সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে উজ্জ্বলা। উজ্জ্বলা প্রান্তিক নারীকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে কাজ করে।
নতুন প্রজন্মের নারী ও পুরুষ যেন বিশ্বমানের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং-এ নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে, সেই চিন্তা থেকে ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু হয় প্রতিষ্ঠানটির। নারীকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে অনলাইন ও অফলাইন ক্লাসের মাধ্যমে বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিংয়ের সব বিস্তারিত শেখায় উজ্জ্বলা। দেশের সেরা বিউটি আর্টিস্টরা এসব প্রশিক্ষণের ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে রয়েছেন। গত ছয় বছরে প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ট্রেনিং শেষ করেছে উজ্জ্বলায়।
উজ্জ্বলার যাত্রা ও তার কর্মকাণ্ড নিয়ে সাতকাহন২৪.কম-এ কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির সহ প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশের বিউটি ইন্ডাসট্রির পরিচিত মুখ আফরোজা পারভীন।
সাতকাহন : উজ্জ্বলার শুরুটা কেমন ছিল? কী উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি?
আফরোজা পারভীন : উজ্জ্বলা আসলে একটি সামাজিক উদ্যোগ। এটি বিউটি ও গ্রুমিং সেক্টরে নারী ও পুরুষকে সমান তালে প্রশিক্ষণ দেয় এবং উদ্যোক্তা তৈরিতে সহযোগিতা করে। উজ্জ্বলার বিভিন্ন কোর্স করার মাধ্যমে নারীরা নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে পারছে এবং দেশীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। তরুণ শক্তিকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করাই প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য।
উজ্জ্বলা ভারত ও বাংলাদেশ মিলে একটি যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান। এর চেয়ারম্যান আদিত্য সোম। তিনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে। যেহেতু আমি বিউটি ইন্ডাসট্রির সঙ্গে যুক্ত, তাই আমরা দুজনে মিলে এই সেক্টরে কাজটি শুরু করি।
সাতকাহন : বিউটি আর্টিস্ট প্রশিক্ষণের বিষয়টি আপনারা বেছে নিলেন কেন?
আফরোজা পারভীন : একজন ব্যক্তি দক্ষ বিউটি আর্টিস্ট হতে পারলে দেশ ও বিদেশে তার ব্যাপক চাহিদা থাকে। আমাদের দেশে এই সেক্টরে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ কম। ভালো মানের প্রতিষ্ঠানগুলোতে খরচ অনেক বেশি। অনেকের পক্ষেই সেই সুযোগ গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। তবে উজ্জ্বলা থেকে আমরা স্বল্প খরচে মেকআপের বেসিক থেকে অ্যাডভান্স কোর্সগুলো করিয়ে থাকি। কিস্তিতে টাকা দেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি উজ্জ্বলায় রয়েছে হোস্টেল। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে এসে শিক্ষার্থীরা এখানে থেকে কোর্স করতে পারে। এ ছাড়া আমরা পুরুষদেরও বিউটি আর্টিস্ট হিসেবে প্রশিক্ষণ দিই। অন্যান্য অনেক জায়গায় সেই সুবিধাগুলো নেই। একজন শিক্ষার্থীকে কেবল শিখিয়ে দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয় না। তাকে ফলোআপ করা হয়। উদ্যোক্তা তৈরিতে সহযোগিতা করি আমরা।
বিউটি সেক্টরে আসলে দুই ধরনের মানুষ আসতে চায়। এক ধরনের মানুষ আসে শখের বসে। আরেক ধরনের মানুষ আসে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে। দুজনের কাউকেই আমরা আটকাতে পারি না। কারণ, দুজনেই খুব নিবেদিত থাকে বিষয়টি নিয়ে। হয়তো একজন নারী কাজ শিখে তার পরিবারকে সাহায্য করবেন, সন্তানের মুখে খাবার জোগাবেন! আর এই সেক্টরটি কাজ শিখে স্বাবলম্বী হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে বেশ উপযোগী।
সাতকাহন : এর বাহিরে উজ্জ্বলা আর কী ধরনের কর্মকাণ্ড করে?
আফরোজা পারভীন : উজ্জ্বলা রোহিঙ্গা ও দলিত সম্প্রদায়ের নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে বিউটি প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এ ছাড়া সমাজের অবহেলিত অংশ (প্রতিবন্ধি, বিধবা, রেপ ভিক্টিম) -কে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে উজ্জ্বলা।
সাতকাহন : উজ্জ্বলার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
আফরোজা পারভীন : উজ্জ্বলা উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করে যেতে চায়। তরুণ সমাজকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে বেগবান করতে উজ্জ্বলা বদ্ধ পরিকর।
সাতকাহন : ধন্যবাদ আপনাকে।
আফরোজা পারভীন : আপনাকেও ধন্যবাদ।