ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু
রোজায় যেহেতু খাবার ও খাদ্যাভ্যাসের সময়ের পরিবর্তন আসে, তাই বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা যায়। তবে একটু সচেতন হয়ে কিছু বিষয় এড়িয়ে চললে সুস্থভাবে রোজা পালন সম্ভব। রোজার সময় হওয়া কিছু সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা এবং এর প্রতিকার জানানো হলো-
১. কোষ্ঠ্যকাঠিন্য
সারাদিন পানি পানের পরিমাণ কমে যাওয়ায় রমাজান মাসে সকল রোজাদারই কম-বেশি কোষ্ঠ্যকাঠিন্যে ভোগে। আঁশযুক্ত খাবার কম খেলেও হতে পারে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য। এ থেকে রক্ষা পেতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। আঁশযুক্ত খাবার, যেমন- আটা, সিমের বিচি, ছোলা, শাক-সবজি, ফলমূল বেশি করে খান। চিনি, মিষ্টি ও ময়দা খাদ্যতালিকায় কম রাখুন। এসবের পরেও এই সমস্যা দূর না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে লেক্সিটিভ জাতীয় ওষুধ খেতে হবে।
২. বদহজম ও বায়ু
খাবারের পরিমাণ বেশি হলে, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার খেলে রোজাদারদের অনেক সময় পেট ফেঁপে যায়, পেটে শব্দ হয়, পায়ু পথে ঘন ঘন বায়ু বের হয়। খাবার ঠিকমতো হজম না হলে এই রকম হতে পারে। আবার ডিম, ছোলা পেটে গ্যাস উৎপন্ন করে। তাই এ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে চাইলে এসব খাবার এড়িয়ে চলুন। সেই সঙ্গে প্রচুর পানি ও ফলের জুস পান করুন।
৩.মাথাব্যথা
ধূমপায়ী ও কফি পানকারীরা রমজান মাসে এগুলো গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। রমজানে ঘুমের পরিমাণ কম হয়। আবার ক্ষুধা ও পানিশুন্যতাও থাকে। এ কারণে দিনের শেষে-ইফতারের আগে, প্রচণ্ড মাথাব্যথা হতে পারে। সেই সঙ্গে থাকতে পারে বমি বমি ভাব। এ সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে রোজা শুরুর সপ্তাহখানেক আগে থেকেই কফি- ধূমপান ত্যাগের অভ্যাস করতে হবে।
শেষ রাতে পরিমিত ও সুষম সেহেরি খান। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। রোজা রেখে রোদে বেশি ঘোরাঘুরি করবেন না। বাইরে বের হলে ছাতা বা টুপি ব্যবহার করুন।
৪. দুবর্লতা
সাধারণত দিনের শেষে, ইফতারের আগে রক্তচাপ কমে যাওয়ায় অনেকেই অতিরিক্ত দুবর্লতায় ভোগে। এটি প্রতিরোধে প্রচুর লবণ-পানি বা শরবত পান করুন। সেহেরি খেতে অবশ্যই ভুলবেন না।
৫. মানসিক অবসাদ
সারাদিন পানি ও খাবার না খাওয়া, ঘুমের পরিমাণ কম হওয়ার জন্য আপনি মানসিক অবসাদে ভুগতে পারেন। এ থেকে রক্ষা পেতে দুচিন্তা ও রাগ নিয়ন্ত্রণ জরুরি। পাশাপাশি ত্যাগ করতে হবে ধূমপান।
৬. মাংসপেশির টান
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম লবণের পরিমাণ কমে গেলে মাংসপেশিতে টান পড়তে পারে। এটি প্রতিরোধে শাকসবজি, ফলমূল, দুধ, দুধজাত খাবার ও খেজুর খাদ্যতালিকায় রাখুন।
লেখক
রেজিস্ট্রার, ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি বিভাগ
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসাইন্স