ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বল
প্রস্রাবে সংক্রমণ বা ইউরিন ইনফেকশন খুব সাধারণ একটি সমস্যা। পুরুষের তুলনায় নারীরা এই রোগে বেশি ভোগে। তবে বয়স্ক পুরুষও এই রোগে ভুগে থাকে। খুব সাধারণ রোগ হলেও ক্ষেত্র বিশেষে এটি রোগীর প্রাণনাশের কারণও হতে পারে। বিশেষ করে প্রবীণদের বেলায়।
প্রস্রাবের রাস্তায় মূলত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে আমরা তাকে ইউরিন ইনফেকশন বলি। ই কোলাই, সিউডোমোনাস, অ্যান্টারোকক্কাস ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়া এই জাতীয় সংক্রমণের জন্য দায়ী। খুব অল্প কিছু ক্ষেত্রে ফাংগাস ইনফেকশনও হতে পারে।
লক্ষণ
ইউরিন ইনফেকশনের প্রধান লক্ষণগুলো হলো- জ্বর, তলপেটে ব্যথা, ঘনঘন প্রস্রাব, শরীর দুর্বল লাগা, খাওয়ার অরুচি ইত্যাদি।
কারণ
প্রস্রাবের রাস্তায় কোনো বাধা থাকলে (যেমন: টিউমার, পাথর, প্রস্টেট গ্ল্যান্ড), অনেকক্ষণ প্রস্রাব ধরে রাখলে, পানি কম পান করলে, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখলে প্রস্রাবের ইনফেকশন হতে পারে। আবার কোনো কারণ ছাড়াও হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বৃহদান্ত্রে বাস করা ব্যাকটেরিয়াগুলো প্রস্রাবের রাস্তায় এসে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
প্রতিকার
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। যৌনক্রিয়ার পর যৌনাংগের আশেপাশের এলাকা সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব ধরে রাখা যাবে না। মুত্রথলি খালি করে প্রস্রাব করতে হবে। প্রতিদিন ১৮ হাজার থেকে দুই হাজার মি.লি. পানি পান করতে হবে। ক্যানবেরি জ্যুস পান করলে মূত্রনালীর প্রদাহ কম হয়।
পরীক্ষা
সাধারণত প্রস্রাবের রুটিন পরীক্ষা ও কালচার পরীক্ষা করেই এই রোগ নির্ণয় করা হয়। অনেক সময় শুধুমাত্র শারীরিক লক্ষণের ওপরই নির্ভর করে রোগ শনাক্ত করতে হয়।
চিকিৎসা
অ্যান্টিবায়োটিক একমাত্র চিকিৎসা। কালচারের মাধ্যমে কোনো জীবাণু উপস্থিত রয়েছে কি না তা শনাক্ত করে কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক নির্বাচন করতে হবে। প্রস্রাবের রাস্তায় কোথাও বাধা থাকলে প্রয়োজনে অপারেশন করে তা দূর করতে হবে। বয়স্ক পুরুষের প্রস্টেটের সমস্যার কারণে ইউরিন ইনফেকশন হলে তার চিকিৎসা করতে হবে।
লেখক : রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ