সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের ওপর অনার্স করেন নাজিয়া তাজনিন প্রিমা। লেখাপড়া শেষে বিয়ে হয়ে যায় তাঁর। সাত মাসের মাথায় সন্তানসম্ভবা হন। সংসার, ছোট সন্তান সামলাতে গিয়ে চাকরি করা হয়ে উঠছিলো না। একটা সময় ভীষণ হতাশ হয়ে পড়েন। বন্ধু-বান্ধবরা চাকরি করে শক্ত অবস্থান তৈরি করে ফেলছে। তিনি কিছুই করতে পারছেন না। ভাবছিলেন, সংসার-সন্তান সামলে নিজের মতো কী করা যায়। এ সময় মাথায় এলো স্যালন শুরু করার কথা। তার মায়েরও একটি স্যালন ছিল। তিনি সেখান থেকে কিছু কাজ শিখেছেন। তবে আরো দক্ষ হতে উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নেন।
বর্তমানে তিনি একটি স্যালন খুলেছেন। আয়ও মোটামুটি ভালোই। এখন তিনি নিজেই স্বাবলম্বী। সংসার সামলে ভালোভাবেই ব্যবসাকে দাঁড় করাতে পেরেছেন। জানালেন, এখন আর নিজেকে লুজার মনে হয় না। একটা সময় অনেক বাজে কথা শুনেছি মানুষের। ডিপ্রেশনে ভুগতাম খুব। উজ্জ্বলা আমাকে নতুন পথ দেখিয়েছে।
আমার মায়ের স্যালন ছিলো ২০০৫ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত। সে সময় কিছু কাজ শিখেছিলাম। তবে নতুন করে নিজের ব্যবসা দাঁড় করাতে গিয়ে দেখলাম, আগের সঙ্গে এখনকার সাজের অনেক পার্থক্য। অনেক আপগ্রেড হয়েছে সব। তাই নিজেকে বিউটি আর্টিস্ট হিসেবে দক্ষ করতে ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিতে চাইছিলাম। উজ্জ্বলাকে আমার কাছে সব প্রতিষ্ঠানের চেয়ে আলাদা মনে হয়েছে। খুব গুছানোভাবে কাজটা শিখেছি। এখানে কোর্সগুলো খুব আপডেট। অন্যান্য যারা এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে তারাও উদ্বুদ্ধ করেছে- জানান তিনি।
কাজ করার সময় ক্লাইন্টের ইতিহাসও নেন তিনি। যেমন, কেউ হয়তো ফেসিয়াল করতে চাইলো, তখন তার ত্বকের অবস্থা কেমন সে সম্পর্কে বিশদভাবে জেনে নেন। এরপরই সেবা দেন। বললেন, এতে ক্লাইন্ট সন্তুষ্ট হয়। আর এ বিষয়টি শিখেছি উজ্জ্বলার কাছ থেকে। উজ্জ্বলা খুব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব কিছু শিখিয়েছে। এখানকার আরেকটি ভালো বিষয় ছিল, শিক্ষকদের প্রশ্ন করলে তারা বিরক্ত হতেন না। যেকোনো ধরনের প্রশ্ন করা যেতো। শিক্ষকরা খুব সুন্দর করে বোঝাতেন। প্রতিষ্ঠানটির সহ প্রতিষ্ঠাতা আফরোজা পারভীন আপা প্রত্যেকটা মেয়েকে দাড় করিয়ে তাদের কথা শুনতেন। তাদের সুবিধা-অসুবিধা, মানসিক অবস্থা জানতে চাইতেন। এটা খুব উৎসাহ যোগাতো।’
বিউটি আর্টিস্ট হিসেবে উজ্জ্বলার পক্ষ থেকে ‘সেরা উজ্জ্বলা’-এর অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। জানান, এটা আমার জীবনের সেরা অর্জন। করোনার সময় পার্লার নিয়ে একটি বাজে অবস্থা পার করছিলাম। সে সময়টায় হতাশ হয়ে পড়ছিলাম খুব। এই সময় অ্যাওয়ার্ডটি পেলাম। এটা আমাকে সামনের পথটি চলতে খুব সহায্য করেছে। মনে হয়েছে, আমি পারবো। আসলে ব্যবসা করতে গেলে কখনো ভালো হবে, কখনো মন্দ। এটি মেনেই ব্যবসা করতে হবে। আর এই মনোবলটা উজ্জ্বলার প্রশিক্ষণ থেকেই পেয়েছি।
‘ভবিষ্যতে বিউটি সেক্টরে আরো ভালোভাবে কাজ করতে চাই। আর যেহেতু ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের ওপর লেখাপড়া করেছি। এটিও নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে’- বলেন তিনি।
বি : দ্র : বাংলাদেশের বিউটি অ্যান্ড গ্রুমিং ইন্ডাস্ট্রিতে উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে উজ্জ্বলা লিমিটেড। উজ্জ্বলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন কয়েকজন নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে সাতকাহনের ধারাবাহিক পর্ব চলছে। এই পর্বটি ছিলো ২৮তম।