ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু
আমাদের আশেপাশে দেখা যায় অনেকের মাথা কাঁপতে থাকে। এটা অনেকেই আমলে নেয় না। আবার অন্যরা বুঝলেও প্রথমে আক্রান্ত ব্যক্তি বুঝতে পারেন না। এর সাথে অনেকের দু’হাত কাঁপতে থাকে। সাধারণত কোন কাজ করতে গেলে হাত কাঁপে। শুরুতে কেউ পাত্তাইই দেয় না। কিন্তু ধীরে ধীরে এটা বাড়ে। তবে লক্ষণ বাড়ার হার বেশ শ্লথ।
এই ব্যক্তিদের গলার স্বর কিন্তু পরিবর্তন হয়ে যায়। অনেকে এটাকে পারকিনসন্স রোগ বলে ভুল করে। অনেকে মনে করে হাত পা কাঁপলেই বুঝি পারকিনসন্স রোগ। আসলে তা নয়। আমি যে রোগটি নিয়ে আলোচনা করছি সেটি হলো বিনাইন এসেন্সিয়াল ট্রেমর। এর সঙ্গে পারকিনসন্স রোগের অনেক পার্থক্য রয়েছে। মূল যে পার্থক্য তা হলো পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির হাত -পা সাধারণত একপাশে কাঁপে, কোনো কাজ করতে গেলে কাঁপুনি থেমে যায়। বিশ্রামে কাঁপুনি বাড়ে। আর পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মাথায় কখনো কাঁপুনি থাকে না।
দুটোর চিকিৎসা পদ্ধতিতেও বিস্তর পার্থক্য দেখা যায়। বিনাইন এসেনশিয়াল ট্রেমর-এ আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারে অন্য কেউ এ রোগে আক্রান্ত থাকতে পারে।
বিনাইন এসেনশিয়াল ট্রেমরে আক্রান্ত ব্যক্তির পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হয় না বললেই চলে। সাধারণত নিউরোলজিস্টরা দেখেই রোগটি নির্ণয় করে চিকিৎসক দেন। বিটা ব্লকার যেমন প্রপানোলল ওষুধ সেবন করে এ রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। ওষুধের মাত্রা ঠিক করতে কিছুটা সময় লাগে। তাই নিয়মিত আপনাকে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে হবে। ওষুধের ডোজ ঠিক করার পর ঘন ঘন চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
রোগটির চিকিৎসা না করালে অনেকেই পড়ে যেতে পারেন, রাস্তায় চলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। তাই দেরি না করে নিউরোলজিস্টকে দেখান।
লেখক
রেজিস্ট্রার, ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি বিভাগ
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসাইন্স