তাই হাসি মলিন হওয়ার কারণ এবং এটি আকর্ষণীয় করার উপায় রইল পাঠকের জন্য।

মুখের দুর্গন্ধ
গবেষণায় বলা হয়, প্রতি চারজনের একজন মুখের দুর্গন্ধে ভোগেন, সামাজিকভাবে হেয় হয়ে মানুষের সামনে কথা বলা পর্যন্ত লজ্জাজনক হয়ে পড়ে। এমনটি হওয়ার প্রধান কারণ সঠিক উপায়ে মুখ পরিষ্কার না করা।

দাঁতের ফাঁকে, বিশেষ করে আক্কেল দাঁত বাঁকা হয়ে থাকলে এর মধ্যে খাবার জমে। এতে খাবার পচে গন্ধের সৃষ্টি হয়। সঠিক উপায়ে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা, ডেন্টাল ফ্লস অথবা ইন্টার ডেন্টাল ব্রাশ ব্যবহার করা, মাউথওয়াশ ব্যবহার করা এবং জিহ্বা পরিষ্কার রাখা প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। তবে বছরে অন্তত একবার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরিষ্কার করানো জরুরি।

এ ছাড়া মুখের শুষ্কতা, লিভার ও কিডনি রোগ, সাইনোসাইটিস, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসসহ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকেও দুর্গন্ধ হতে পারে। বিব্রতকর এসব সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় সুচিকিৎসায়।

বিবর্ণ দাঁত
দাঁত কালো, খয়েরি বা অন্য কোনো রঙের হয়ে থাকলে হাসি তো ফাঁসির মতো মনে হয়। বিবর্ণ দাঁতের প্রধান কারণ ধূমপান, পান-সুপারি খাওয়া, দাঁতের পৃষ্ঠে জমে ওঠা পাথর, কিছু ওষুধের পার্শ্বপতিক্রিয়া, আঘাত, ধাতব ফিলিং, গঠনগত ক্রটি ইত্যাদি।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অধুনিক স্কেলিং ও পলিশিংয়ের মাধ্যমে দাঁত সাদা হয়ে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে টুথ হোয়াইটেনিং বা ব্লিচিং করার প্রয়োজন পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ ফিলিং বা ভিনিয়ারের প্রয়োজন পড়তে পারে। ডেন্টাল চিকিৎসকের কাছে গেলে এসব সমস্যার সমাধান সহজে মেলে।

দাঁতহীন মুখ
এক বা একাধিক দাঁত না থাকলে শুধু খাবার চিবানোতে সমস্যা হয় তা নয়, মুখের গঠন ভেঙে যাওয়া, অন্য দাঁতের সামঞ্জস্য নষ্ট হওয়া, হাসি অসুন্দর হওয়াসহ ডিমেনশিয়া হতে পারে। কোনো কারণে দাঁত হারালে ডেঞ্চার (খোলাযোগ্য, বিশেষ প্লেটের মাধ্যমে তৈরি বস্তু), ব্রিজ (দুই পাশের ভালো দাঁত কাজে লাগিয়ে প্রক্রিয়া করে লাগানো) বা ইমপ্ল্যান্ট (চোয়ালের মধ্যে ধাতব স্ক্রু ঢুকিয়ে এর ওপর দাঁত লাগানো) ইত্যাদি যে কোনো একটি পদ্ধতি বেছে নিয়ে সুন্দর হাসি ফিরে পাওয়া সম্ভব।

অসম বা আঁকাবাঁকা দাঁত
কসমেটিক ডেন্টাল চিকিৎসা এখন এতটাই নিরাপদ, বিভিন্ন বয়সের যে কোনো দাঁতকে সুন্দর ও সুসজ্জিত করা যায়। যেমন : দাঁত ভেঙে গেলে বা গর্ত হলে বা সামনের দাঁতের মাঝে ফাঁকা হলে একদিনেই এর নিজস্ব রং অনুযায়ী বিশেষ বন্ডিং ফিলিং করা সম্ভব। এতে সুস্থ ও আকর্ষণীয় দাঁত পাওয়া যায়।

অন্যদিকে উঁচু-নিচু আঁকাবাঁকা দাঁতকে অর্থোডন্টিক ব্রেসের মাধ্যমে সুসজ্জিত করে তোলা কেবল সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এলোমেলো দাঁত শুধু সৌন্দর্যের অন্তরায় নয়, মুখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিবন্ধক। তাই নিজেকে সুন্দর করতে এবং দৃঢ় ব্যক্তিত্বের করতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দাঁতকে সুসজ্জিত করতে পারেন।

দাঁত ও মাড়ির অস্বাভাবিক সংযুক্তি
জন্মগত সমস্যা, মাড়িতে প্রদাহ ও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি কারণে দাঁতের বেশির ভাগ অংশ মাড়ি দিয়ে ঢেকে থাকতে পারে অথবা দাঁতের শিকড় উন্মুক্ত হতে পারে। ত্রুটিপূর্ণ এসব অবস্থা চিকিৎসার মাধ্যমে ঠিক করা সম্ভব।

সুতরাং নিজেকে আত্মবিশ্বাসী, যোগ্য বা প্রাণচঞ্চল রাখতে সুন্দর হাসির গুরুত্ব বুঝতে হবে। না হলে পিছিয়ে পড়তে পারেন মূল স্রোতের বহমানতা থেকে।

লেখক : চিকিৎসক; রাজ ডেন্টাল সেন্টার
কলাবাগান বশির উদ্দিন মসজিদসংলগ্ন, ঢাকা
ফোন : ০১৯১১৩৮৭২৯২

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments