শারমিন কচি
ঈদের দিনের ষোলো আনা আনন্দ উদযাপন ও উপভোগের জন্য পুরো দিনকে তিনটি ভাগে ভাগ করে নিতে পারেন। সকাল থেকে দুপুর, দুপুর থেকে বিকেল এবং বিকেল থেকে রাত। এই তিন পর্বে পরার জন্য তিন ধরনের পোশাক বেছে নিন। সকালটা যেহেতু নানা কাজের মধ্য দিয়ে কাটাতে হয় এ জন্য আরামদায়ক ও কাজের জন্য সুবিধার এমন পোশাক বেছে নেওয়া ভালো। এ ক্ষেত্রে সালোয়ার-কামিজ হতে পারে সেরা। সকালের পর্বের জন্য একটু রংচঙে সালোয়ার-কামিজ পরুন। উজ্জ্বল রঙের পোশাকের সঙ্গে পরিমিত সাজ দেখতে ভালো লাগবে। কাজ করার সুবিধার্থে স্লিভলেস হলেও কিন্তু মন্দ হয় না। এ ছাড়া জিন্স, টপস অথবা আরামদায়ক কুর্তিও বেছে নিতে পারেন সকালের সাজ পোশাক হিসেবে। সঙ্গে গুছিয়ে চুল বেঁধে নিন। যদি সকালেই গোসল সেরে ফেলেন তাহলে চুল খোলা রাখতে পারেন। সে ক্ষেত্রে স্ট্রেইট করে আয়রন করে নিলে ভালো দেখাবে। ওয়াটারপ্রুফ হালকা বেইসের সঙ্গে চোখে ন্যুড লুক দিতে পারেন। তবে সকালের সাজে চোখে কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে যাবেন না। কারণ, এতে রান্নাঘরে রান্নার সময় অসুবিধা হতে পারে। এর বদলে চোখে কাজল টেনে দিতে পারেন। ঠোঁটের সাজে যেকোনো শেড সকালে বেশ মানানসই। ঈদের দিন সকালের এমন সাজে দেখতেও অনেক সতেজ লাগবে।
দুপুর
ঈদের দিনের দুপুরের সাজে আনতে পারেন একটুখানি ভিন্নতা। স্নিগ্ধ ও গর্জিয়াস এই দুটির মাঝামাঝি লুক দুপুরের সাজে বেশি মানানসই। ঈদের সাজে মেকআপ তো করতেই হবে। যেহেতু বাসায় কাটবে ঈদের দিন, এ জন্য ত্বকে ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করাই ভালো। ঈদের দিন দুপুর থেকে বিকেলের সাজে লেহেঙ্গা ও গাউন জাতীয় পোশাকে অভিজাত দেখাবে। তবে যে পোশাকই পরুন তার সঙ্গে মিলিয়ে মেকআপ করুন। দুপুরের সাজের জন্য শুধু ফেস পাউডার দিয়ে বেইস মেকআপ করে নিন। মুখের দাগ ঢাকতে কনসিলার ব্যবহার করতে পারেন। কনট্যুরিং করতে চাইলে পাউডার কনট্যুরিং কিট ব্যবহার করুন। চোখে পাউডার আইশ্যাডোর ব্রাউন শেড ব্যবহার করতে পারেন। চোখের কোলে হালকা কাজল এবং চোখের ওপরে চিকন করে আইলাইনারের রেখা একে দিন। মাশকারার কথা কিন্তু ভুলবেন না। এবার গরমের মধ্যে মধ্যে ঈদ। তাই গ্লসি, শিমারিং লিপস্টিক এড়িয়ে ম্যাট বা ক্রিম বেইসড লিপকালার ব্যবহার করুন। হালকা সাজের সঙ্গে লাল, মেরুনসহ যেকোনো গাঢ় রং হলেও মানাবে বেশ। ন্যুড লিপস্টিক যেকোনো মেকআপ লুকের সঙ্গেই মানানসই। এ জন্য সিম্পল টু গর্জিয়াস যেকোনো লুকের জন্য ঠোঁটে ন্যুড লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারেন। পিচ, ন্যুড পিংক, মভ, টেরাকোটা ইত্যাদি রংও দারুণ মানাবে ঈদের দিনের সাজে। দুপুর অথবা রাতে চোখের সাজের জন্য কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে পারেন। চুলের সাজে টুইস্ট, সাইড বান, ফ্রেঞ্চ বেণি, কার্ল করে বাঁধলে ভালো দেখাবে।
রাত
রাতের সাজের ক্ষেত্রে সকাল ও দুপুরের পরিবেশগত সীমাবদ্ধতাগুলোর প্রতিশোধ নিতে পারেন। রাতে দিনের গরম পরিবেশ অনেকটাই কমে আসে। সারা দিনের ধকলটাও তেমন থাকে না। আর রাত মানেই তো জম্পেশ সাজ! ঈদের রাতের সাজের জন্য শাড়ি সব সময়ই সেরা। এমব্রয়ডারি, কাঁথা স্টিচ, ফুলেল মোটিফের জামদানি থেকে শুরু করে সিল্ক, মসলিন, তাঁত—পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো শাড়ি বেছে নিতে পারেন। দিনের দুই বেলার সাজের ক্ষেত্রে রাতের সাজে পার্থক্য রাখুন। চোখে স্মোকি টোন, কার্ল করা চুল আর ভারী গয়নার সাজে তুলে আনুন নিজের ভেতরকার অভিজাত লুক। চোখে গ্লিটারের জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। চোখের নিচের পাশ দিয়ে কালো, বাদামি, গাঢ় রঙের আইশ্যাডো দিতে পারেন। চোখের নিচে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কাজল দিন। ওপর দিয়ে টেনে আইলাইনার লাগিয়ে দিন। এটাই হোক এবারের ঈদের চোখের সাজ। শুধু সাজ নয় সঙ্গে নিজের আরামের দিকটাও প্রাধান্য দিন।
লেখক : বিউটি আর্টিস্ট
কর্ণধার : বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ার