ডা. সরদার এ নাঈম
পিত্তথলির পাথর খুব পরিচিত একটি সমস্যা। সাধারণ মানুষ একে গলব্লাডারের পাথর বলেও জানে। সমস্যাটি কেন হয় সেটি বলা মুশকিল। আমরা দেখি আমাদের জনসংখ্যার ১৫/ ২০ শতাংশের এই পাথর রয়েছে। এদের সবার আবার অভিযোগ বা লক্ষণ হয় না। অনেকের সমস্যাটি জানতেই পারে না। এর মধ্যে হয়তো ২৪ শতাংশের লক্ষণ হয়।
পিত্তথলির কাজ কী? খাদ্যনালী থেকে রস যখন পিত্তনালীতে আসে, সেই পথেই একটি পিত্তরস থাকে। থলির মধ্যে সাধারণত পিত্তরস এসে জমা হয় এবং ঘন হয়। ঘন হয় কেন? যখন আমরা চর্বি জাতীয় খাবার খাই, পাকস্থলী থেকে তৈলজাতীয় খাবার যখন আসে, তখন একে পরিপাকের জন্য পিত্তরসের দরকার হয়। সেই পিত্তরস দিয়ে পরিপাক হওয়ার কারণে যখন মেজর মিল নিই, তখন ঘনঘন পিত্তরস হয়। পিত্তরসকে ঘন করার দায়িত্বটাই হলো পিত্তথলির। একে ঘন করার প্রক্রিয়ার মধ্যেই হঠাৎ করে ছোট ছোট দানা তৈরি হয়ে, ধীরে ধীরে পাথরে রূপান্তরিত হয়। মাঝে মাঝে বড় বড় পাথর দেখা যায়। আবার কারো কারো মাছের ডিমের মতো হাজার হাজার পাথর হয়।
লক্ষণ
আগেই বলেছিলাম যে লক্ষণ সবার হবে না। তবে যার লক্ষণ হবে, তার বিভিন্ন রকম হতে পারে। পিত্তথলির পাথরের কী কী সমস্যা হতে পারে? প্রথমেই বলবো, পিত্তথলির পাথরের কারণে এতে সংক্রমণ হয়ে, প্রচণ্ড রকম ব্যথা হয়ে, একিউট কলিসিসটাইটিস ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কখনো কখনো দেখি জণ্ডিস নিয়ে রোগীরা আমাদের কাছে আসে। জণ্ডিস অনেক কারণে হতে পারে। লিভারের সংক্রমণের কারণে ভাইরাস জণ্ডিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার পিত্তথলি থেকে যে পাথর বেরিয়ে এসে পিত্তনালীকে আটকে দেয়, তখন একে বলি সার্জিক্যাল জণ্ডিস বা অবসট্রাকটিভ জণ্ডিস। এটি এই পিত্তথলির পাথরের কারণে হয়।
আরেকটি বিষয় রয়েছে। আমরা কিন্তু জানি না পিত্তথলির ক্যানসার কখন হয়। তবে আমাদের কাছে ক্যানসার নিয়ে যারাই আসে, তাদের বেশিরভাগেরই দেখেছি পাথর পাওয়া যায়। তাহলে আমরা ধারণা করে বলতে পারি, হয়তো বা পিত্তথলির পাথর অনেকদিন এখানে থাকার কারণে এই ক্যানসার হয়। যদিও এটি বৈজ্ঞানিকভাবে বলতে পারি না, তবে ধারণা করতে পারি।
অনুলিখন : শাশ্বতী মাথিন