ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বল
রক্তে স্বাভাবিকের তুলনায় হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে তাকে এনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা বলে। বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর তিন ভাগের এক ভাগ মানুষ জীবনের কোনো না কোনো সময়ে নানাবিধ কারণে এ সমস্যায় ভুগে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নারীর গর্ভাবস্থা জনিত রক্তস্বল্পতার হার ৪০ থেকে ৮০ ভাগ। গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতার কারণটি মূলত শরীরবৃত্তীয়। গর্ভধারনের পর নারীর শরীরজুড়ে চলতে থাকে নানা রকম হরমোন ও হরমোন জাতীয় উপাদানের উত্থান-পতন। সঙ্গে রয়েছে গর্ভস্থ শিশুর বাড়তি চাহিদা। এতে শরীরের লোহিত কণিকা উৎপাদনের হার বেড়ে যায় শতকরা ২৫ ভাগ। আর লোহিত কণিকা তৈরির কাঁচামাল হলো আয়রন। এতে তখন কাঁচামালে টান পড়ে এবং বাড়তি আয়রনের জোগান দিতে না পারলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।
অপরদিকে রক্ত রসের পরিমাণ বাড়ে প্রায় ৪৫ ভাগ। এটাও সমস্যা। লোহিত রক্ত কণিকার তুলনায় রক্ত রসের উৎপাদন বেড়ে গেলে রক্তে এক ধরনের তরলায়ন হয়। এতে এনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা হয়। এ ছাড়া বিশেষ কিছু অসুখ যেমন কৃমি, পাইলস, আলসার, পাইলস, থ্যালাসেমিয়া প্রভৃতি – এরাও গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতার কারণ হিসেবে যুক্ত হয়।
লক্ষণ
# শারীরিক দুর্বলতা
# অল্প পরিশ্রমে শ্বাসকষ্ট
# বুক ধরফর
# মাথা ধরা ও মাথাব্যথা
# ক্ষুধামান্দ্য
# ফ্যাকাশে বা সাদাটে হয়ে যাওয়া
# চুলের উজ্জ্বলতা নষ্ট হওয়া ইত্যাদি।
তবে এসব লক্ষণের কিছু কিছু গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে এমনিতেও দেখা দিতে পারে। আবার কোনো লক্ষণ ছাড়াও রক্ত স্বল্পতা হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় শুরু থেকেই অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়মিত পরামর্শ নিতে হবে। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা ও অ্যান্টিনেটাল চেকআপ করতে হবে।
লেখক : হেমাটোলজি বিশেষজ্ঞ