সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
লাল রঙের পোশাক, মাথায় চোঙা টুপি, গালে সাদা ধবধবে দাড়ি, পায়ে বুট জুতা, কোমরে বেল্ট, চোখে গােলাকার চশমা, পিঠে বাহারি সব উপহারে ভর্তি ঝোলা- সান্তা ক্লজের নাম শুনলেই এই অবয়বটি চোখের সামনে ভেসে উঠে।
যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিন, বড়দিন বা ক্রিসমাসের সময়টাতে শিশুরা অপেক্ষা করে থাকে এই বুড়ো দাদুর জন্য। তিনি আসবেন, আর প্রাণ ভরে শিশুদের উপহার দিবেন। যার যেটা চাই, ঠিক সেটা। ক্রিসমাস ট্রি, কেক এসবের মতোই সান্তা ক্লজ ও তার উপহারও বিশেষ আকর্ষণের বিষয় সবার কাছে। ঘুমন্ত শিশুর মাথার পাশে রেখে যান উপহারের ডালা।
তবে কে এই সান্তা ক্লজ? তিনি কি কোনো রূপকথার কাল্পনিক চরিত্র? না কি বাস্তবের কোনো মানুষ? আর তাঁর জন্য কেন এই অপেক্ষা?
জানা যায়, বর্তমান তুরস্কে জন্ম নিয়েছিলেন সেন্ট নিকোলাস নামের একজন ধর্মযাজক। তিনি বেশ ধনী ও দানশীল ছিলেন। এই মানুষটি শিশুদের খুব ভালোবাসতেন। বড়দিনের আগের রাতে, অর্থাৎ ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত অবধি তিনি শিশুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উপহার দিয়ে আসতেন। পরে তাঁকেই সান্তা ক্লজ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।
তবে মজার বিষয় হলো, এখন তার যেই অবয়ব আমরা দেখি, তিনি তেমন পোশাক পরেননি। আজকের সান্তা ক্লজের রঙিন পোশাকের যেই সূচনা সেটি হয় ১৮২৩ সালে; আমেরিকার বিখ্যাত লেখক ক্লেমেন্ট ক্লার্ক মুরের লেখা A visit from St. Nicholas কবিতায়। এরপর থমাস ন্যাসট নামক একজন আমেরিকান কার্টুনিস্ট ১৮৮১ সালে সান্তা ক্লজের একটি ছবি আঁকেন। একজন সন্ত আটটি হরিণটানা গাড়িতে করে মর্তে ঈশ্বরিক বার্তা ও উপহার নিয়ে এসেছে এবং শিশুদের বাড়ি গিয়ে সেগুলো দিচ্ছে- এমনই চিত্র ফুটে উঠে সেখানে। এই ছবি ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠে সবার ভেতর এবং ক্রিসমাসের আগের রাতে শিশুদের মাঝে উপহার দেওয়ার প্রচলনও শুরু হয়ে যায়। আর শিশুরাও বিশ্বাস করে সত্যিই সান্তা ক্লজ এসেছেন তাদের কাছে।
আর এভাবেই বড়দিনের সময় শিশুদের উপহার দেওয়ার সেন্ট নিকোলাসের এই ধারা সারা বিশ্বে প্রচলিত হয়ে উঠে। আর শিশুরাও সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে সান্তার জন্য।
সূত্র : ব্রিটেনিকা.কম