ফারজানা ফাতেমা (রুমী)
‘ক্লান্তি’ এমন একটি শব্দ, যা শক্তির অভাবের সামগ্রিক অনুভূতি। সারাদিনের কাজের শেষে আমরা ক্লান্তি অনুভব করি। আর সেটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে এই ক্লান্তি ও ফ্যাটিগ (Fatigue) বা অবসাদ এক বিষয় নয়। ফ্যাটিগ বা দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি হলো- শক্তির অভাবের অনুভূতি, যা বিশ্রাম করলে, ঘুমালে, পুষ্টিকর খাবার খেলেও দূর হয় না।
ক্লান্তি কখন সমস্যা
ক্লান্তি একজন ব্যক্তিকে স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিনের কাজ করতে বাধা দেয়। এটি এক মাস বা তার কম থেকে ছয় মাস বা এর বেশি সময় স্থায়ী হতে পারে। যখন প্রায় ১৫ দিন বা ২ সপ্তাহ এরকম ক্লান্তির কারণে স্বাভাবিক জীবনের কাজ ব্যাহত হয়, তখন অবশ্যই এটি একটি সমস্যা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ক্লান্তি উপসর্গ, তবে রোগ নয়
মনে রাখতে হবে, এটি বিভিন্ন রোগের উপসর্গ এবং এটি রোগ নয়। প্রায়শই, ক্লান্তির উপসর্গটি ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং ব্যক্তি তা বুঝতে পারেন আগে কাজ করার ক্ষমতার সঙ্গে তুলনা করে। অনেকে ভাবেন বয়স বাড়ছে তাই এমন হচ্ছে। এর মাত্রা হালকা থেকে তীব্র হতে পারে।
উদ্বেগ ও ক্লান্তি
উদ্বেগের কারণে হতে পারে ক্লান্তি। এই ধরনের ক্লান্তি উদ্বেগ, প্যানিক ডিসঅর্ডার, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপের সঙ্গে যুক্ত। দীর্ঘস্থায়ী দুশ্চিন্তা, খারাপ কিছুর আশংকা শরীর ও মনে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। বাড়ি কিংবা কর্মক্ষেত্রে প্রতিদিন সকল কাজ সূক্ষ্মভারে যথাযথ সময়ে শেষ করতে হবে, এমন অতিরিক্ত ব্যস্ততা, বিশ্রাম নেওয়া না হলে মানসিক এবং শারীরিক ক্লান্তি শুরু হতে পারে।
বিষণ্ণতা ও ক্লান্তি
একজন ব্যক্তি দীর্ঘ সময়ের জন্য কষ্টে থাকে, আশাহীন বোধ করে তখন তার মধ্যে বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ে। যারা বিষণ্নতায় ভোগে তাদের প্রায়ই ঘুমের সমস্যা হয়। তারা খুব বেশি ঘুমাতে পারে বা একেবারেই ঘুমাতে পারে না। এ থেকে ক্লান্তি বাড়ে।
শারীরিক কোনো অসুস্থতা ছাড়াই ক্লান্তিজনিত সমস্যায় ভোগার ক্ষেত্রে কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিদের তিনটি প্রাথমিক অভিযোগ থাকে। তবে আগে নিশ্চিত হতে হবে যে কোনো শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে কি না।
১. অনুপ্রেরণার অভাব বা কাজ শুরু করতে সমস্যা, শরীর ভারী অনুভব করা
২. কাজ শুরু করার অল্প সময়েই সহজে ক্লান্ত হওয়া
৩. একাগ্রতা ও মনোযোগ নিয়ে কোনো কাজ শুরু বা সম্পন্ন করতে না পারা
লেখক : মনোবিজ্ঞানী