Thursday, February 13, 2025
spot_img
Homeমন জানালাশীতে বাড়তে পারে বিষণ্ণতা ; প্রতিরোধ করুন এভাবে

শীতে বাড়তে পারে বিষণ্ণতা ; প্রতিরোধ করুন এভাবে

সায়মা আক্তার

শীতের আগমনে সচরাচর আমাদের চোখে ভেসে উঠে সূর্যের নরম আলো, নানা রকমের পিঠা, কুয়াশার ছবি ইত্যাদি। তবে অনেকেই রয়েছেন, যাদের শীত ঋতুর সঙ্গে এত নরম, উষ্ণ ভালোলাগার গল্প নেই। এ সময় অনেকেই তীব্রভাবে বিষণ্ণতায় ভোগেন।

এই শীতকে কেন্দ্র করে বিশেষ কিছু মানসিক লক্ষণ তৈরি হলে মনোবিজ্ঞানীরা তাকে বলছেন সিজনাল এফেক্টিভ ডিপ্রেশন বা উইন্টার ডিপ্রেশন।

শীতকালীন বিষণ্ণতায় ভুগছেন, কীভাবে বুঝবেন ?

বিষণ্ণতার মূল দুটো লক্ষণ রয়েছে। যথা : ১. সবসময় মন খারাপ থাকা, ২. কোনো কাজে আগ্রহ না পাওয়া। ডিএসএম ৫ অনুযায়ী, শীতকালীন বিষণ্ণতার ক্ষেত্রে এগুলো মধ্যে অন্তত যেকোনো একটি থাকতে হবে।

পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলোর মধ্যে যেকোনো ৫টি লক্ষণ থাকবে। যেমন :

  •  মানসিক অবস্থার পরিবর্তন : দিনের বেশির ভাগ সময় বিষণ্ণ মেজাজ, সমস্ত কার্যকলাপের প্রতি আগ্রহ বা আনন্দ লক্ষণীয়ভাবে কমে যাওয়া, অতীত নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করা, অপরাধবোধ, আত্মহত্যার চিন্তা এবং মনোযোগ দিতে না পারা।
  • শারীরিক লক্ষণ : খাবারের রুচি না থাকা, ক্লান্ত লাগা, ঘুম বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া।
  • সিজনাল এফেক্টিভ ডিপ্রেশনের যেসব লক্ষণ রয়েছে, সেগুলো হলো : বিষণ্ণতার উপসর্গগুলো শুধুমাত্র শীতের সময়ই থাকে; অন্য ঋতুতে এগুলো অনুপস্থিত। পাশাপাশি এসব লক্ষণ টানা দুই বছর ধরে দেখা যাচ্ছে।

কেন হয় ?

এই ধরনের লক্ষণ কেন হয় তা নিতে বেশ মতভেদ রয়েছে। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রকাশিত একটি গবেষণায় এই লক্ষণ তৈরি হওয়ার কারণগুলো আলোচনা করা হয়েছে। এখানে শারীরিক কারণ হিসেবে সেরোটোনিন কমে যাওয়া এবং মেলাটোনিন বেড়ে যাওয়ায় শরীরের অভ্যন্তরীণ অবস্থাকে প্রভাবিত করে।

সেই সঙ্গে সূর্যের আলো শরীরের না লাগার কারণে শরীরের ভিটামিন ডি তৈরি হতে পারে না। তবে সেরোটোনিন, মেলাটোনিন, সার্কাডিয়ানরিদম, ভিটামিন ডি ও এসএডি-এর মধ্যে কার্যকরণ সম্পর্ক এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
তবে এই মূল কারণগুলোর মধ্যে সম্পর্ক পাওয়া গেছে। আরো গবেষণা চলছে।

প্রতিরোধ

  • নিয়মিত সূর্যের আলোতে কিছু সময় বসুন।
  • বিষণ্ণতার লক্ষণই হচ্ছে কিছু করার আগ্রহ না হওয়া। তাই নিজেকে মনে করিয়ে দিন যে এই লক্ষণগুলো তৈরি হতে পারে।আপনার ছোট ছোট চেষ্টা আপনাকে বিষণ্ণতা থেকে বের হতে সাহায্য করবে।
  • দিনের কাজগুলোকে ৩টি ভাগে ভাগ করে ফেলুন; ১. দৈনন্দিন কাজ, ২. প্রয়োজনীয় কাজ, ৩. আনন্দদায়ক কাজ।প্রতিটি কাজই অল্প অল্প করে করার চেষ্টা করুন।
  • নিজের মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন। দৈনন্দিন কাজ করার পর কেমন লাগছে তা বোঝার চেষ্টা করুন। নিজের চেষ্টাকে স্বীকৃতি দিন।

সিজনাল এফেক্টিভ ডিপ্রেশন বা উইন্টার ডিপ্রেশন তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকলে আতঙ্কিত না হয়ে, নিজের লক্ষণগুলো বোঝার চেষ্টা করুন এবং সে অনুযায়ী পরিবর্তনের পরিকল্পনা করুন। নিজেকে ভালো রাখুন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন।

লেখক :
অ্যাসিসটেন্ট ক্লিনিকালসাইকোলজিস্ট ও ফাউন্ডার, সাইকোচ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments