উজ্জ্বলা লিমিটেড, বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। নারীকে যোগ্য করে তুলতে অনলাইন ও অফলাইন ক্লাসের মাধ্যমে বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিংয়ের সব খুঁটিনাটি শেখানো হয় এখানে। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারীর সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক বিশেষ আয়োজনের আজ রইল ৮ম পর্ব। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাশ্বতী মাথিন।
পর্ব – ৮ : অনামিকা আক্তার ইমু
বাবার ক্যানসার হয়েছিলো। পরিবার থেকে সবাই ভাবছিলো বাবার অবর্তমানে মেয়েকে লালন-পালন করা কঠিন হবে। তাই মাত্র সাড়ে ১৩ বছর বয়সেই বিয়ে হয়ে যায় অনামিকা আক্তার ইমুর। এরপর ছোট এই মেয়েটি জন্ম দিলো আরো ছোট দুটো শিশুর। সংসার হলো ঠিকই, তবে শান্তি এলো না। স্বামী তেমন কোনো কাজই করতো না। স্ত্রী-সন্তানের দায়িত্ব নেওয়া তো দূরের কথা ইমুর জরায়ুর অসুস্থতা হলে তাকে ছেড়ে চলে যায়। এরপর আশ্রয় হয় মা। মা-ই ইমুকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করে এগিয়ে নিয়ে এসেছে আজ পর্যন্ত। সে আজ বিউটি প্রশিক্ষণ নিয়ে উজ্জ্বলার সেলস অফিসার হিসেবে কাজ করছে।
‘একটা সময় অনেক কেঁদেছি। এখন আর কান্না করি না। কেন কাঁদবো? একজন দায়িত্বহীন পুরুষের জন্য কেন চোখের পানি ঝরাবো? নিজের চোখের পানির দাম আছে। দুই হাতে দুই সন্তান বড় করছি। আমিই তাদের বাবা-আমিই তাদের মা,’- বলছিলেন ইমু।
উজ্জ্বলায় আসার আগে একটি পার্লারে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিউটিফিকেশনের কিছু কাজ শিখে গ্রামে নিজেই একটি পার্লার দিই। কিন্তু সেখানে চুরি হয়ে যায়। আমার পার্লার থেকে সবকিছু নিয়ে যায়। খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। এর আগে বাবা মারা গেলেন। আমার জীবনে টানাপোড়েন। সবকিছু মিলিয়ে খুব বাজে একটি অবস্থা। এরপর ঢাকায় উজ্জ্বলায় আসি। এখানে এসে বিউটিফিকেশনের সম্পূর্ণ কোর্স করি। আর এখনতো কাজই করছি এখানে। উজ্জ্বলা আমার মনোবল বাড়াতে অনেক সহযোগিতা করেছে- জানান তিনি।
বর্তমানে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। সেখান থেকে এইচএসসসি শেষ করেছি জানিয়ে ইমু বলেন, ‘এখন মনে হয় কষ্ট ছিলো বলেই একজন উজ্জ্বলা হতে পেরেছি। উজ্জ্বলার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। নিজের সন্তান দুটোকে নিয়ে এভাবেই এগিয়ে যেতে চাই।’ নিয়ে এভাবেই এগিয়ে যেতে চাই।’