সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
উজ্জ্বলা লিমিটেড, বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। উদ্যোক্তাদের যোগ্য করে তুলতে অনলাইন ও অফলাইন ক্লাসের মাধ্যমে বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিংয়ের সব খুঁটিনাটি শেখানো হয় এখানে। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক বিশেষ আয়োজনের আজ রইল ১১তম পর্ব।
বিউটি ইন্ডাসট্রিতে একজন মেয়ে যত সহজে কাজ করতে পারে, একজন ছেলের কাজ করা বা প্রবেশ করাটা হয় ততটাই কঠিন। তারা যেমন শেখার সুযোগ কম পায়, তেমনি বেশিরভাগ ক্লাইন্ট তাদের কাছে সাজতেও অনীহা প্রকাশ করে। তবে এসব প্রতিবন্ধকতা পার হয়ে যারা সামনে এগিয়ে এসেছেন এবং বিউটি ইন্ডাসট্রিতে স্বনামে খ্যাত হয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন খোকন বড়ুুয়া। মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে পুরষ্কৃত হয়েছেন ২০১৯ সালে। বিউটি এক্সপো ইন্ডিয়া টেলেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
‘পথটা মসৃণ ছিলো না। ২০০৯ সালে বিউটি আর্টিস্ট শাহনাজ পারভীন ভারত থেকে এসেছিলেন। তার কাছে কিছুদিন কাজ শিখি। পরে আত্মীয়-স্বজনদের সাজাতাম। বাসায় টুকটাক কাজ হতো। এক সময় দেখা গেলো ছেলে হিসেবে আমার কাছে অনেকে আসতে চাইতো না বা কাজ করতে চাইতো না। এক সময় কাজটাকে বন্ধ করে দিতে শুরু করি। একটি চাকরি করতাম চট্টগ্রাম জজ কোর্টে। আমার একজন দাদা ছিলেন, অ্যাডভোকেট পিন্টু দাস। তিনি আমাকে উৎসাহ দিলেন মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজটি করার জন্য। এটিকে বাদ না দেওয়ার অনুরোধ করলেন। তখন আবার কাজ করতে থাকি। কাজ করতে গিয়ে মনে হলো আমার আরো প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রয়োজন। আরো দক্ষ হতে হবে বিষয়টিতে। এরপর প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য ছোট-বড় অনেক পার্লারে নক করি। কিন্তু কোথাও শেখার সুযোগ পাচ্ছিলাম না। তখন উজ্জ্বলার সন্ধান পেলাম। ছেলে হওয়ার পরও উজ্জ্বলা আমাকে সাদরে গ্রহণ করে,’ বলছিলেন খোকন বড়ুয়া।
একটা সময় ভারত থেকে অ্যাওয়ার্ড শোতে প্রতিযোগী হিসেবে যাওয়ার সুযোগ আসে। অনুষ্ঠানটিতে বিচারক হিসেবে ছিলেন বলিউডের মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা। ছিলেন আমিসা পাটেল, উর্মিলা মাতন্ডকর, দীপিকা পাড়ুকন প্রমুখ। একটু ভীত ছিলাম- জানিয়ে খোকন বড়ুয়া বলেন, ‘তখন উজ্জ্বলার সহপ্রতিষ্ঠাতা আফরোজা পারভীন ম্যাডামের সঙ্গে দেখা করি। আপুকে মডেলের ছবি দেখিয়েছিলাম। আপু পরামর্শ দিলেন, তুমি যেহেতু দীপিকা পাড়ুকনের প্রোগরামে যাচ্ছো, তাহলে তার ব্রাইডাল লুকটা অনুসরণ করবে। নুড একটা মেকআপ করবে। কারণ, দিল্লীর সবাই সেটি অনুসরণ করে। প্রতিযোগিতার দিন মডেলকে মেকআপটি করাতে আমার সময় লেগেছিলো ৩৫ মিনিট।’
উজ্জ্বলা পুরুষ হিসেবে বিউটি ইন্ডাসট্রিতে শক্তভাবে দাঁড় হতে শিখিয়েছে খোকন বড়ুয়াকে। এক সময় হাজাটার দরজায় কড়া নেড়েছিলেন তিনি, কেবল ভালোভাবে কাজ শেখার জন্য। তবে এখন সেই অবস্থা বদলেছে। তার কাছে এখন কাজ শিখতে আগ্রহী হয় অনেকে। ‘এসব কারণেই নিজেকে একজন উজ্জ্বলা মনে করি। আর ভবিষ্যতে আরো ভালো কাজ করতে চাই,’ বলেন তিনি।