Thursday, February 13, 2025
spot_img
Homeঅন্যান্যউৎসব হোক 'আমেন কালেকশন'- এর জামদানিতে

উৎসব হোক ‘আমেন কালেকশন’- এর জামদানিতে

সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক

ঈদ বা পহেলা বৈশাখের উৎসব থেকে শুরু করে ‘কান’ -এর রেড কার্পেট ইভেন্ট- কোথায় নেই জামদানির কদর ! আসলে বাঙালির একান্ত নিজস্ব বলে যা রয়েছে, তার মধ্যে জামদানি অন্যতম। এই শাড়ির সুতো, নকশা, রঙের সমন্বয় যেকোনো নারীকেই অভিজাত ও ব্যক্তিত্বময় করে তোলে।

নারায়ণগঞ্জের প্রত্যন্ত জায়গা থেকে শহুরে মানুষের কাছে তাঁতিদের হাতে বোনা একদম আসল জামদানি যারা পৌঁছে দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে আমেন কালেকশন অন্যতম। শতভাগ আসল জামদানি, কম মূল্যে ক্রেতাদের সামনে নিয়ে আসতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে কাজ করে যাচ্ছে ফেসবুকভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান। আমেন কালেকশনের প্রতিষ্ঠাতা ডা. দিলরুবা নাসরিন এবং এর সহ প্রতিষ্ঠাতা ইফতেখার আমিন। এবারের ঈদ ও পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে এসেছে জামদানির বৈচিত্র্যময় সমাহার। এখানে শতভাগ আসল জামদানি শাড়ি অন্যান্য জায়গার তুলনায় অনেকটা কম দামে পেয়ে যাবেন ক্রেতারা।

ছবি : আমেন কালেকশন
ছবি : আমেন কালেকশন

সাতকাহন২৪.কম : এবারের ঈদ ও পহেলা বৈশাখকে ঘিরে কী ধরনের শাড়ি এনেছেন আপনারা ?

ডা. দিলরুবা নাসরিন : ঈদ ও পহেলা বৈশাখ দুটোই তো এবার পাশাপাশি ও পরপর পড়ছে। তাই দুটোকেই মাথায় রেখে, পোশাক আনার চেষ্টা করছি। পহেলা বৈশাখের ক্ষেত্রে মানুষ একটু বাজেট কমের মধ্যে শাড়ি চায়। আমরা এবার মোটামুটি কম থেকে দামি সব ধরনের পোশাকই রেখেছি। তবে হাই রেঞ্জের শাড়ি এবার একটু বেশি করা হয়েছে। নকশার বৈচিত্র্যতো রাখার চেষ্টা করছিই। নতুন নতুন নকশার শাড়ি আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ইফতেখার আমিন : মূলত ঈদ ও পহেলা বৈশাখ দুটোই আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। তাই এ বিষয়গুলো খেয়াল রেখে, নকশার ভিন্নতা ও বৈচিত্র্য রয়েছে এমন শাড়িগুলোই এনেছি। আমেন কালেকশনের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো, আমরা সবসময়ই নকশার ভিন্নতা ও বৈচিত্র্যের ওপর জোর দিই। সবসময়ই আমরা চেষ্টা করি, গতাণুগতিক থেকে ভিন্নধারার শাড়ি আনতে। এবার আরেকটু বৈচিত্র্যময় নকশা আনার চেষ্টা করেছি। পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে লাল শাড়ির দিকে ফোকাস করা হয়েছে।

ছবি : আমেন কালেকশন
ছবি : আমেন কালেকশন

সাতকাহন২৪.কম : শাড়িগুলো কােথা থেকে আপনারা তৈরি করান?

ডা. দিলরুবা নাসরিন : আমরা যেসব তাঁতিদের সঙ্গে কাজ করি, তারা বরাবরই নারায়ণগঞ্জের। তাদের কাছ থেকেই একদম আসল জামদানিগুলো আমরা বের করে নিয়ে আসি।

ইফতেখার আমিন : আমাদের শাড়িগুলো মূলত নিজস্ব তাঁতি দিয়ে তৈরি করা হয়। নারায়ণগঞ্জের একদম প্রত্যন্ত জায়গা থেকে আমাদের নিজেদের তাঁতিরা শাড়িগুলো তৈরি করে।

ছবি : আমেন কালেকশন
ছবি : আমেন কালেকশন

সাতকাহন২৪.কম :এগুলোর দাম কেমন ?

ডা. দিলরুবা নাসরিন : পাঁচ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে জামদানিগুলো পাওয়া যাবে।

ইফতেখার আমিন : আসলে জামদানি শাড়ির সুতার দাম আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। তাই দামও বেড়েছে। আর আমেন কালেকশন শাড়ির মানের সঙ্গে কখনো কমপ্রোমাইজ করেনি এবং করবে না। তাই দামটাও সেভাবেই রাখতে হচ্ছে। আর যেহেতু শাড়ির নকশায় অনেক বৈচিত্র্য রয়েছে, তাই ১০ হাজার টাকার ওপরে একটু বেশি। আমেন কালেকশন লাভটা খুবই সিমিত রাখে। অনেকে হয়তো বলবে, এটি খুব ক্লিশে বিষয়। তবে বিশ্বাস করুন, আমি নিজে গিয়ে তাঁতিদের কাছ থেকে শাড়িগুলো নিয়ে আসি। পাশাপাশি আমাদের লাভের পরিমাণটা খুব কম। আমরা আমেন কালেকশনে ১০০ ভাগ আসল ঢাকাই জামদানি কম দামে রাখতে পারি।

সাতকাহন২৪.কম : আপনাদের অর্ডার করা এবং ডেলিভারি পদ্ধতির বিষয়টি বিস্তারিত বলুন..

ইফতেখার আমিন : অর্ডার করাটা খুবই সহজ। পেইজের শাড়ি পছন্দ হলে নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর বিস্তারিত দিলে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ডেলিভারি করি। ঢাকার মধ্যে ডেলিভারি ৮০ টাকা। ঢাকার বাইরে জায়গাভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। এই ক্ষেত্রে ডেলিভারি হয়তো আরেকটু বেশিদিন লাগে। ডেলিভারির ক্ষেত্রে কুরিয়ার সার্ভিসের ওপর নির্ভর করা হয়।

আমাদের শাড়ি প্রি অর্ডার করা সম্ভব। কেউ একটি শাড়ি পছন্দ করলো, হয়তো সেটার স্টক ফুরিয়ে গেছে। সেই ক্ষেত্রে আমরা প্রি অর্ডার নিয়ে থাকি। এ ক্ষেত্রে শাড়ি ভেদে অন্তত ২৫ দিন থেকে এক মাস সময় নিই। এতে একদম নতুন শাড়ি গ্রাহককে দিতে পারি। কেউ অর্ডার করতে চাইলে, তাকে আগে থেকে কিছু অ্যাডভান্স করতে হয়।

ছবি : আমেন কালেকশন
ছবি : আমেন কালেকশন

সাতকাহন২৪.কম : ডিসকাউন্ট রয়েছে কি ?

ডা. দিলরুবা নাসরিন : বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উৎসবে আমরা ডিসকাউন্ট দিই। এবার এখনো তেমন কোনো ডিসকাউন্ট দেওয়া হয়নি। তবে এতটুকু বলতে পারবো, অন্য যেকোনো পেইজের চেয়ে আমেন কালেকশনে অবশ্যই ভালো মানের শাড়িটি পাবেন। আমরা অন্যান্য পেইজের থেকে কিছুটা কম দামে শাড়ি বিক্রি করি।

ছবি : আমেন কালেকশন
ছবি : আমেন কালেকশন

সাতকাহন২৪.কম : আসল ও নকল জামদানির পার্থক্য কীভাবে করা যাবে ?

ডা. দিলরুবা নাসরিন : যেটা নকল সেটিতো আসলে জামদানি নয়। এখানে জামদানির নকশা ব্যবহার করে টাঙ্গাইল শাড়ি বা মেশিনের তৈরিকে জামদানি হিসেবে চালানো হয়।

ইফতেখার আমিন : আসল জামদানি কেবল ঢাকাই জামদানি। নকলে কেবল জামদানির নকশাকে একটি শাড়ির ওপর ছাপিয়ে দেওয়া হয়। এটা আসল শাড়ির ধারের কাছেও নয়। আসলটি সম্পূর্ণ হাতে বুনতে হয়। এর নকশা হয় খুব সূক্ষ্ম, নিঁখুত ও মসৃণ। জামদানিতে সুতা সাধারণত বের হয়ে থাকে না। নকলগুলোতে সুতাগুলো বের হয়ে থাকে, অনেকটা কাঁটার মতো।

ছবি : আমেন কালেকশন
ছবি : আমেন কালেকশন

একটা জামদানি তৈরি করতে তাঁতিকে গড়ে অন্তত ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। শাড়ির নকশার ওপর বিষয়টি নির্ভর করে। জামদানি শাড়ি বুনতে ১০ দিন থেকে এক মাস লাগে। খুব ভালো জামদানি তৈরিতে ছয় মাসও লাগে। মেশিনে বুনলে একদিনের মধ্যে দুই থেকে তিনটি শাড়ি তৈরি করা যায়।
আসল জামদানি শাড়ি পরলে আরাম পাওয়া যায়। অন্যদিকে নকলটিতে নাইলনের সুতো থাকে, তাই খসখসে ও ভারি হয়।

জামদানি তৈরির সিল্ক সুতা মাড় দেওয়া থাকে। পিওর সিল্কের সুতা টানাটানি করলে ছিঁড়ে যায়। পুড়ালে চুলের মতো পোড়া গন্ধ বের হয়। আচলের শেষ প্রান্তের সুতা মোড়ানো হলে সেগুলো জড়িয়ে যায়। নাইলনের হলে যেকোনো অবস্থাতে সমান থাকে।

আমেন কালেকশন- এর ফেসবুক পেইজ :

AmenCollectionBD

ফোন : 01730-430897

ই মেইল : iftekhar.amin2016@gmail.com

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments