Wednesday, December 11, 2024
spot_img
Homeজীবনের খুঁটিনাটিলড়াকু যোদ্ধা আফিয়া আমিনা

লড়াকু যোদ্ধা আফিয়া আমিনা

উজ্জ্বলা লিমিটেড, বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। নারীকে যোগ্য করে তুলতে অনলাইন ও অফলাইন ক্লাসের মাধ্যমে বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিংয়ের সব খুঁটিনাটি শেখানো হয় এখানে। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারীর সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক বিশেষ আয়োজনের আজ রইল ৬ষ্ঠ পর্ব। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাশ্বতী মাথিন

পর্ব – ৬
রংপুরের মেয়ে আফিয়া আমিনা। ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যায়। খুব পড়তে চাইতেন। কিন্তু শশুর বাড়ি থেকে বাধা দিতো। বউ কেন বাড়ির বাইরে কাজ করবে, চাকরি করবে এটা মেনে নিতে পারতাে না তারা। বউ শুধু সংসার সামলাবে, ঘরের কাজ আর রান্না করবে। স্বামী পুলিশ হওয়াতে বেশিরভাগ সময় বাড়ির বাইরে থাকতে হতো। হতাশা, বিষণ্ণতায় ভীষণভাবে কুঁকড়ে যেতেন তিনি। এর ভেতরই অনেক কষ্টে এইচ এস সি পাস করেন। ধীরে ধীরে উজ্জ্বলার সন্ধান পেয়ে এখান থেকে বিউটি আর্টিস্ট হিসেবে কারিগরি প্রশিক্ষণ নেন। এখন নিজেই একটি স্যালন খুলেছেন। নিজেই হয়ে উঠেছেন উদ্যোক্তা।

উজ্জ্বলায় যখন প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করি, স্বামীকে প্রথমে বলেছিলাম, ‘আমাকে কিছু করতে দাও। সারাজীবন তো ঘরেই আটকে রাখলে। তুমি যদি না থাকো, তখন তো অথর্ব হয়ে পড়বো। কিছুই করতে পারবো না। এই কাজটি করে অন্তত নিজেকে কিছুটা স্বাবলম্বী হতে দাও।’ এরপর আমার স্বামী রাজি হয়। উজ্জ্বলার অফিস দেখে যায়। এখন আর বাধা দেয় না কাজে। বরং স্যালন করেছি, এটি দেখে সে খুশি- জানান আফিয়া আমিনা।

১৬ বছরের সংসার আমার। দুটো সন্তান রয়েছে। সংসার বিভীষিকার মতো লাগতো। প্রতি রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমাতাম জানিয়ে আফিয়া বলেন, ‘আমার স্বামী এইচএসসি পাস। শশুর বাড়ি থেকে পড়তে দিতে চাইতো না। তারা হয়তো ভাবতো, মেয়ে বেশি শিক্ষিত হয়ে গেলে স্বামীকে মানবে না। নিজের যত্ন কী জিনিস, সেটাই বুঝতাম না সে সময়। কেবল কলুর বলদের মতো সংসার করে গেছি। আমি যে একটি আলাদা সত্তা। আমারও যে রক্ত-মাংসের শরীর রয়েছে। এরও যত্নের প্রয়োজন ভুলেই গিয়েছিলাম। সংসারের কাজ করতে করতে সারা শরীরে কালি লেগে যেতো।’

উজ্জ্বলা আমার চিন্তার শক্তি বাড়িয়েছে। আমি কখনো ভাবিনি আজকের অবস্থায় আসতে পারবো। এখন আমি ১০ জন মানুষের সামনে সাহস নিয়ে কথা বলতে পারি। নিজের অধিকারের জন্য লড়াই করি। কীভাবে মনোবল বাড়ানো যায়, ব্যবসায় সফল হওয়া যায় উজ্জ্বলার কাজ থেকে শিখেছি। আর তাই নিজেকে একজন উজ্জ্বলা মনে করি- জানান তিনি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে আফিয়া বলেন, ‘ আমার মাধ্যমে উজ্জ্বলা রংপুরে শাখা শুরু করুক, এটা খুব চাই। উজ্জ্বলার সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার ইচ্ছাটা খুব তীব্র আমার। পাশাপাশি নিজের স্যালনকে আরো শক্তিশালী করে ১০ জনকে সাহায্য করতে চাই।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments