অনন্যা চৈতী
জীবনের কোনো না কোনো সময় পেশির ব্যথায় ভোগে না, এমন নারী হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে একটি ফল রয়েছে, যেটি পেশির গঠন বাড়াতে বেশ উপকারী। আর সেটি হলো ব্লু-বেরি।
ব্লু-বেরি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া বার্ধ্যক্যজনিত সময়ে পেশির উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি আঘাতের পরও পেশি গঠনে কাজ করে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গেছে। গবেষণাটির ফল প্রকাশিত হয় জার্নাল অব নিউট্রিশনে।
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত গবেষণার ফলে দেখা যায়, ‘ছয় সপ্তাহ ধরে নারীরা ডায়েটে ব্লু-বেরি খাওয়ার কারণে তাদের পেশির কোষ বৃদ্ধিতে সাহায্য হচ্ছিল।’ গবেষণাটি ছয় সপ্তাহ ধরে ২২ জন ২৫ থেকে ৪০ এবং ১০ জন ৬০ থেকে ৭৫ বছর বয়সী নারীকে নিয়ে পরিচালিত হয়। অংশগ্রহণকারীদের নিয়মিত সকালে তাজা ব্লু-বেরির রস (এক দশমিক ৭৫ গ্রাম) পান করতে দেয়া হতো।
এ ছাড়া শুকনো ব্লু-বেরি সকালে ও সন্ধ্যায় ১৯ গ্রাম করে খেতে দেয়া হতো। গবেষণা চলাকালীন তাদের পলিফেনল ও অ্যাসকোয়ানিন সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে যেতে বলা হয়। ব্লু-বেরি খাওয়ার দেড় ঘণ্টা পর অংশগ্রহণকারীদের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, তাদের শরীরে এক ধরনের সিরামের উপস্থিতি বিদ্যমান, যা ব্লু-বেরি থেকে পাওয়া। সিরামটি তাদের শরীরের পেশির কোষের প্রজনন ক্রিয়াকে প্রসারণ, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ও অক্সিজেন গ্রহণের হার এবং বিপাক পরিচালনার ক্ষমতায় বিশেষ প্রভাব ফেলে।
২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী নারীদের ওপর পরিচালিত গবেষণা থেকে দেখা যায়, ব্লু-বেরি সমৃদ্ধ সিরাম তাদের শরীরের পেশি প্রজনন কোষের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে এবং সেইসঙ্গে কোষগুলোতে অক্সিজেনের পরিমাণও বৃদ্ধি করেছে। অন্যদিকে ৬০ থেকে ৭৫ বছর বয়সী নারীদের শরীরে ব্লু-বেরি থেকে প্রাপ্ত সিরাম কোনো উপকারী প্রভাব ফেলতে পারেনি।
নারীদের ওপর ব্লু-বেরির যে সমীক্ষা চালানো হয়েছে সেটি ভবিষ্যতে চিকিৎসাশাস্ত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে জানান গবেষণাটির প্রধান আনা থ্যাল্যাকার-মেরার (পিএইচডি)।
রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রসমূহের (সিডিসি) মতে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পেশি তার নির্দিষ্ট শক্তি ও নমনীয়তা হারাতে থাকে। ৩০ বছর বয়সের পর থেকে মাংসপেশির ভর ৩ থেকে ৫ শতাংশ কমে যায় এবং এই হার ৬০ বছর বয়সের পর আরো বেড়ে যায়। তাই বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই একজন নারীর উচিৎ হবে তার প্রতিদিনের ডায়েটে তাজা ব্লু-বেরির রস রাখা। সম্প্রতি কার্ডিওভাসকুলার, ডায়াবেটিস, মস্তিষ্ক ও অন্ত্রের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্লু-বেরির বিশেষ ভূমিকা নিয়েও গবেষণা চলছে।