শাশ্বতী মাথিন
করোনার উত্তাপে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশেও এর তেজ চলছে পুরোদমে। এরই মধ্যে ধীরে ধীরে শুরু হচ্ছে ঋতু পরিবর্তন। আবহাওয়ার তারতম্যের এই সময়টায় করোনার পাশাপাশি সাধারণ ভাইরাস জ্বরেরও প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে।
জ্বরটি সাধারণ-কীভাবে বোঝা যাবে, জ্বর হলে করণীয় কী—এসব বিষয়ে জানিয়েছেন হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক সালেহ আহমদ। তিনি বলেন, ‘দেহের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে একে জ্বর বলে। তবে এর নিচে থাকলে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আসলে সাধারণ ভাইরাস জ্বর ও করোনার মধ্যে তাপমাত্রার তেমন কোনো পার্থক্য হয় না। সাধারণ ভাইরাস জ্বরে অনেক তাপমাত্রা থাকে, করোনার ক্ষেত্রে একই হয়। ভাইরাস জ্বর হলে গায়ে ব্যথা, উচ্চ তাপ, দুর্বলতা, খাওয়ায় অরুচি, বমি বমি ভাব, পাতলা পায়খানা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। করোনা হলেও লক্ষণগুলো প্রায় কাছাকাছি হয়। সাধারণ ভাইরাস জ্বরে তেমন জটিলতা থাকে না। তিন-চার দিন পর জ্বর কমে আসে। তবে করোনা জ্বর কমতে সময় লাগতে পারে। করোনাভাইরাসে গলাব্যথা, কাশি ও শ্বাস কষ্ট হতে পারে।’
তবে যেকোনো জ্বর হলে করোনা হয়েছে কি না নিশ্চিত করতে হবে জানিয়ে ডা. সালেহ বলেন, এ ক্ষেত্রে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করা যেতে পারে। পরীক্ষার ফল পজিটিভ হলে করোনা রয়েছে বলে ধরে নিতে হবে। তবে ১০০ জনের মধ্যে ৭০ জনের ক্ষেত্রে সঠিক ফলটি আসে। ৩০ জনের এই টেস্ট করার পরও নেগেটিভ আসতে পারে। এমন হলে বুকের এক্স-রে, বুকের সিটিস্ক্যান, রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে করোনা হয়েছে কি না।’
করোনা না হলে চিকিৎসা কীভাবে করতে হবে জানিয়ে ডা. সালেহ বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে ভাইরাস জ্বরের চিকিৎসা নিতে হবে।চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নাপা খেতে পারেন। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং বিশ্রাম নিতে হবে। রক্ত পরীক্ষা না করে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকুন।’
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে ডা. সালেহ বলেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, অ্যান্টিঅক্মিডেন্ট, ফলমূল, সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ব্যায়াম করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যোগাসন, শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম, ধ্যান করা যেতে পারে। ধূমপান, মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে। দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনা শেখা জরুরি।’
এই মুহূর্তে যে জ্বরই হোক প্রতিটি ক্ষেত্রে সতর্কতা হিসেবে করোনা পরীক্ষা করতে হবে। যেহেতু অনেক সময় করোনা কোনো লক্ষণ ছাড়াই হতে পারে, তাই যেকোনো জ্বর হলেই আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ তাঁর।