Wednesday, December 11, 2024
spot_img
Homeজীবনের খুঁটিনাটি'ছেলেরা বিউটি আর্টিস্ট হলে সমাজ বাঁকা চোখে দেখে'

‘ছেলেরা বিউটি আর্টিস্ট হলে সমাজ বাঁকা চোখে দেখে’

সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন ছেলের বিউটি আর্টিস্ট হওয়া কিছুটা কঠিন। সমাজ বিষয়টিকে বাঁকা চোখে দেখে। এমনকি প্রশিক্ষণ নেওয়াটাও সহজ হয় না। অনেক প্রতিষ্ঠানই শেখানোর ক্ষেত্রে সরাসরি ‘না’ বলে দেয় তাঁদের। তবে এসবের ভতরেও যাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন এবং পুরুষ বিউটি আর্টিস্ট হিসেবে সমাজে অবদান রাখছেন, তাঁদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। তিনি বরিশালের ছেলে। বর্তমান সময়ে বরিশালে তিনিই একমাত্র পুরুষ আর্টিস্ট। উজ্জ্বলা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি স্যালন খুলেছেন তিনি। আয়ও ভালোই করছেন। অনেকে প্রশিক্ষণও নেয় তাঁর কাছ থেকে। তাঁর জীবনের চড়াই-উৎরাই, সফলতা, ব্যর্থতা, উজ্জ্বলার প্রভাবের গল্পগুলো শুনবো আজ।

উজ্জ্বলা খুব যত্ন নিয়ে কাজ শেখায়

আমি পেশাগতভাবে পার্লার শুরু করি ২০১৮ সালে। ১০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে এই কাজের। এরপরও উজ্জ্বলা থেকে প্রশিক্ষণ নিই। উজ্জ্বলার সহ প্রতিষ্ঠাতা ও বিউটি ইন্ডাসট্রির অন্যতম নাম আফরােজা পারভীন আপা। তাঁর করা কাজগুলো বিভিন্ন মিডিয়াতে দেখতাম। তাকে ভীষণভাবে অনুসরণ করতাম। আফরোজা আপা বিউটিফিকেশনের বিষয়টিকে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন। এতো সুন্দরভাবে যে বিষয়টিকে উপস্থাপন করা যায়, এটা ভেবে অবাক হতাম! তাঁর কাজ দেখতে দেখতে মনে হয়েছে উজ্জ্বলা থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া দরকার। উজ্জ্বলা খুব যত্ন নিয়ে আমাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আর তারা ছেলেদেরও প্রশিক্ষণ দেয়। এটা বাংলাদেশের অনেক স্বনামধন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতেও দেয় না।

মেয়েদের কাজ ছেলেরা করবে, কেমন কথা?

কাজ শুরুর প্রথম দিকে খুব কটু কথার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ‘মেয়েদের কাজ ছেলেরা করবে, কেমন কথা?’ এসব প্রচুর শুনেছি। এ ধরনের পেশাগুলোতে ছেলেদের বঞ্চিত করা হয়। কাজ শিখতে দেওয়া হয় না। মেকআপ আর্টিস্ট ছেলেরা হবে এটা চায় না। কিন্তু কখনো দমে যায়নি। স্যালন খোলার আগে বাসাতেই একটু স্টুডিওর মতো ছিলো আমার। সেখানে কাজ শুরু করি। সেখানেই সাজাতাম। পাঁচ থেকে ছয় বছর অন্যের বাড়িতে গিয়ে প্রচুর সাজিয়েছি। এভাবে নিজের প্রচার করি। এখনতো নিজেরই স্যালন রয়েছে।

উজ্জ্বলাতে সবাই পরিবারের মতো

উজ্জ্বলা এমন একটা পরিবার যেখানে সবাই বাড়ির মানুষের মতো। কোনো প্রোগরাম হলে আমাকে একটি ফোন দেয়। এখান থেকে সবার খোঁজখবর সবসময় নেওয়া যায়। উজ্জ্বলার সাবিহা আপা ভীষণ সহযোগী একজন মানুষ। যেকোনো সময় তাদের কাছে ফোন দিয়ে তথ্য নেওয়া যায়।

করোনার মহামারির সময় যখন পার্লার নিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলাম, তখন আমার কর্মীদের জন্য কিছু সহযোগিতাও পাঠিয়েছিলো তারা। উজ্জ্বলার কাছ থেকে পুরুষ বিউটি আর্টিস্ট হিসেবে সম্মাননা পেয়েছি। এটা আমার কাজে অনেক প্রেরণা জুগিয়েছে।

উজ্জ্বলার পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠান হয় বরিশালে। সেখানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো। সেদিন আফরোজা পারভীন আপার সঙ্গে আমি একটি লাইভ করি। আপা যে বিষয়টিতে সহমত জানিয়েছিলেন, সেটা আমার জন্য বড় পাওয়া। এটা আমাকে খুব আবেগপ্রবণ করে। আফরোজা আপার কথা এক ঘণ্টা কথা শুনলেও কিছু একটা শেখা যায়। এই গুণ অনেকের ভেতর থাকে না।

ছেলেরা এই কাজে আগ্রহী হোক

বিউটিফিকেশনের কাজে ছেলেরাও আগ্রহী হোক, এমনটাই চাই। আমার স্যালনে যেসব মেয়ে কাজ করে, তারা আমার ওপর নির্ভরশীল। যারা আমার সঙ্গে একবার কাজ করে, তারা অন্য কোথাও যেতে চায় না। আমি সহকর্মীদের জন্য কাজ করতে চাই। তাদেরকে টিকিয়ে রাখতে চাই কাজের ভেতর দিয়ে। তাদের জীবনকে যেন সুন্দর করতে পারি। এটাই চাওয়া।

বি : দ্র : বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে উজ্জ্বলা লিমিটেড। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক পর্ব চলছে। এই পর্বটি ছিলো ২৯তম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments