সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
গ্রেজুয়েশন করার পর কী করবেন, ভাবছিলেন উস্মি ইসলাম।সাজের প্রতি একটা সখ ছিল আগে থেকেই। নিজেও খুব সাজতে পছন্দ করতেন। অনেকেই বললো, বিউটি সেক্টরেও বেশ ভালো ক্যারিয়ার গড়া যায়।
এরপর উজ্জ্বলা (চট্টগ্রাম শাখা) থেকে বিউটিফিকেশনের ওপর কোর্স শেষ করে বর্তমানে নিজেই একটি বিউটি স্যালন খুলেছেন। মাসিক আয়ও মন্দ নয়। উদ্যোক্তা হিসেবে তাঁর বিউটি ইন্ডাসট্রিতে এগিয়ে যাওয়ার গল্পটা জানবো।
উজ্জ্বলায় শিখেছি, অনেক শিখতে পেরেছি
বিউটি ইন্ডাসট্রিতে যখন কাজ করার ইচ্ছা হলো, তখন খুঁজছিলাম কোথায় ভালোভাবে শেখায়। অর্থাৎ কোথায় পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানটা পাওয়া যাবে। এ সময় উজ্জ্বলার অ্যাড দেখি। আমি চট্টগ্রামে থাকি। চট্টগ্রামে উজ্জ্বলাতে আমার প্রথম ক্লাস করা ২০২২ এ- মার্চে। মেকআপের ফান্ডামেন্টাল ও হেয়ারের ওপর ক্লাসটা করেছি। তখনও চট্টগ্রামে উজ্জ্বলার শাখা পুরোপুরি খোলা হয়নি। তবে তখনই পরবর্তী সবগুলো কোর্সের জন্য রেজিসট্রেশন করে ফেলি। এরপর শাখা উদ্বোধন হলে ক্লাস শুরু করি।
ক্লাসে যারা শিখতে এসেছিল, অনেকেই আগে থেকে কাজ শিখেছে। আমার হতাশ লাগছিল। আমি তো নতুন। নিজের জায়গাটি কীভাবে করে নেবো? বা কাজটি আমাকে দিয়ে আসলেই কি সম্ভব হবে? ২২ মার্চ আমাদের বেসিক ক্লাসটি হয়। ২৯ মার্চ আমি একটি ফেসবুক পেইজ চালু করি। এর নাম দিই, ‘সেল্ফ অ্যান্ড অ্যালিগেন্ট বাই উস্মি’। পেইজে জানাই যে আমার হোম স্টুডিও রয়েছে এবং আমি হোম সার্ভিস দিচ্ছি। শুরুর দিকে তেমন রেসপন্স পেতাম না। তখন আবার হতাশ হয়ে পড়ি।
এ সময় উজ্জ্বলা থেকে বেশ সহযোগিতা পাই। ফ্যাকাল্টিদের পরামর্শে কমপ্লিট কোর্সের পাশাপাশি কাস্টোমাইজ কোর্সও শেখা শুরু করি। আফরোজা (উজ্জ্বলার সহ প্রতিষ্ঠাতা) আপার সঙ্গে কথা বলার পর তিনি চট্টগ্রামে তাঁর কিছু ক্লাইন্ট ডিল করতে দেন। এতে আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়ে।
দক্ষ বিউটি আর্টিস্টের কদর অনেক
এরপর ধীরে ধীরে আমার ক্লাইন্ট বাড়তে শুরু করে। নিজের হোম স্টুডিও থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকাও আয় করেছি। এরপর মনে হলো, আমার একটি নিজের স্যালন করা দরকার। বাসার নিচে নিজেই স্যালন দিলাম। আসলে বিউটি ইন্ডাসট্রিতে একজন দক্ষ বিউটি আর্টিস্টের অনেক কদর। আর নিয়মিত চর্চা ও কাজের মাধ্যমে এই দক্ষতা অর্জন করতে হয়।
উজ্জ্বলা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। স্বাবলম্বী হবার জন্য, কোন সমস্যাটা কীভাবে সমাধান করতে হয়, তা শিখিয়েছে। কোর্স শেষ হবার পরও উজ্জ্বলা অনেক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
নেতিবাচক কথা শুনেছি, পিছিয়ে যাইনি
এই কাজটি করতে এসে যেমন অনেকের সহযোগিতা পেয়েছি, তেমনি অনেক নেতিবাচক কথাও শুনেছি। অনেকে বলেছে, ‘উচ্চ শিক্ষিত হয়ে কেন এসব কাজ করছো? কোনো উচ্চ বংশের মেয়ে কি এ ধরনের কাজ করে?’ তবে আমাকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে আমার স্বামী। সে পাশে ছিল বলে কাজটি করতে পেরেছি।
চট্টগ্রামে আরো বড় করে স্যালন দেওয়ার আশা রয়েছে। উজ্জ্বলার পরিপূর্ণ সহযোগিতা ছিল বলেই এটিকে পেশা হিসেবে নেওয়ার সাহস পেয়েছি। এখন নিজে হয়ছি স্বনির্ভর ও উদ্যোক্তা।
বি : দ্র : বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে উজ্জ্বলা লিমিটেড। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক পর্ব চলছে। এই পর্বটি ছিলো ৬১তম। উজ্জ্বলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন :
https://www.facebook.com/UjjwalaBD
https://www.instagram.com/UjjwalaBD/
ফোন : ০১৩২৪৭৩৪১৫৭