সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
একদিন মা ঘুমাচ্ছিল মেয়েটির। ঘুমন্ত মা-কে সাজাতে শুরু করে সে। মা -তো ঘুম থেকে উঠে মেয়ের কাণ্ড দেখে ভীষণ অবাক ! একি করেছে মেয়ে। তবে তখন থেকেই বাড়ির সবাই বুঝে যায়, এই মেয়ের সাজগোজের প্রতি ভীষণ আগ্রহ।
একবার ভাবী বললো, তুমি তো ভালোই সাজো। তাহলে এটা ভালোভাবে শিখে ফেলো। এরপর ভাবীর আগ্রহে উজ্জ্বলায় এসে ভর্তি হওয়া। সবগুলো কোর্স শেষ করে বর্তমানে সে এখন নিজেই উজ্জ্বলার চট্টগ্রাম শাখায় ব্র্যাঞ্চ ইনচার্জ হিসেবে কাজ করছে। যার কথা বলছি, সে উম্মে সালমা নূরী। চট্টগ্রামের এই মেয়ের বিউটি আর্টিস্ট হিসেবে গড়ে উঠার গল্পই রইল পাঠকদের জন্য।
বিউটিফিকেশনের বিশাল ইন্ডাসট্রি রয়েছে জানতামই না
বিউটিফিকেশনের যে একটি বিশাল ইন্ডাসট্রি রয়েছে, সেটা তেমনভাবে জানতাম না। এটি আমার পছন্দের জায়গা ছিল। কখনো ভাবিনি একে পেশা হিসেবে নেবো। আমি ইংরেজিতে অনার্স ও মাস্টার্স করেছি। ভেবেছিলাম সাবজেক্ট অনুযায়ী কোনো পেশা বেছে নেবো। তবে উজ্জ্বলায় কোর্স করার পর ভীষণভাবে বুঝতে পারলাম বিউটিফিকেশনকেও বেশ ভালোভাবে পেশা হিসেবে নেওয়া যায়। আর একজন ভালো বিউটি আর্টিস্টের কদর সব জায়গায়। কেবল বিউটি আর্টিস্ট হয়ে স্যালন দেওয়াই নয়, এর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য কাজগুলোও করা যায়। যেমন, আমি এখন উজ্জ্বলার চট্টগ্রামের ব্র্যাঞ্চ ইঞ্চার্জ হিসেবে কাজ করছি । পাশাপাশি ফ্রি ল্যান্সিংও করছি। আর ফ্রি ল্যান্সিং করে যা আয় হয়, তাতে আমি সন্তুষ্ট।

আত্মবিশ্বাসী হয়েছি উজ্জ্বলার কারণে
উজ্জ্বলায় কোর্স শুরু করেছিলাম, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে। তখন ব্র্যাকের মাধ্যমে আয়োজিত চারদিনের একটি বিউটিফিকেশনের ওপর দক্ষতা উন্নয়নের কোর্স করি। এরপর উজ্জ্বলায় ভর্তি হয়ে যাই। আর সবগুলো কোর্স ধীরে ধীরে করতে থাকি। উজ্জ্বলা আমার আত্মবিশ্বাসকে কয়েকগুণে বাড়িয়েছে।
আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, তবে মাঝে মাঝে ভয় লাগতো। উজ্জ্বলায় আসার পর, এখানে ক্লাস করার পর দৃষ্টিভঙ্গী অনেকটাই পাল্টেছে। নিজের ওপর কীভাবে নির্ভরশীল হওয়া যায়, সেটি শিখেছি।
ভাবীর প্রতি কৃতজ্ঞ
শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি এসএসসি পরীক্ষা সময়মতো সহপাঠিদের সঙ্গে দিতে পারিনি। পরে যখন পরীক্ষা দেওয়ার সময় হলো, ছোটদের সঙ্গে শিখতে লজ্জা লাগতো। তখন এক বছর বিরতি দিয়েছিলাম। এটা আমাকে অনেকখানি পিছিয়ে দেয়। ২০১৩ সাল থেকে আমি আবার লেখাপড়া শুরু করি। লেখাপড়ার পেছনে আমার ভাবীর অনেক অবদান রয়েছে। সবাই তাকে বলেছিল, ‘এই মেয়ের তো আর লেখাপড়া হবে না। বিয়ে দিয়ে দাও।’ তবে তিনি রাজি হননি। আমাকে লেখাপড়া করিয়েছিলেন। আর আমার ভাবীর বিশ্বাসটি আমি ভাঙতে দিইনি। লেখাপড়া শেষ করেছি। এখনো তাঁর উৎসাহতেই বিউটিফিকেশনের কাজ করছি।

চুল নিয়ে কাজ করতে চাই
আমি চুল নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। বিশেষ করে চুল কালারের বিষয়টিতে আগ্রহ রয়েছে। আমি ভবিষ্যতে চুলের ওপর বিশেষজ্ঞ হয়ে এগিয়ে যেতে চাই।
বি : দ্র : বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে উজ্জ্বলা লিমিটেড। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক পর্ব চলছে। এই পর্বটি ছিলো ৬৫তম। উজ্জ্বলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন :
https://www.facebook.com/UjjwalaBD
https://www.instagram.com/UjjwalaBD/
ফোন : ০১৩২৪৭৩৪১৫৭