ডা. আবু সাঈদ শিমূল
বসন্ত হলো রঙের ছটায় আকুল হওয়ার ঋতু। ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা হওয়ার কিংবা উৎসবে-উচ্ছ্বাসে উদ্বেলিত হওয়ারও সময় এটাই। তবে ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে রোগ-জীবাণু কিন্তু বসে থাকে না। সুযোগ পেলে এরাও আপনার শরীরে রোগ বাঁধিয়ে উৎসবে মেতে উঠবে। তাই আগে থেকে সাবধান হওয়াই ভালো, যেন রোগ-জীবাণু আক্রমণ করতে না পারে। আসুন, জেনে নেওয়া যাক বসন্তে ভালো থাকার উপায়।
পরিষ্কার থাকুন
ঠান্ডা যেহেতু এখন কম, তাই বসন্তে ভালো থাকার প্রধান শর্ত হলো নিয়মিত গোসল করা। এতে ধুলো-ময়লা কমবে। অ্যালার্জি, ভাইরাসজনিত রোগ সবই কিন্তু কমে যায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে।
কাঁথা সঙ্গে রাখুন
বসন্ত এলেও শীত কিন্তু একদম চলে যায়নি, তাই শীতের লেপ/কম্বল উঠিয়ে ফেললেও কাঁথাটা সঙ্গে রাখুন। শিশুরা অনেক ঘামে, তাই তাদের জন্য ফ্যান ছেড়ে রাখতে হয়। তবে আপাতত রাতে এসি চালু না রাখাই ভালো।
শ্বাসকষ্ট যেন না বাড়ে
বসন্তে ফুলের রেণু ও ধুলাবালি থেকে অনেকের হাঁপানি বেড়ে যেতে পারে। শ্বাস টান বাড়লে সালবিউটাবল ইনহেলার নিতে হবে। তেমন গুরুতর না হলে মন্টিলুকাস ট্যাবলেট (১০ মিলিগ্রাম) দিনে একটি করে সেবন করলে তা-ও প্রতিরোধী হিসেবে কাজ করে। তবে ওষুধ খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই।
মাস্ক পরুন
বসন্তে নানা বর্ণ ও গন্ধের ফুল ফোটে। এই ফুলের একটা বড় অংশের পরাগায়ণ ঘটে বাতাসের মাধ্যমে। তাই বসন্তে পুষ্পরেণু অ্যালার্জি সাধারণ ঘটনা। গাছ থেকে অনেক দূরে অবস্থান করলেও রোগীরা আক্রান্ত হতে পারেন। শুষ্ক হাওয়ায় ধুলাবালি থেকেও অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো হাঁচি, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া, চোখ চুলকানো ও চোখ লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এ সমস্যা সমাধানে মুখে মাস্ক বা রুমাল ব্যবহার করতে পারেন। নাক দিয়ে বেশি পানি পড়লে ফেক্সোফেনাডিন জাতীয় ওষুধ ১২০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট দিনে একটা করে পাঁচ থেকে সাত দিন খেতে পারেন।
জলবসন্ত থেকে সতর্কতা
এ সময় অনেকের জলবসন্ত বা চিকেন পক্স হয়। জলবসন্ত খুব ছোঁয়াচে, বিশেষ করে যার কোনো দিন এ রোগ হয়নি, তার ক্ষেত্রে। সরাসরি সংস্পর্শ এবং রোগীর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে জলবসন্ত ছড়ায়। রোগীর ব্যবহার করা কাপড় গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। চুলকানি হলে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেতে হবে। গায়ে হাত দেওয়া যাবে না। এই রোগ প্রতিরোধে এক বছরের বেশি বয়সি যে কেউ টিকা নিতে পারেন।
লেখক : রেজিস্ট্রার,ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।