সাতকাহন২৪.কম ডেস্ক
গরীব থেকে আমির, দুর্বল থেকে শক্তিশালী- সবাই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে অসম্মানের মুখোমুখি হয়। অসম্মানের জবাব দিতে গিয়ে আমরা অনেকেই মারমুখি হয়ে উঠি বা অন্যকে গালিগালাজ করে সেটার সমাধান করার চেষ্টা করি।
তবে খুব ভদ্রভাবেও এর জবাব বা প্রতিউত্তর দেওয়া যায়। এতে শাপও মরে আর লাঠিও ভাঙে না। দৃঢ়তার সঙ্গে এবং চিৎকার-চেঁচামেচিতে না করে কীভাবে অসম্মানের উত্তর দেবেন তার কিছু কৌশলী উপায় বাতলেছে ওয়ার্ডস অব উইসডম।
শান্ত থাকুন
মনে মনে নিশ্চয়ই ভাবছেন, কেউ আমাকে অসম্মান করছে, আর আমি চুপচাপ বসে থাকবো, সেটা হয় না কি ? হ্যাঁ, বিষয়টি বেশ কঠিন। তবে, কেন শান্ত থাকার কথা বলা হচ্ছে ? কারণ, এই জটিল সময়েও আপনি যখন ধীর থাকবেন, তখন বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। ওই যে বলা হয়, রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। বিষয়টি একদমই তাই। নিজের জাহাজের ক্যাপটেন নিজেই হোন। অন্যের কাজ, কথায় আপনি আহত হোন, রেগে যান বা আপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যায়, বিষয়টি অপরপক্ষ বুঝে গেলেই বিপদ। তারা আপনাকে আরো আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করবে। তাই শান্ত থাকুন।
শান্ত থাকা মানে কিন্তু দুর্বলতা নয়। এর মানে হলো, নিজের নিয়ন্ত্রণটা, নিজের হাতেই রয়েছে।
অসম্মান কেন করা হচ্ছে, চিন্তা করুন
প্রতিউত্তর দেওয়ার আগে সম্পূর্ণ অবস্থাটি নিয়ে স্মার্টভাবে চিন্তা করুন। কেন আপনাকে অসম্মান করা হচ্ছে? এটা কি ইচ্ছা করে অপরপক্ষ করছে? না কি ভুল বোঝাবুঝির কারণে হচ্ছে? অযথা যুদ্ধে জড়ানোর আগে একটু পেছনে থেকে খেলুন। অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন।

নিজের প্রতিক্রিয়ার দিকে নজর দিন
আপনি অন্যের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। তবে আপনি তার বাজে আচরণের প্রতিউত্তরে কী প্রতিক্রিয়া জানাবেন সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না
কেউ আপনাকে অসম্মান করছে বা আপনার সম্পর্কে ভুলভাল ভাবছে, এটা কিন্তু আপনার সমস্যা নয়, তার চিন্তার প্যাটার্ন এই রকম। তাই অসম্মানকে খুব ব্যক্তিগতভাবে চিন্তা করতে যাবেন না। আপনি শান্ত থাকলে, যে আপনাকে অসম্মান করছে, সে নিজেই অন্যের চোখে ছোট হবে। অন্যের নেতিবাচকতার কারণে নিজের আনন্দ কেন নষ্ট করবেন?
দেয়াল তুলে দিন
নিজের মানসিক শান্তির দায়িত্বটা আসলে নিজেরই। যারা অসম্মান করে বা করছে, তাদের সঙ্গে মেলামেশা কমিয়ে দিন। মানসিকভাবে দেয়াল তুলুন। অসম্মানকে কোনোভাবেই সহ্য করার কারণ নেই। শক্ত হয়ে নিজেকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে আসুন, যেন তারাও এক পর্যায়ে বুঝতে পারে, তাদের আচরণ ভুল ছিল। নিজের মন ও শরীরকে নিরাপদে রাখুন।

চুপ থাকুন
কখনো কখনো নিরবতা শব্দের চেয়ে শক্তিশালী। এর মানে কিন্তু আপনি অবস্থাকে এড়াচ্ছেন না। আপনি কেবল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নিরব থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নিরবতার এই সময়টা আপনাকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে, ভেবেচিন্তে ও যুক্তির সঙ্গে উত্তর দেওয়া শেখাবে। আপনি কিন্তু অসম্মানের বিপক্ষে যুদ্ধ করছেন, তবে শব্দে নয়, নিরবতা দিয়ে। এর মানে আপনি নিজের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অন্যের হাতে দিচ্ছেন না।
নিজেকে তৈরি করুন
কেউ আপনাকে অসম্মান করলে, তাকে দেখিয়ে দিন আপনি কতটা যোগ্য। কথা নয়, কাজ দিয়ে, নিজের ব্যক্তিগত উন্নতির মাধ্যমে চড়টা মারুন। সর্বপোরি, নিজেকে তৈরি করুন।
হেসে উড়িয়ে দিন
আরেকটি কাজও করতে পারেন। কেউ অসম্মান করলে প্রথমে হেসে উড়িয়ে দিন। আর সেটি সম্ভব না হলে, তার চোখের দিকে তাকিয়ে বলুন, ‘ আপনি ঠিক আছেন তো? মনে হচ্ছে, আপনি ঠিক নেই।’ দেখুন তো, এই কথা বলার পর কী প্রতিক্রিয়া হয় ?