ডা. শাকিল মাহমুদ
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে শহুরে ব্যস্ত মানুষ গ্রামে ছুটে। ঈদ আসলেই প্রিন্ট ও ইলেকট্রলিক মিডিয়ার ছবিগুলোতে দেখা যায়, কীভাবে গাদাগাদি করে বাসে বা ট্রেনে চড়ে মানুষ ফিরছে বাড়িমুখী।
আর এতেই বোঝা যায়, নাড়ির টানে এই বাড়ি ফেরা কতটা আকাঙক্ষার। তবে এই ফেরা সুস্থভাবে করতে এবং স্বস্তিদায়ক করতে, কিছু বিষয় মাথায় রাখা চাই। না হলে, সম্পূর্ণ আনন্দটাই মাটি হয়ে যেতে পারে।
১. ভ্রমণের সময় বাইরের যেকোনো খাবার ও পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। বাইরের খাবার থেকে পেটে বিষক্রিয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। ঘরে তৈরি খাবার ও পানীয় সঙ্গে রাখুন।
২. শিশুদের জানালার পাশে বা বাতাসের ঝাপটা বেশি লাগে, এমন স্থানে বসাবেন না। এতে ঠান্ডা-কাশির সমস্যা হতে পারে। যেহেতু এবারের ঈদ গরমের সময় পড়েছে, তাই যাত্রাপথে গরমে ঘেমে যেন শিশু অসুস্থ হয়ে না পড়ে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
৩. ভ্রমণের আগে সহজে হজম হয়, শক্তি দেয়, কম এসিডিটি করে, কম পানি পিপাসা লাগায়- এমন খাবার খেতে হবে। এ সময় ভারি খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
৪. দীর্ঘভ্রমণে মাঝপথে কিছু খেলে অনেকের এসিডিটির সমস্যা হয়। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে ভ্রমণ শুরুর আগে বা খাবার গ্রহণের আধা ঘণ্টা আগে এসিডিটির ওষুধ খেয়ে নিন। অবশ্য এই ওষুধ হতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
৫. অনেকে ভ্রমণে বমি করে। এই সমস্যা সমাধানে ভ্রমণের আধা ঘণ্টা আগে বমির ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন।
৬. ভ্রমণের সময় হালকা রঙের, আরামদায়ক ও বাতাস সহজে চলাচল করে- এমন পোশাক পরুন। এতে ঘামলেও সহজে শুকিয়ে যাবে এবং ক্লান্তি কম লাগবে।
৭. যাত্রাপথে অপরিচিত লোকের দেওয়া খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৮. দীর্ঘ ভ্রমণে বাসে বা ট্রেনে অনেক্ষণ বসে থাকার কারণে পা ফুলে যেতে পারে। এতে পায়ের অনুভূতি শক্তি কমে যায়। তাই রক্ত চলাচল ঠিক রাখার জন্য মাঝে মাঝে উঠে দাঁড়ান বা পা নড়াচড়া করুন।
৯. ভ্রমণের আগে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ যেকোনো ক্রনিক (দীর্ঘমেয়াদী) রোগে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি থাকলে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
১০. যাত্রাপথে প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখুন।
লেখক
চিকিৎসক
গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ (সাভার)।