সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
আবেগ কী? কেবল মন খারাপ হচ্ছে, তাই কাঁদছেন- এটিই কি আবেগ? একদমই নয়। আনন্দ, রাগ, বিশ্বাস, ভালোবাসা, ঘৃণা, দুঃখ, ভয়, প্যানিক হওয়া সবই আবেগ। মানুষ হিসেবে আবেগ থাকবে, এটা কিন্তু খুব স্বাভাবিক। তবে এটি যেন আপনাকে অন্ধ না করে দেয়, সেই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। আবেগ নিয়ন্ত্রণে কিছু কৌশল জানিয়েছে এফআইইউ নিউজ।
নিজের যত্ন
দেখুন, অন্যকে ভালোবাসেন, অন্যের জন্য জান-প্রাণ দিয়ে দেন ঠিক আছে। তবে আপনার জীবনের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ মানুষটি কিন্তু আপনি নিজেই। তাই অন্যকে গুরুত্ব দিন, তবে নিজেকে অবহেলা করে নয়। নিজের দেহ ও মনের যত্ন নিন। ঠিকমতো ঘুমানো, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ, ব্যায়াম করা, নিজের কাজগুলো সময় মতো করে নেওয়ার বিষয়ে সচেতন হোন। অন্যে কী করলো না করলো, সেগুলো ভেবে সময় নষ্ট না করে নিজের প্রতি মনোযোগী হোন। সর্বোপরি নিজেকে সময় দিন।
সুস্থ সম্পর্ক
যেই সম্পর্ক দিনশেষে আপনাকে কাঁদাবে, যন্ত্রণা বাড়াবে- যেই সম্পর্কে বিশ্বাস, আস্থা নেই সেটি আর যাই হোক সুস্থ কখনোই নয়। নিজের আবেগকে কখনোই এমন জায়গায় বিনিয়োগ করবেন না যেখানে আপনার কদর নেই। মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন। সুস্থ সম্পর্কের চর্চা করুন।
অবদমন নয়
আবেগ নিয়ন্ত্রণের কৌশলের ভেতর দুটো বিষয় নিয়ে বেশ আলোচনা করা হয়। একটি হলো, পুণর্মূল্যায়ন। অপরটি অবদমন। আবেগ কাজ করলে অনেকেই ভাবেন একে অবদমন করতে হবে। তবে গবেষণা বলছে, অবদমন করতে গেলে এটি আপনাকে আরো পেয়ে বসবে। তাই একে আসতে দিন। না হয়, কিছুক্ষণ একটু কাঁদলেন, কিছুক্ষণ ক্ষোভ, রাগ হলো। একে বয়ে যেতে দিন। কষ্ট হচ্ছে হোক, কষ্টকেই না হয় এই মুহূর্তে উপভোগ করুন।
এরপর আবেগ গুলোকে পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে দেখুন। কোন বিষয়টি আপনার জন্য সমস্যা তৈরি করছে, তা নিয়ে ভাবুন। অর্থাৎ বিষয়টিকে পুণর্মূল্যায়ন করুন।
ভেবে দেখুন-
# আপনার মধ্যে কী ধরনের আবেগ কাজ করছে?
# আপনার শরীর তখন কী অনুভব করছে?
# আপনার মন কী বলছে?
# যখন আবেগ আসছে মন কি বিষয়টিকে খুব বিচার করতে শুরু করে দিয়েছে বিষয়টিকে?
# একে আপনি কীভাবে নিচ্ছেন?
মননশীলতার চর্চা করুন
আবেগকে নিয়ন্ত্রণের জন্য মননশীলতার চর্চা খুব জরুরি। নন জাজমেন্টাল বা কোনো কিছুকে বিচার না করে যেই ভাবনাগুলো আসছে তাকে আসতে দিন। আর হাওয়ার মতো উড়িয়ে দিন। মনে করুন ভাবনাগুলো তুলো। তুলো যেমন হাওয়া মিলিয়ে যায়, ঠিক তেমনিভাবে বিষয়টিকে নিন। কী করণীয় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন। নিজেকে বলুন, ‘ভালো সময় আসছে। আমাকে শুধু একটু ধৈর্য ধরতে হবে।’
পছন্দের কাজগুলো করুন
সত্যি বলতে কী খুব মন খারাপ বা বিষণ্ণতার মধ্যে পছন্দের কাজগুলো করা কঠিন। বেশ কঠিন। তবুও চেষ্টা করুন পছন্দের কাজগুলো করার। ঘরের বাইরে বেড়িয়ে পরুন। কোথায় বেড়িয়ে আসুন। গান শুনুন, বই পড়ুন, রান্না করুন। যা করতে ভালো লাগে ঠিক তাই করুন। আর নিজে থেকে বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে অসুবিধা হলে পেশাদারদের (সাইকোলজিস্ট, সাইকোথেরাপিস্ট) সাহায্য নিন।