সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
করোনার সময়টা খুব কঠিন ছিল সাবিহা আফরিনের। সবিহার স্বামী গ্রাফিক্স ডিজাইনার। দুজনেই ঢাকায় থাকতেন। তবে সে সময় অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, স্বামীর কাজ কমে যায়। অর্থনৈতিক অবস্থাটা এতোই সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে যে চুয়াডাঙায় চলে যেতে হয়।
তখন থেকেই ভাবছিলেন, অর্থনৈতিক স্বচ্ছ্বলতা কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায় ? এই সময় অনলাইন ও অফলাইনের মাধ্যমে পোশাকের ব্যবসা শুরু করেন সাবিহা। বর্তমানে তার শো রুম জান্নাত-ই কালেকশন থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো আয় হয়। পাশাপাশি ২০২৩ সালে জয়িতা ফাউন্ডেশন ও উজ্জ্বলার যৌথ উদ্যোগে করা ১০দিনব্যাপী একটি বিউটিফিকেশন কোর্স অংশ নেন তিনি। শো রুমের পাশাপাশি স্কিন কেয়ার সেকশনও চালাচ্ছেন। এখান থেকেও ভালোই আয় হচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে এখন পরিবারকে সহযোগিতা তো করছেনই, হয়ে উঠেছেন সফল ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা।
“পোশাকের ব্যবসা শুরু করার সময় খুব কাছের আত্মীয়দের কাছ থেকে অনেক তীক্ত কথা শুনেছি। একজন আত্মীয় বলেছিলেন, ‘বাসায় বাসায় এখন কাপড় বেঁচতে আসছো?’ তখন আমি উত্তরে বলেছিলাম, ‘আমি একদিন শো রুম করবো এবং একদিন আপনি সেখানে আসবেন। তখন আমি আপনাকে সবচেয়ে সেরা পন্যটি দেবো।’ এখন তা-ই হয়েছে। তবে সে সময় বিষয়গুলো খুব আহত করেছিল। তখন আমার স্বামী মানসিকভাবে সহযোগিতা করে,” বলছিলেন সাবিহা আফরিন।
উজ্জ্বলা ও জয়িতা ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে করা এই কোর্সটির কথা আমি জেনেছিলাম ফেসবুকের মাধ্যমে। ২০২৩ সালে মে মাসের ২৭ তারিখ থেকে জুন মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত এই কোর্সটি হয়। বহুদিন ধরে ভাবছিলাম, একটি ব্যবসা তো রয়েছে, তবে এর পাশাপাশি কী করা যায়, যার স্থায়িত্ব থাকবে। এই ভাবনা থেকেই উজ্জ্বলার কোর্সটি করা। এটি করে অনেক উপকৃত হয়েছি।
“কোর্সটি শুরু করার সময় খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম, পারবো কি না, বা কতটুকু পারবো। সবকিছু আমার জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে কোর্স শেষে মনে হয়েছে নিজেকে নতুন করে জানতে পেরেছি। কোর্সের সময় উজ্জ্বলার সহ প্রতিষ্ঠাতা আফরোজা পারভীন ম্যামের কথাগুলো খুব ভালো লাগে। তিনি বলেছিলেন, ‘নিজেকে পরিবর্তন করতে পারলে, আশপাশের বদলও আশা করতে পারবে। প্রথমে তোমার নিজেকে বদলাতে হবে।’ তখন আমার মনে হয়েছিল আমি পারবো। কথাগুলো আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করেছিল”, বলেন সাবিহা।
উজ্জ্বলা থেকে কোর্স করে বর্তমানে ত্বক পরিচর্যার ওপর কাজ করছেন সাবিহা। ‘এই ধরনের কোর্স করলে নারীরা ঘরে থেকে অনেক কাজ করতে পারে। সংসারের হাল ধরার পাশাপাশি আয় উপার্জনও হয়’, মন্তব্য করেন সাবিহা।
ভবিষ্যতে ইচ্ছে রয়েছে চুয়াডাঙায় আলাদা করে একটি স্কিন কেয়ার সেন্টার দেওয়ার জানিয়ে সাবিহা বলেন, ‘ আমি নারীদের জন্য কাজ করতে চাই। এ বিষয়ে আরো অভিজ্ঞ হয়ে অন্যান্য নারীদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। আমরা অনেক সময় অন্যের কথা শুনে থেমে যাই। এটা করা যাবে না। নারীকে এগিয়ে যেতে হবে।’
বি : দ্র : বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে উজ্জ্বলা লিমিটেড। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক পর্ব চলছে। এই পর্বটি ছিল ৯৩তম। উজ্জ্বলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন :
https://www.facebook.com/UjjwalaBD
https://www.instagram.com/UjjwalaBD/
ফোন : ০১৩২৪৭৩৪১৫৭