সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর হারও। ডেঙ্গু জ্বর মূলত হয় এডিস মশার কামড়ে। এই মশা সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায়। ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ (সাভার)-এর চিকিৎসক ডা. শাকিল মাহমুদ জানান, ডেঙ্গু একটি ভাইরাস জনিত রোগ। জ্বর হওয়ার সাত দিনের মধ্যে সাধারণত এটি সেরে যায়। ডেঙ্গুর চারটি সেরিওটাইপ রয়েছে। সব সেরিওটাইপের ক্ষেত্রে প্রধান লক্ষণ হলো, প্রচণ্ড জ্বর হওয়া। জ্বরের সঙ্গে মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা, বমি হওয়া, পেট ব্যথা ইত্যাদি থাকবে। কারো কারো ক্ষেত্রে পাতলা পায়খানা হতে পারে। এই লক্ষণগুলো প্রথম দিন থেকে পঞ্চম দিন পর্যন্ত থাকে। পঞ্চম দিনের পর থেকে সাধারণত ডেঙ্গুর লক্ষণ কমে যায়। স্বাভাবিক ভাইরাস জ্বরে নাক দিয়ে পানি পড়ে। হাঁচি কাশি থাকে। তবে ডেঙ্গুতে এটা থাকবে না। ‘
তবে পঞ্চম দিনের পরে কারো কারো দেহে র্যাশ দেখা দিতে পারে; মাড়ি বা দেহে রক্তক্ষরণ হতে পারে জানিয়ে ডা. শাকিল বলেন, ‘এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে একে হেমোরোজিক ডেঙ্গু বলা হয়। হেমোরেজিক ডেঙ্গুতে সতর্ক ব্যবস্থা না নিলে ডেঙ্গু শক সিনড্রমে চলে যেতে পারে। মৃত্যুর যে খবরগুলো আমরা পাই সেটি সাধারণত এ কারণে হয়ে থাকে।’
পরীক্ষা- নিরীক্ষা
ডেঙ্গু সনাক্তে করণীয় বিষয়ে ডা. শাকিল মাহমুদ বলেন, ‘ প্রথমে সিবিসি টেস্ট করতে হবে। এরপর প্লাটিলেট কাউন্ট দেখবো। প্রথম তিন দিনে এনএসওয়ান করবো। রোগী তিনদিনের পরে আসলে রোগ সনাক্তের জন্য আইজি এন করি। ১০ থেকে ১৪ দিন পর রোগী আসলে আইজিজি করা হয়। এরপর ডেঙ্গু ভাইরাল কালচার করবো। নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডেঙ্গু পিসিআরও করা যায়। তবে এটি একটু ব্যয়বহুল।’
চিকিৎসা
ডেঙ্গু মশা দিনে কামড়ায়। পর্যাপ্ত আলোতে ডেঙ্গু মশা কামড়ায়। তাই লম্বা হাতাযুক্ত পোশাক পরতে হবে। আর দেহের যেসব জায়গাগুলো খোলা থাকে সেখানে মশা নিরোধক লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এ ধরনের লোশন লাগানোর আগে দেখতে হবে, দেহে কোনো র্যাশ হয়েছে কি না। ডেঙ্গু হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে হবে। মাড়িতে রক্ত ক্ষরণ বা মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের মতো সমস্যা হলে হাসপাতালে যেতে হবে। যেহেতু এ সময় প্লাটিলেট কমে যায়, তাই প্যারাসিটামলের বাইরে কোনো ধরনের ব্যথানাশক ওষুধ না সেবন করাই ভালো। তবে ওষুধ সেবনের বিষয়টিতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এ ছাড়া জ্বর হলে প্রচুর পরিমাণ পানি বা তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে এবং বিশ্রামে থাকতে হবে। এমনটাই পরামর্শ দিলেন ডা. শাকিল মাহমুদ।