ডা. আবু সাঈদ শিমুল
কেবল বড়দের নয়, শিশুরও হতে পারে এসিডিটি। বর্তমানে শিশুরা বাসায় তৈরি খাবার খেতেই চায় না। আবার মা-বাবারাও এখন এত ব্যস্ত থাকে, তাদের জন্য বাসায় ভালো, মজাদার ও আকর্ষণীয় খাবার তৈরি করতে পারে না। তাই শিশুরা বায়না ধরলে অভিভাবকরা নিয়ে যায় ফাস্টফুডের দোকানে।
শিশুর এসিডিটির কারণ
# শিশুর এসিডিটির প্রধান কারণ এইচ পাইলোরি নামক জীবাণু হলেও বর্তমানে ফাস্টফুড খাওয়ার প্রবণতার কারণে দিন দিন এসিডিটির সমস্যা বাড়ছে।
# এ ছাড়া স্কুল থেকে বের হলেই তারা বায়না ধরে ঝালমুড়ি, ফুচকা, চটপটি ইত্যাদি খাওয়ার। এগুলো থেকেও অনেকে এসিডিটিতে ভোগে।
# এসিডিটির জন্য মানসিক চাপও দায়ী। আজকাল শিশুদের কোনো বিনোদন নেই, রয়েছে কেবল বইয়ের বিশাল বোঝা। স্কুলের পড়া, প্রাইভেট, কোচিং আর সব সময় পরীক্ষায় ভালো করার জন্য মা-বাবার তাড়া খেয়ে শিশুদের আত্মবিশ্বাস তো কমছেই, তার ওপর মানসিকভাবে চাপেও থাকছে। এসব কারণেও তাদের এসিডিটি বাড়ছে।
চিকিৎসা
কিছু ওষুধ রয়েছে এসিডিটি কমাবার। এইচ২ ব্লকার, যেমন—রেনিটিডিন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে একই ওষুধ সব বয়সের জন্য প্রযোজ্য নয়, তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বড়দের গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বাচ্চাদের খাওয়াবেন না।
প্রতিকার
এসিডিটি বেশি বেড়ে গেলে তা থেকে পেটের আলসার বা পেপটিক আলসার রোগ হতে পারে। তবে আগে থেকে প্রতিকার জানা থাকলে এই জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
# যেসব শিশুর এসিডিটির সমস্যা রয়েছে, তাদের ফাস্টফুড, ঝালমুড়ি, চটপটি, ফুচকা ইত্যাদি খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করুন।
# অন্যদিকে এইচ পাইলোরি থেকে বাঁচতে বিশুদ্ধ ও পরিষ্কার পানি ও খাবার দিন।
# নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করান।
# শিশুকে রাস্তার পাশের খাবার খাওয়াবেন না।
শিশুদের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় নিয়ম মেনে চললেই রোগটি আর হয় না। এতে দীর্ঘমেয়াদি ওষুধেরও প্রয়োজন হয় না। তাই এই রোগ প্রতিরোধে মা-বাবার সতর্কতা সবচেয়ে জরুরি।
লেখক : শিশু বিশেষজ্ঞ