Thursday, February 13, 2025
spot_img
Homeঅন্যান্যসাজ-পোশাকে একুশ

সাজ-পোশাকে একুশ

অপরাজিতা অরু

‘ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ দুপুর বেলা অক্ত
বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায়, বরকতেরই রক্ত।’

একুশ এলেই মনে পড়ে ভাষা শহীদের কথা। ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে এমন জাতি পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এই ইতিহাসই মহান একুশে ফেব্রুয়ারিকে স্বীকৃতি এনে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের। এই দিনটি সারা পৃথিবীব্যাপী পালন করা হয় ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানোর মাধ্যমে। বাঙালির এই দিনটি পালনে থাকে নানা আয়োজন।

বাংলা বর্ণমালা, গান, কবিতা অথবা মিছিলের স্লোগানে স্মরণ করা হয় ছিনিয়ে আনা গৌরব, মুখের ভাষা। এইদিন সাজ পোশাকেও ফুটে ওঠে আমার মুখের ভাষা বাংলা, চাইলেই যা কেড়ে নেওয়া যায় না। সেই স্বাধিকারের জানান দিতে প্রতিটা বাঙালি সেজে ওঠে নিজস্ব পোশাকে, রঙে। বাজার গুলোতেও থাকে একুশকে ঘিরে একুশের থিমে সাজ পোশাকের সামগ্রী।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন হাউজ রঙ বাংলাদেশের মিডিয়া এক্সিকিউটিভ নজরে হোসাইন দীপ্ত জানান, এ বছর রঙ বাংলাদেশের একুশের আয়োজনে রয়েছে শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, কামিজ, ওড়না টি-শার্ট, স্কার্ট ছাড়াও ফ্যামিলি সেট।

ছবি : রঙ বাংলাদেশ
ছবি : রঙ বাংলাদেশ

সুতি, হাফসিল্ক, ভয়েল কাপড়ের জমিনে স্কিনপ্রিন্ট, অ্যামব্রয়েডারি ও ব্লকের কাজে নকশা করা পোশাকে একুশ চেতনার নানা সমাহার ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এবার।

গ্রিক মিথলোজরি ফোর এলিমেন্টেস-এর মাটি বা আর্থ, ভাষার অনুষঙ্গ অক্ষর, কলম ও দৈনিক পত্রিকার থিম দিয়ে সাজানো হয়েছে একুশের থিম। মূল রঙ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সাদা কালো ও ছাই রঙ। তিনি আরো জানান, ক্রেতার চাহিদার কথা মাথায় রেখে এ বছর লাল রঙেরও ব্যবহার করা হয়েছে। যেগুলো পোশাকের দাম থাকছে সব ধরনের ক্রেতাদের হাতের নাগালে। রঙ বাঙলাদেশের পোশাক ১ হাজার ৫শ থেকে শুরু করে ৬ হাজার পর্যন্ত দামের রয়েছে। চাহিদা ও সাধ্য অনুযায়ী ক্রেতারা কিনছেন একুশের পোশাক।

দেশীয় ফ্যাশন হাউজ কে ক্র্যাফটের সহকারি জেনারেল ম্যানেজার নাসির আহমেদ বলেন, ‘বাঙালির যেকোনো উৎসবে প্রথম পছন্দ শাড়ি ও পাঞ্জাবি। তাই কে ক্র্যাফটের এবারের একুশের আয়োজনে থাকছে শাড়ি পাঞ্জাবি সহ, সালোয়ার কামিজ, কুর্তি, শার্ট ছাড়াও নানা পোশাক। শিশুদের জন্যে রয়েছে আলাদা পোশাক। মা বাবার সঙ্গে সন্তানের মিল রেখেও রয়েছে ফ্যামিলি সেট।’

ছবি : কে ক্র্যাফট
ছবি : কে ক্র্যাফট

সুতি লিলেন, সিল্ক এসব কাপড়ে বর্ণমালা, শব্দ, ফুলেল ও জ্যামিক নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, ব্লক টাইডাই ও হাতের কাজ ও স্কিন প্রিন্টের মাধ্যমে জানিয়ে নাসির আরও জানান, রঙের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছে, সাদা, কালো ও ধুসর। এসব পোশাক ক্রেতারা কিনতে পারছেন ১ হাজার থেকে শুরু করে ৩ হাজারের মধ্যে।

একুশের সাজ

‘একুশ আমার অহংকার’ এ কথাকে জানান দিতে বাঙালি এদিন সেজে ওঠে সাদা-কালো রঙের। সাজপোশাকে এ যেনো বর্ণমালারই আরেক রুপ। এ যেন জানান দেওয়া একুশের চেতনার সাথে বাঙালির অনুভূতি কত তীব্র। বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি পার্লারের বিউটি এক্সপার্ট শারমিন কচি বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে কালো ও সাদা রঙেরই আধিক্যই দেখা যায়। একুশ এমন একটা অনুভূতি, যা আরো দুইশ বছর পরেও একই রকম থাকবে। বর্ণমালা ও মুখের ভাষার গৌরব এতটাই আমাদের সঙ্গে মিশে রয়েছে, যুগযুগ ধরে একুশ একই রকম থাকবে। তরুণ প্রজন্ম তাদের মনে ও সাজ-পোশাকে ৫২’ কে ধারণ করবে। বার বার ফিরে যেতে চাইবে।

এ দিন সাজে বর্ণমালার বিন্যাস রয়েছে পুরো জমিনে- এমন একটা শাড়ি পরতে পারেন। সঙ্গে একরঙা ব্লাউজ। মেকাপটা নো মেকাপ লুক রাখলে আপনাকে ওইদিনের জন্য পারফেক্ট দেখাবে। চোখে লম্বা করে কাজল টেনে নিন। চুলের লম্বা বিনুনি। অথবা একটা সাধারণ খোপা করতে পারেন। হালকা সাজের সঙ্গে হালকা রঙের একটা লিপস্টিক পরে নিন। নেলপলিশ ব্যবহার করলে শাড়ি অথবা ব্লাউজের সঙ্গে মিলিয়ে পরুন।’

ছবি : কে ক্র্যাফট
ছবি : কে ক্র্যাফট

একুশে সাদা কিংবা কালো যে রঙেরই শাড়ি পরুন না কেনো শাড়িটা এক রঙা হলে, ব্লাউজ পরবেন ফুলেল নকশা অথবা বর্ণমালার বিন্যাসে বিস্তৃত। বিউটি এক্সপার্ট শারমিন কচি আরো বলেন, ‘কুর্তির পরলে চুলটা খোলা রাখুন অথবা দুই বিনুনি করে নিতে পারেন। জ্যামিতিক ফ্লোরাল অথবা দৈনিক পত্রিকার মোটিফে অনেক কুর্তি পেয়ে যাবেন বাজারে। এগুলো জিন্সপ্যান্ট অথবা সালোয়ারের সঙ্গে পরে ফেলতে পারেন। কাজল টেনে নিন। কপালে ছোট একটা টিপ পরতে ভুলবেন না। সালোয়ার কামিজের সঙ্গে হাতে পরে নিতে পারেন অ্যান্টিকের গহনা। চুল বিনুনি করলে অথবা খোলা রাখলে সুন্দর দেখাবে। মোদ্দাকথা, এ দিন মেকআপটা হালকা করলেই ভালো মানাবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments