Wednesday, November 19, 2025
spot_img
Homeজীবনের খুঁটিনাটিগোট মিল্ক সোপ : কী থাকে, ব্যবহার করবেন কেন?

গোট মিল্ক সোপ : কী থাকে, ব্যবহার করবেন কেন?

সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক

 

বর্তমানে সারাবিশ্বে গোট মিল্ক সোপ বা ছাগলের দুধের তৈরি সাবান বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। হাতে তৈরি আয়ুর্বেদ এই সাবানটি প্রাকৃতিক উপাদানে ভরপুর। এতে কোনো ডিটারজেন্ট বা ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার হয় না।

পাশাপাশি এতে ছাগলের খাঁটি দুধের ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে, যা দূষিত পদার্থ দূর করে ত্বককে পরিষ্কার করে। এই সাবানে আরও রয়েছে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড। এটি মৃত কোষের মধ্যকার বন্ধন ভেঙে মৃতপ্রায় অংশকে তুলে ত্বককে আরেও প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল করে।

গোট মিল্ক সোপের অনেক গুণ রয়েছে জানিয়ে আয়ুর্বেদিক রূপ বিশেষজ্ঞ সাদিয়া ইসলাম বলেন, ‘এতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ১, বি ৬, বি ১২, সি, ডি, ই, প্রভৃতি। এ ছাড়া রয়েছে জিঙ্ক, কপার, আয়রন, সেলেনিয়াম ইত্যাদি খনিজ উপাদান। রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যামাইনো অ্যাসিড, সাইট্রিক অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও এনজাইম। এসব উপাদান শুধু শরীরের জন্য নয়, ত্বকের জন্যও জরুরি। সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো, ছাগলের দুধ খুব দ্রুত ত্বকের বাইরের আবরণ ভেদ করে গভীরে প্রবেশ করে এবং টিস্যুগুলোতে পর্যাপ্ত পুষ্টি জোগায়।’

ছাগলের দুধ নিজেই এক প্রকার নমনীয়কারী অথবা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য ত্বককে কোমল, মসৃণ ও নমনীয় রাখতে আর্দ্রতার বাঁধ তৈরি করে। এতে থাকা প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড ও গ্লিসারিন ত্বকের আর্দ্রতা খুব ভালোভাবে বজায় রাখে। এই সাবান ক্রিমের মতো ত্বকের বহিরাবরণ ভেদ করে, খুব সহজেই আন্তঃকোষীয় ফাটলে এবং ফাঁকা স্থানে পৌঁছায়। এতে ত্বক নমনীয় থাকতে উপকার হয়।

‘অল্প বয়সে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধে এই সাবান বেশ কার্যকর। এই সাবান শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (যেমন : ভিটামিন এ, সি ও ই) সমৃদ্ধ হওয়ায় শরীরকে ফ্রি রেডিক্যালের ধ্বংসাত্মক ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এটি ত্বকের বহিরাবরণের মৃত কোষের আস্তরণ দূর করে এবং এর নিচে নতুন কোষের আস্তরণ তৈরি করে’- বলছিলেন আয়ুর্বেদিক রূপ বিশেষজ্ঞ সাদিয়া ইসলাম।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গোট মিল্ক সোপ ব্যবহারে ত্বকের ব্রণ বা ফসকুড়ি দূর হয়। এর মধ্যে থাকা মিল্ক প্রোটিন অসাধারণ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এটি ফুসকুড়ির জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে এবং ত্বকে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে।

গোট মিল্ক সোপ নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের প্রদাহ থেকে মুক্তি মেলে। ছাগলের দুধে চর্বির অণু থাকায় এটি শক্তিশালী প্রদাহরোধী হিসেবে অন্যতম। পাশাপাশি এতে কোনো অতিরিক্ত রাসায়নিক যোগ করা হয় না। সুতরাং, যে কেউ (এমনকি স্পর্শকাতর ত্বকের মানুষ) অস্বস্তি অথবা প্রদাহের দুশ্চিন্তা ছাড়াই এটি ব্যবহার করতে পারে।

ত্বকের সংক্রমণ প্রশমনেও এই সাবানের জুরি নেই। এতে রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল বৈশিষ্ট্য। সুতরাং, এই উপাদানে প্রস্তুত সাবান খুব সহজেই ত্বকের সংক্রমণ (যেমন : রোসেসিয়া, একজিমা, সোরিয়েসিস ও ডার্মাটাইটিস) দ্রুত প্রশমিত করে।

‘গোট মিল্ক সোপ আমাদের ত্বকের পিএইচ (pH)–এর ভারসাম্য চমৎকারভাবে বজায় রাখে। দেখা গেছে, ছাগলের দুধে ক্যাপ্রিলিক অ্যাসিড নামের ফ্যাটি রয়েছে। এটি সাবানের পিএইচ-এর ভারসাম্য প্রায় ত্বকের প্রাকৃতিক pH–এর খুব কাছাকাছি ধরে রাখে। এতে আমাদের ত্বক সাবান থেকে সর্বোচ্চ পরিমাণে পুষ্টি শোষণ করতে পারে এবং সফলভাবে জীবাণুর আক্রমণ প্রতিহত করে। ছাগলের দুধ আলফা হাইড্রক্সিল অ্যাসিডে সমৃদ্ধ। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং নতুন কোষ বৃদ্ধিতে উদ্দীপনা জোগায় ৷ এটি ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক মেরামত করে তারুণ্য ও প্রাণবন্তভাব বজায় রাখে’- বলেন আয়ুর্বেদিক রূপ বিশেষজ্ঞ সাদিয়া ইসলাম।

বর্তমানে বাজারে এই ধরনের সাবান নিয়ে এসেছে অর্গানিক পণ্য তৈরির প্রতিষ্ঠান আকসা। এই সাবান ত্বককে নমনীয় করে, গভীর থেকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

সাতকাহন
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.