ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ
গরমে অনেকেই ফুড পয়জনিংয়ে আক্রান্ত হয়। কোনো খাবার খেয়ে বার বার বমি, পাতলা পায়খানা, জ্বর, পেট ব্যথা ইত্যাদি হলে তাকে ‘ফুড পয়জনিং’ বলে। অস্বাস্থ্যকর, জীবাণুযুক্ত খাবার খেলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া ময়লাযুক্ত থালা বাসনে খাবার খেলেও ফুড পয়জনিং হয়।
যেসব সমস্যা হয়
সময়মতো এর চিকিৎসা করা না হলে এ থেকে পানিশূন্যতা অথবা রক্তস্বল্পতা হতে পারে। এতে রোগীর কিডনি অকেজো হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া শরীরের যেকোনো অঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময় এটি মৃত্যুর কারণ হয়েও দাঁড়ায়।

কেন হয়?
১. সাধারণত বাসি খাবার, পচা খাবার, অস্বাস্থ্যকর, জীবাণুযুক্ত খাবার, অনেকক্ষণ গরমে থাকার ফলে নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার খেলে ফুড পয়জনিং হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
২. খাবারের জন্য ব্যবহৃত থালা বাটি ভালোভাবে না ধোয়ার কারণে এ সমস্যা হতে পারে।
৩. খাবার আগে হাত ভালো করে না ধুলেও এই সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৪. গরমের কারণে দেহের ভেতরে পানির চাহিদা বেড়ে যায়। এ জন্য হয়তো অনেকেই রাস্তার তৈরি শরবত খেয়ে ফেলেন। এ থেকে ফুড পয়জনিং হতে পারে। কেননা রাস্তার খাবার বেশির ভাগ সময় পরিষ্কার থাকে না।
৫. এ ছাড়া গরমে নিজের ঘরের খাবারও অনেক্ষণ ধরে বাইরে রাখা হলে সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ থেকেও ফুড পয়জনিং হতে পারে।

প্রতিরোধের উপায়
১. রাস্তার খোলা খাবার খাবেন না।
২. পানি ফুটিয়ে খেতে হবে।
৩. বাসন কোসন ভালোভাবে ধুতে হবে।
৪. খাওয়ার আগে হাত ভালো করে ধুতে হবে।
৫. দুধ, কলা, ফলমূল বেশি দিন পুরনো হয়ে গেলে খাবেন না।
৬. গরমের সময় হোটেলের খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
৭. কেননা অনেক হোটেলেই স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়টি খেয়াল রাখা হয় না।
৮. যতটা সম্ভব টাটকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। কয়েকদিন ধরে ফ্রিজে রাখা রয়েছে এমন খাবার খাওয়াও ঠিক না।
৯. খাবার ঠিকমতো ঢেকে রাখুন, নয়তো বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ খাবারে বসে জীবাণু ছড়াতে পারে।
চিকিৎসা
গরমের এই সময়ে ডাবের পানি, স্যালাইন, শরবত ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। অবস্থা বেশি খারাপ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রোগী মুখে না খেতে পারলে এবং অবস্থা খুব জটিল হলে চিকিৎসকরা শিরার মাধ্যমে স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা করে থাকেন। কিছু কিছু রোগীর বেলায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফুড পয়জনিং রোধে নিজের সচেতনাতাই সবচেয়ে বেশি জরুরি।
লেখক
অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ
সাবেক ডিন, মেডিসিন বিভাগ, বিএসএমএমইউ।
বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক।