Sunday, February 16, 2025
spot_img
Homeস্বাস্থ্যকাহনরোাগব্যাধিচীনে বাড়ছে করোনা, সতর্ক হতে হবে আমাদেরও

চীনে বাড়ছে করোনা, সতর্ক হতে হবে আমাদেরও

ডা. মো. ফরিদ রায়হান
চীনে করোনার সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুহারও। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের (আইএইচএমই) একটি পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, নতুন বছরে, অর্থাৎ ২০২৩ সালের মধ্যে দেশটিতে প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ এই রোগে মারা যেতে পারে।

চীন লড়াই করছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বিএফ.৭-এর সঙ্গে। ভারত, জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সতর্ক হতে হবে বাংলাদেশকেও।

ওমিক্রন বিএফ.৭ খুব দ্রুত বিস্তার ঘটায় এবং আরটি-পিসিআর টেস্টে এটি সহজে ধরা পড়ে না। এটি কোভিডের সবচেয়ে বিপজ্জনক ধরন। সাধারণত যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, যেমন শিশু, বৃদ্ধ ও প্রেগন্যান্ট নারী, অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং যারা করোনার ভ্যাকসিন নেয়নি তাদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তবে ভ্যাকসিন দেওয়া থাকলে সংক্রমণ হলেও খুব ক্ষতির আশঙ্কা থাকবে না, এমনটাই বলছে গবেষণা।

অন্যান্য করোনার মতো এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে জ্বর, কফ-কাশি, গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি ঝরা, দুর্বলতা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকতে পারে। তবে ওমিক্রন বিএফ.৭ দিয়ে আক্রান্ত হলে সাধারণত শুষ্ক কাশি হয়। এটি ধীরে ধীরে শুরু হয়ে, কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। এর পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট, তীব্র ক্লান্তি ভাব প্রকাশ পাবে। সাধারণত ঠান্ডা-কাশিতে খুব বেশি ক্লান্ত বোধ হয় না। তবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির অতিরিক্ত দুর্বলতা ও অবসাদ হতে পারে।

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

প্রতিরোধ ও সতর্কতা
# যে কোনো ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। এ ক্ষেত্রে জিঙ্ক, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, আয়রন, ভিটামিন ডি, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। রঙিন শাকসবজি, ফল (লেবু, কমলা, পেয়ারা ইত্যাদি), মাছ খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সাপ্লিমেন্টও সেবন করতে পারেন।
# রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
# ভ্যাকসিন নেওয়া না থাকলে দ্রুত নিতে হবে।
# মাস্ক পরায় অবহেলা করা যাবে না। অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।
# জীবাণু থেকে সুরক্ষা পেতে কিছুক্ষণ পরপর হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ুন।
# কাজের সময় চোখ, নাক, মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
# চেষ্টা করুন জনসমাগম বা ভিড়-বাট্টা এড়িয়ে চলতে।
# যেহেতু করোনাতেই নয়, ঠান্ডা-কাশির সমস্যা অন্যান্য রোগেও হতে পারে। তাই তাৎক্ষণিকভাবে রোগটি বুঝতে পারা কিছুটা কঠিন। তবে করোনা যেহেতু অতিমারি এবং এতে মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে, তাই সাধারণ কফ-কাশি হলেও অবহেলা না করে পরীক্ষা করে নেওয়াই ভালো।

লেখক : নিউরো ও স্পাইনাল সার্জন
কনসালট্যান্ট, নিউরোসার্জারি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments