সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
পার্লারের কাজ করা নিয়ে আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে বেশ কটু কথা শুনতে হতো বরিশালের মেয়ে হামিদা আফরিন তন্নির। মাঝে মাঝে বিষয়টি ভীষণ মন খারাপ করিয়ে দিত। তবে এই নেতিবাচক কথাগুলো তাকে পিছিয়ে দিতে পারেনি। সেগুলোকে শক্তি হিসেবে ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে ও যাচ্ছে সে।
বরিশালে ১০ দিনব্যাপী বাংলাদেশ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ‘জয়িতা ফাউন্ডেশন’ ও বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং সেক্টরের পথ প্রদর্শক উজ্জ্বলার যৌথ উদ্যোগে করা একটি প্রশিক্ষণ করে বর্তমানে বাড়িতেই একটি স্যালন খুলেছে। এখান থেকে প্রতি মাসে আয় হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। আর বিয়ের মৌসুমে কখনো কখনো এই আয় ৪০ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়।
নিজের ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপান্তর করতে কীভাবে কাজ করছে হামিদা আফরিন তন্নি সেই গল্পই রইল পাঠকদের জন্য।
নিজেকে ও অন্যকে সাজাতে পছন্দ করতাম
বেশিরভাগ নারীই বোধ হয় চায়, নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপন করতে। আমিও চাইতাম নিজেকে সুন্দর করে সাজাতে, উপস্থাপন করতে। একটা সময় মনে হলো, অন্যকেও সাজাই। অনেককেই একদম বিনা পয়সায় সাজিয়েছি। মানুষ আমার কাজ পছন্দ করতো। এক পর্যায়ে মনে হলো, মেকআপের ওপর প্রশিক্ষণ নিই। এতে আমি আরো দক্ষ হয়ে উঠবো। এই ভাবনা থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়ে এই পেশায় আসার ইচ্ছা।
জানতামই না মেকআপে বেসিক বলে কিছু হয়
আমি প্রায়ই উজ্জ্বলার সহ প্রতিষ্ঠাতা আফরোজা পারভীন ম্যামের বিউটি টিউটোরিয়ালগুলো দেখলাম। পত্র-পত্রিকায় তাকে নিয়ে অনেক লেখা ছাপা হতো, তিনি বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য নারী- এই বিষয়টি আমাকে তাঁর কাছে শেখার বিষয়টিতে খুব আগ্রহী করে তোলে।
এরপর বরিশালে একটি ব্রাইডাল মেকআপের ক্লাসে আমি
প্রথম আফরোজা পারভীন ম্যাম ও বিউটি আর্টিস্ট সোনিয়া খান ম্যামকে দেখতে পাই। তাদের মাধ্যমে উজ্জ্বলাকে আরো ভালোভাবে জানি। তখন আমি জানতাম না মেকআপের বেসিক বলে কিছু থাকে। তারাই বিষয়টি শিখিয়েছিলেন। এরপর জয়িতা ফাউন্ডেশন ও উজ্জ্বলার যৌথ উদ্যোগে হওয়া কোর্সটি করি। প্রথম কোর্স করার পর ফেসবুকে বিউটিবেজ একটি ছোট পেইজ খুলি। তবে পরের ১০ দিনের কোর্সটি থেকে অনেক শিখি এবং স্যালন খোলার সাহস পাই।
উজ্জ্বলা যেন জাদুর স্পর্শ
একজন নারীকে স্বাবলম্বী করতে ম্যাজিকেল টাচ বা জাদুর স্পর্শ হলো উজ্জ্বলা। আর এর সঙ্গে জয়িতা ফাউন্ডেশন যুক্ত হয়ে আমাদের আরো এগিয়ে নিয়ে গেল। উজ্জ্বলা তাদের শিক্ষার্থীদের হাত ধরে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করে।
চাকরির বাজার প্রতিযোগিতামূলক। ব্যবসা করলে ক্ষতি কী?
আমার মনে হয়, চাকরির বাজার প্রতিযোগিতামূলক। এখানে নিজেই একটি মেয়ে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারলে এবং অন্যকেও সহযোগিতা করতে পারলে, খারাপ কী?
বর্তমানে আমি বরিশাল বিএম কলেজে একাউন্টিং বিভাগে ফোর্থ ইয়ার পড়ছি। যেহেতু ব্যাবসা বিষয় নিয়ে পড়ছি এবং বিউটিফিকেশন প্রশিক্ষণ নিয়ে স্যালন দিয়েছে। তাই ভবিষ্যতে দুটো বিদ্যাকেই কাজে লাগাতে চাই। স্যালনটিকে আরো বড় করাই এখন আমার স্বপ্ন।
বি : দ্র : বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে উজ্জ্বলা লিমিটেড। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক পর্ব চলছে। এই পর্বটি ছিলো ৭০তম। উজ্জ্বলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন :
https://www.facebook.com/UjjwalaBD
https://www.instagram.com/UjjwalaBD/
ফোন : ০১৩২৪৭৩৪১৫৭