সাতকাহন২৪.কম
ছোটবেলায় রায়হানা আক্তার তেসামের বাবা মারা যায়। মায়ের বিয়ে হয়ে যায় অন্য জায়গায়। তখন থেকে মেয়েটির মনে হতো নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে, নিজে কিছু করতে হবে। খুলনা ভার্সিটির আওতায় কেসিসি ওমেন্স কলেজ থেকে ফ্যাশন ডিজানিংয়ের ওপরে অনার্স করেন। ভাবছিলেন, নিজেকে স্বাবলম্বী করার জন্য আর কী কী করা যায়। এ সময় সন্ধান পেলেন উজ্জ্বলার। মেকআপের বিষয়ে ছোটবেলা থেকে একটা আগ্রহও ছিলো।
উজ্জ্বলা থেকে বিউটিফিকেশনের উপর কোর্স শেষ করে এখন নিজেই খুলনায় একটি স্যালন খুলেছেন । মাসিক আয় প্রায় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। বর্তমানে তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা।
সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে উজ্জ্বলা কীভাবে সাহায্য করেছে? উত্তরে বলেন, ‘ চাকরি করলে নিজের স্বাধীনতা থাকে না। ব্যবসায় থাকে। আর স্বাবলম্বী না হতে পারলে সমাজে মেয়েদের কোনো কদর নেই। ২০১৮ সালে আমি উজ্জ্বলায় আসি। উজ্জ্বলায় পরিবেশ আমার কাছে খুব ইতিবাচক মনে হয়। স্বল্প খরচে এখান থেকে কোর্স করা যায়। এটা খুবই ভালো বিষয়। আসলে উজ্জ্বলা আমাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে, শক্তি জুগিয়েছে।
আমি মেকআপের কিছুই ভালোভাবে জানতাম না। উজ্জ্বলার কোর্স থেকে মেকআপের সব আদ্যপান্ত শিখেছি। আর এখানে বিজনেস ম্যানেজম্যান্টের ওপর একটি কোর্স করায়। এটা খুব উপকারে লেগেছে ব্যবসা দাঁড় করাতে। উজ্জ্বলার কোর্সগুলোই আমাকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে দাঁড় হতে সাহায্য করেছে।’
আমার খালাতো বোন ও তার স্বামী আমাকে পড়ালেখা ও কাজের ক্ষেত্রে অনেক সহযোগিতা করেছে জানিয়ে তেসাম বলেন, ‘আমার স্বামীও সাহায্য করেছে। তবে প্রথম দিকে বিউটি আর্টিস্ট হওয়ার ক্ষেত্রে শ্বশুড় বাড়ি থেকে কম সহযোগিতা পেয়েছি। পরে অবশ্য তারাও উৎসাহ জুগিয়েছে।’
কোর্স শেষে উজ্জ্বলা থেকে একটি পরীক্ষা হয়। সেখানে মেধা ও কাজের ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয়। এসব পরীক্ষাতেও ভালো মাকর্স পেয়েছিলেন তেসাম। জানান, উজ্জ্বলার এই পরীক্ষাগুলো খুব উপকারে আসে। এটা যে কারো ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক দিক। উজ্জ্বলায় আমি সেরা ১০ হয়েছিলাম এবং তাদের কাছ থেকে অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিলাম। এটা আমার সম্মান অনেক বাড়িয়েছে। জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। নিঃসন্দেহে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার বিষয়টি উজ্জ্বলার অনেক ভালো দিক। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
ভবিষ্যতে একজন দক্ষ বিউটি আর্টিস্ট হয়ে উঠতে চান তেসাম। নিজের কাজ দিয়ে মানুষের মন জয় করাই তার লক্ষ্য। বলেন, ‘উজ্জ্বলা আমাকে শুধু মেকআপ করানোই শেখায়নি। ত্বক ও চুলের যত্নের বিষয়গুলোও খুব ভালোভাবে শিখিয়েছে। এভাবেই কাজ করে এগিয়ে যেতে চাই এবং উজ্জ্বলার নাম আরো প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।’
বি : দ্র : বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে উজ্জ্বলা লিমিটেড। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক পর্ব চলছে। এই পর্বটি ছিলো ২২তম।