ডা. মো. ফরিদ রায়হান
চেয়ারে বসেছেন, উঠতে পারছেন না। অসহ্য কোমর ব্যথা। অথবা একটু নুয়ে কোনো কাজ করতে গেছেন। মাঝপথেই থেমে গেলেন। কাজটাই আর হলো না। কোমর ব্যথায় যারা ভোগেন, হরহামেশাই এসব সমস্যায় পড়েন। আসলে কোমরের ব্যথায় ভোগেন না, এমন মানুষ কমই রয়েছে। বেশিরভাগকেই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে এ সমস্যায় পড়তে দেখা যায়।
কারণ
# পেশি ও হাড়ে ব্যথা
# ফাইব্রোমায়ালজিয়া
# অস্টিও-আর্থ্রাইটিস
# স্পনডাইলোডিসকাইটিস
# স্পনডাইলোসিস
# এনকাইলজিংস্পন্ডাইলাইটিস
যেসব সমস্যা হয়
# কোমর থেকে ব্যথা ডান/বাম উভয় পা, হাঁটু, পায়ের গোঁড়ালি বা আঙুল পর্যন্ত নামতে পারে।
# রোগী হাঁচি-কাশি দিলে ব্যথা বেড়ে যায়।
# সামনে ঝুঁকলে বা শুয়ে পা উঁচু করলে ব্যথা বাড়ে।
# আক্রান্ত পায়ে ঝিনঝিন বা অবশ বা জ্বালাপোড়া ভাব হয়।
# হাঁটা বা চলাফেরা করলে ব্যথা বাড়ে।
# আক্রান্ত পা ভারী, দুর্বল বা অবশবোধ হয়।
# ব্যথার সঙ্গে মূত্র বা মলত্যাগের নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
প্রাথমিকভাবে করণীয়
কোমর ব্যথার যথাযথ চিকিৎসা রয়েছে। কিছু উপায় মেনে চললে ৯০ ভাগ পর্যন্ত ব্যথা কমে যেতে পারে। এ জন্য কিছুদিন-
# পরিপূর্ণ বিশ্রাম নেওয়া।
# শক্ত বিছানায়, নরম বালিশে ঘুমানো।
# নিচু হয়ে ভারী কিছু না তোলা বা ভারী কাজ না করা।
# চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যায়াম শিখে সে অনুযায়ী পালন করা।
# বিছানা থেকে ওঠার সময় কাত হয়ে ওঠা।
# ওজন কমানো।
করণীয়
# সর্বপ্রথম একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
# চিকিৎসক রোগী দেখে এবং প্রয়োজনে কোমরের এক্স-রে, এমআরআই পরীক্ষা করে চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করবেন।
# অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপারেশন ছাড়াই কিছু ওষুধ সেবন করলে এবং নিয়ম মেনে চললে ব্যথা সেরে যায়।
# অল্প কিছু ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে। যেমন :
১. তিন মাস ওষুধ সেবনের পর অসহনীয় ব্যথা থাকলে।
২. ব্যথা স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করলে।
৩. মূত্র ও মলত্যাগের নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হলে।
৪. পা ভারী, অবশ বা দুর্বল হয়ে গেলে।
লেখক : নিউরো ও স্পাইনাল সার্জন
কনসালট্যান্ট, নিউরোসার্জারি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়