সাতকাহন২৪.কম
ছোটবেলা থেকেই সাজ-গোজের প্রতি একটা ভীষণ আকর্ষণ ছিলো তানজিনা আক্তার পিংকির। ডিগ্রি পাশ করার পর ২০১৯ সালে উজ্জ্বলা থেকে বিউটিফিকেশনের উপর সম্পূর্ণ কোর্স শেষ করেন। বর্তমানে নোয়াখালিতে স্যালন খুলেছেন তিনি। মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকা আয়। নিজের সংসার তো চালাচ্ছেনই পাশাপাশি মা-বাবার সংসারেও সহযোগিতা করছেন। একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। কেমন ছিলো তার পথ চলা, উজ্জ্বলা তাকে কতটুকু সহযোগিতা করেছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে- এসব গল্পই শুনবো তার মুখ থেকে।
আফরোজা পারভীন ম্যাডামের কাছ থেকে অনেক শিখেছি
ফেসবুকের মাধ্যমে উজ্জ্বলার অ্যাড দেখেছিলাম। তারা কীভাবে শেখায় সেই ভিডিওগুলো দেখি। খুব ভালো লেগেছিলো। মনে হয়েছিলো বিউটিফিকেশন শেখার ক্ষেত্রে উজ্জ্বলা মেয়েদের জন্য ভালো প্ল্যাটফর্ম। এখানে থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। এখানকার বোডিংয়ে থেকে ক্লাসগুলো করা যায়। আমরা যারা ঢাকার বাইরে থাকি, তবে সেখানে গিয়ে কাজ শেখার সাহস পাই না, তাদের জন্য উজ্জ্বলা ভালো।
উজ্জ্বলা খুব নিঁখুতভাবে শেখায়। প্রতিষ্ঠানটির সহ প্রতিষ্ঠাতা আফরোজা পারভীন ম্যাডামের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। এখানকার সবগুলো ক্লাসই খুব ভালো লাগতো।
স্বামী অনেক সহযোগিতা করেছে
উজ্জ্বলা থেকে কোর্স করে এসে ২০২০ সালে গ্রামে পার্লার খুলি। বর্তমানে শহরেও একটি পার্লার খুলেছি। আমার স্বামী আমাকে এসব ক্ষেত্রে খুব সহযোগিতা করে। আমার বিয়ে হয়ে যায় ক্লাস এইটে পড়ার সময়। বিয়ের পর ডিগ্রি পাশ করি। পার্লারের কাজ শিখি বলে অনেকেই আমার স্বামীকে বাজে কথা বলতো। গ্রামের অনেকেই বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখতো না। শ্বশুর বাড়ি থেকেও অনেক নেতিবাচক কথা শুনেছি। তবে আমার স্বামী ও শ্বশুর আমাকে সহযোগিতা করেছে। আমার শ্বশুর বলতেন, ‘ লেখাপড়া শিখে কেন ঘরে বসে থাকবে? কাজ করো।’
উজ্জ্বলা সাহস জুগিয়েছে
আমি সবসময় নিজেকে স্বাবলম্বী করতে চাইতাম। আর উজ্জ্বলা আমার সেই পথে সাহস জুগিয়েছে। উজ্জ্বলা কেবল মেকআপের খুঁটিনাঁটি শেখায়নি। পাশাপাশি শিখিয়েছে নিজের জন্য নিজেকেই দাঁড়াতে হবে। আফরোজা আপা সাহস জুগিয়েছেন। এর আগে আমি যেন একটা অন্ধকার জগতে ছিলাম, যেন কালো চশমা পড়া ছিলো চোখে।
উজ্জ্বলার গ্রুমিং ক্লাসগুলোতে শিখেছি কীভাবে কার সঙ্গে কথা বলতে হবে, নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে। উজ্জ্বলার প্রতিষ্ঠাতা আদিত্য সোম দাদা আমাদের বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ক্লাস করাতেন। এই ক্লাস থেকে শিখেছি কীভাবে ব্যবসাকে সফল করতে হবে। কঠিন সময় শক্ত থেকে ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে হবে। একটা মেয়েকে কীভাবে মাথা উঁচু করে পথ চলতে হবে সেটি শিখিয়েছে উজ্জ্বলা। নিজের গতি নিজেই নির্ধারণ করতে হবে। ভবিষ্যতে আরো ভালো বিউটি আর্টিস্ট হতে চাই। এভাবেই সাহসের সঙ্গে কাজ করে যাবো-এটাই আশা।
বি : দ্র : বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে উজ্জ্বলা লিমিটেড। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক পর্ব চলছে। এই পর্বটি ছিলো ২০তম।