সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
মিষ্টির দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছেন। রসগোল্লা, সন্দেশ, আঙুরলতা, চমচম, কালো জাম দেখেই হয়তো জিভে জল চলে এলো। থেমে কিনেও নিলেন এক কেজি। বাড়ি গিয়ে মনের স্বাদ মিটিয়ে খেলেন সবগুলো। তবে জানেন, এতে কি বিপত্তিটা ঘটে গেলো আপনার?
সারাবিশ্বে পুষ্টিবিদরা চিনিকে বিষের সঙ্গে তুলনা করে। এর কারণও রয়েছে অনেক। অতিরিক্ত চিনি খাওয়া দেহের নানা ব্যাধি তৈরির অন্যতম কারণ। তবে আমাদের উৎসব, বিয়ে, ঈদ, পূজা-পার্বনের শুরুতে মিষ্টিমুখ তো করতেই হয়। আর এভাবে একটু একটু করে চিনি খাওয়ার চলটাও ঐতিহ্য ও প্রথাগতভাবে ঢুকে গেছে আমাদের ভেতরে। তবে অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার এই অভ্যাস আপনাকে বেশ ভোগাতে পারে সারাজীবন।
‘চিনির মধ্যে কোনো পুষ্টিগুণ নেই। রয়েছে কেবল ক্যালরি। মিষ্টি জাতীয় পানীয় বা খাবার খেলে কেবল ক্যালরি বাড়বে, পুষ্টি পাওয়া যাবে না’, বলছিলেন পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন নিশি।
এ ছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া ওজন বাড়িয়ে দেয়। যেহেতু মিষ্টি জাতীয় খাবার খুব দ্রুত হজম হয়, তাই ক্ষুধাও তাড়াতাড়ি লাগে। আর খাবার খাওয়াও বেশি হয়। ফলাফল ওজন বাড়া। আর এই অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, হৃদপিণ্ডের রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। আবার বেশি মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে দেহে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বাড়ে। এ থেকে হৃদরোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকি হয়।
অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার দাঁত ক্ষয়েরও অন্যতম কারণ জানিয়ে পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন জানান, মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে অনেকেই ভালোমতো দাঁত ব্রাশ করে না। এতে মুখে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে, দাঁত ক্ষয় হয়। আবার যেসব খাবারে অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট থাকে সেগুলো খেলে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর মিষ্টি জাতীয় খাবার ও পানীয়তে কার্বোহাইড্রেট ভালো পরিমাণেই রয়েছে।
খাদ্যতালিকায় বেশি পরিমাণ চিনি জাতীয় খাবার থাকা বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ চিনি জাতীয় খাবারের সঙ্গে আমাদের প্রাত্যহিক আচার-আচরণের সম্পর্ক রয়েছে। এ ধরনের খাবার আবেগীয় সমস্যা তৈরি করে। কেবল বিষণ্ণতায় আক্রান্তদেরই নয়, অতিরিক্ত দুরন্ত শিশুদেরও চিনি জাতীয় খাবার কম খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।
এসব সমস্যা এড়াতে অতিরিক্ত ‘চিনি’-কে না বলুন। আর দৈনিক এক থেকে দেড় চা চামচের বেশি চিনি খাদ্যতালিকায় রাখা থেকে বিরত থাকাই ভালো- এমনই পরামর্শ পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিনের।